Thursday |
আমি এখন দাড়িয়ে আছি একটা অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরে। এটা একটা পোড়ো বাড়ি। শহর থেকে বেশ দুরে জংগলের ভিতরে বাড়িটা বানিয়েছিল কোনো এক জমিদার। তার সঠিক ইতিহাস আমার জানা নেই। আমার সামনে বসে আছে একটা মেয়ে। আসলে বসে নেই বেহুস করে চেয়ারে বেধে রেখেছি। মোমবাতি জ্বালানো আছে একটা। বাতাসে তার শিখা কাপছে। বাইরে বেশ রাত এখন। অমাবশ্যার ঘন কালো রাত। পুরো ভৌতিক পরিবেশ। মেয়েটার মুখে পানি ছুড়ে মারলাম। অনেক ঘুমিয়েছে সে। কিডনাপ করার পর থেকে প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে ঘুমাচ্ছে। ক্লোরোফোর্ম একটু বেশি দেওয়া হয়ে গেছে। মেয়েটার মুখে পানি পরতেই চখ মেলে তাকালো। ভয়ে গুংিয়ে উঠলো। মেয়েটার কিছু বলতে চাচ্ছে। আমি ওর মুখ থেকে টেপটা সরিয়ে দিলাম। ভিতকণ্ঠে বলে উঠলো,
ঃকে আপনি? আমার কাছে কি চান?
ওর ভয়টা কিসের? আমার মনে হচ্ছে আমাকে নয় ও ভয় পাচ্ছে অন্ধকার কে। আমি সুযোগটা কাজে লাগালাম। মোটা কণ্ঠে বল্লাম,
ঃমৃত্যু! আমি মৃত্যু চাই! তর মৃত্যু চাই!
ঃআমি কি করেছি? (খুব ভীত এখন সে)।
ঃমনে কর।
ঃআমি কিছু করিনি। আমাকে ছেড়ে দিন।
ঃহাহাহাহা! কিছু করিস নি না?
ঃআমি কিছু করি নি। আমাকে ছেড়ে দিন।
ঃকিছুই মনে নেই না?
ঃএমন কেন করছেন?
ঃমনে কর আজ থেকে ৭ বছর আগের কথা।
ঃকি! (অবাক হয়ে)
ঃএইতো, মনে পড়ছে তাহলে। সজিব নামটাও মনে পড়ছে নিশ্চয়।
ঃকে আপনি!
ভুতের ভয় কেটে গিয়েছে মেয়েটার। এখন আমাকেই ভয় পাচ্ছে সে। তাই আমি আমার স্বাভাবিক কণ্ঠে কথা বলা সুরু করলাম।
ঃমনে কর ৭ বছর আগে কি করেছিলি?
আমি জানি মেয়েটা এখন কি ভাবছে।
।
৭ বছর আগের কথা।
।
নটুন কলেজ এ ভর্তি হয়েছে সজিব। নতুন কলেজ এ উঠে বেশ ভালই দিন কাটাচ্ছিলো সজিব। হঠাত করেই একটা মেয়ে এসে যায় তার জীবনে। বসন্তের হাওয়া লাগলো যেন তার গায়ে।
।
একদিন ক্যাম্পাসে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিল সজিব। হঠাত একটা মেয়ে এসে,
-এইযে আপনি শুনুন। (মেয়েটা)
-কাকে বলছেন? (সজিবের একটা বন্ধু)।
-উনাকে। (আংুল দিয়ে ইংগিত করে)।
উঠে গেল সজিব। বন্ধুরা একটু আহত হলো। সজিব না জানলেও ওরা জানতো মেয়েটা কত ডেন্জারাস। একটু আড়ালে গিয়েই ঠাস করে একটা শব্দ। সজিব অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো। মেয়েটি বলে উঠলো,
-লজ্জা করেনা একটা মেয়েকে এতো খারাপ মেসেজ দিতে?
-আমি আপনাকে কবে মেসেজ দিলাম। আপনার নাম্বার টাই তো জানা নেই আমার।
-স্টুপিড! ফেসবুক এ আমাকে ইনসাল্ট করার মানে কি?
-আরে! আপনার আইডি তো আমার কাছে নেই। আর আমি কোনো মেয়েকে বিরক্ত করিনা।
-ইস্স্স্স্স! কি ভদ্র! সজিব আহাম্মেদ আইডি থেকে মেসেজ কি তোর দাদা দেয়?
-জাস্ট শাট আপ ইওর মাউথ! আর আমার আইডি এর নাম সজিব আহাম্মেদ না মশিউর রাহমান সজিব।
-মিথ্যা বলার জায়গা পাননা?
আবার ও ঠাস করে একটা শব্দ তবে এবার দাতা উল্টা। থাপ্পর মেরে আর কোনো কথা না বলে সজা বাড়ির দিকে রওনা হল সে। আজ আর ক্লাস করা হবেনা।
মেয়েটা ভাল করে চেক করে দেখল যে ছেলেটা সত্যি বলেছে। সজিব আহাম্মেদ নামে কেও আইডি খুলে দর্শনা সরকারি কলেজ এবাউট এ দিয়েছে যার কারণে এত বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল।
।
পরের দিন মেয়েটা সজিব এর কাছে গিয়ে ক্ষমা চায় এবং প্রোপজ করে বসে। সজিব তাকে ফিরিয়ে দেয়। বারবার সে ফিরিয়ে দেয় মেয়েটিকে। প্রেম করার জন্য আসলে মেয়েটা তাকে প্রোপজ করেনি। চেয়েছিলো সেদিন এর থাপ্পর এর প্রতিশোধটা প্রেমের অভিনয় করে দেবে। কিন্তু বারবার ব্যর্থ হয়ে মেয়েটা কিলার দিয়ে মেরে দেয় সজিব কে।
।
-কি মনে পরেছে নিশ্চয়?
-আপনি কে? আপনি সজিব এর কে হন?
-আমি ওর বন্ধু।
-আপনাকে আমি অনেক টাকা দেব। আমাকে ছেড়ে দিন।
(একটা জোরে থাপ্পর দিয়ে)
-মানুষরুপি জানয়ার কে মাফ করা উচিত না। মৃত্যুর আগে কোনো ইচ্ছা আছে নাকি?
-আপনি এত কিছু জানলেন কিভাবে?
-কিছুদিন আগে হঠাত ওর ডায়েরি খুজে পাই আমি। কিন্তু সেখানে তোর নাম ছিলনা। আমি অনেক খুজেও বের করতে পারিনি। পরে অনেক কষ্টে কিলার টাকে বের করে তার কাছ থেকে তথ্য আদায় করেছি।
-ও মিথ্যা বলেছে আপনাকে! আমি কিছু করিনি!
-মৃত্যুর আগে কেও মিথ্যা বলেনা।
-মানে?
আমার পায়ের কাছে একটা দড়ি ছিলো সেটা ধরে টান দিলাম। উপর থেকে একটা লাশ পরলো মেয়েটার সামনে। মেয়েটা ভয়ে বেহুস হয়ে গেল। নাহ। জেগে থাকলে মেয়েটার বেশি কষ্ট হবে। ওর বেহুস অবস্থায় এ গলা কেটে ফেল্লাম। ওর কলিজাটা আমি রেখে এসেছি সজিব এর কবরের উপর।