Thursday |
• প্রত্যেক মুসলমানের ঘর-বাড়ির ছাদে মুসুলমান জ্বিন বাস করে
ইয়াজীদ বিন জাবির (তাবেঈ) বলেছেন, সকল মুসলমানের ঘরের ছাদে মুসলমান জ্বিনরা বসবাস করে। যখন বাড়ির মানুষদের জন্য খাবার তৈরী করে রাখা হয় তখন সংশ্লিষ্ট বাড়ির জ্বিনরা নেমে এসে তাদের সাথে আহার করে এবং যখন বাড়ির লোকদের রাতের খাবার দেওয়া হয় তখনও তারা নেমে এসে তাদের সাথে খাবারে শরিক হয়। এসব জ্বিনের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের খারাপ জ্বিন থেকে রক্ষা করেন।
• জ্বিনরা কী খায়
হযরত ওয়াহাব বিন মুনাব্বিহ (রাহঃ) বলেন, জ্বিন কয়েক প্রকার। এক প্রকার জ্বিন হল হাওয়া (হাওয়ায় মিশে থাকে)। ওরা খাওয়া-দাওয়া, বিয়ে-শাদী কিছুই করেনা এবং মারাও যায়না তাদের বাচ্চাও হয়না। আর এক প্রকার আছে যারা খাওয়া দাওয়া, বিয়ে-শাদী করে এবং মারা ও যায়।
হযরত আলকামাহ (রাহঃ) বলেছেন, আমি হযরত মাসউদ (রা)-কে নিবেদন করি, আপনাদের মধ্যে কেউ ‘লাইলাতুল জ্বিন’ (অর্থাৎ জ্বিনের রাত)-এ রাসুল (সাঃ)-এর সাথে ছিলেন কি?
উনি বললেন, ‘না’।কিন্ত এক রাতে আমরা তাকে মক্কায় অনুপস্থিত পেলাম। আমরা বললাম, হয়ত নবীজীকে কাফিররা ধরে ফেলেছে এবং তাকে গুম করে ফেলেছে। আমাদের ওই রাতটা খুব খারাপ অবস্থায় গেল। যখন সকাল হল, দেখা গেল নবীজী হেরা পর্বত হতে আস্তেছে। তারপর আমরা আমাদের গত রাতের উদ্বেগের কথা জানালাম। তিনি বললেন, একটি জ্বিন এসে আমাকে দাওয়াত দিয়েছিল, তাই আমি তাদের সাথে গিয়েছিলাম এবং তাদের কোরান পড়ে শুনালাম। এরপর নবীজী আমাদের নিয়ে গেলেন এবং জ্বিনদের নিদর্শন দেখালেন। ওদের আগুনের চিহ্ন দেখালেন। ওই জ্বিনরা হুজুরের কাছে সফরের সামান (বা পাথেয়) চাই। কেননা তারা ছিল এক দ্বীপের জ্বিন। তখন নবীজী তাদের বললেন, তোমাদের খাদ্য এমন সব হাড় যার প্রতি আল্লাহর নাম নেওয়া হয়ছে।
রাসুল (সাঃ) আরো বলেন, তোমরা এই দু’টো জিনিষ (হাড় ও গোবর) দিয়ে এস্তেঞ্জা করোনা। কেননা এগুলো হলো তোমাদের জ্বিন ভাইদের খোরাক।
জৈনক জ্বিনের আবেদন,
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি একবার রাসুলের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তার কাছে এক সাপ এল এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে গেল। আমি তাকে নবীজীর আরো কাছে করে দিলাম। সে রাসুলের পবিত্র কানের কাছে গিয়ে চুপিচুপি কিছু বলল। নবীজী বললেন ঠিক আছে। তারপর সাপটি চলে গেল। তখন ব্যাপারটি আমি জানতে চাইলে, হুজুর বলেন, সে ছিল জ্বিন। সে আমাকে বলে গেল, “আপনি আপনার উম্মতদের বলেদেন যে তারা যেন গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেঞ্জা না করে কেননা আল্লাহ ওই দু’টো জিনিষে আমাদের জন্য আহার্য রেখেছেন”।
• শয়তান খানা-পিনা করে বাম হাতে।
হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণীত, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আহার করে তারা যেন ডান হাত দিয়ে আহার করে এবং পান করার সময় ডান হাত দিয়ে পান করে, কেননা শয়তান বাম হাত দিয়ে আহার ও পান করে।
হুযাইফা (রাঃ) বলেন, রাসুল এর সঙ্গে যখন কোন খানার মজলিসে হাজির হতাম তখন তিনি শুরু করার আগে আমরা শুরু করতাম না। একবারের ঘটনা, আমারা খাওয়ার মজলিসে হাজীর আছি এমন সময় এক বেদুঈন এল। যেন তাকে কেউ খাবারের দিকে তারিয়ে এনেছে। সে এসে খাবারের দিকে হাত বাড়াল। নবীজী তার হাত ধরে ফেললেন এবং তাকে বসিয়ে দিল। তারপর একটি মেয়ে আসল তাকেও যেন কেউ হাকিয়ে এনেছে। মেয়েটিও এসে খাবারে হাত দিল এবং তার হাত ও ধরে ফেললেন হুজুর। তার পর তিনি বলেন, যে খাবারে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়না শয়তান সেই খাবার তার জন্য হালাল করে নেই। শয়তান এই বেদুঈনের সাথে খেতে এসেছিল আমি তার হাত ধরে ফেললাম তাই সে ওই মেয়েটির সাথে এল এবং এদের মাধ্যমে খাবারে ভাগ বসাতে চাইল। এর হাতও আমি ধরে ফেললাম। যার আয়ত্বে আমার জীবন সেই সত্তার কসম! এই দুজনের সাথে শয়তানের হাত ও (এখন) আমার মুঠোর মধ্যে।
হযরত আবু হুরাইরা বর্ণনা করেন, হুজুর ( সাঃ) বলেছেন, শয়তান তোমাদের সাথে সকল সময় সকল অবস্থায় বিদ্যমান থাকে, এমনকি খাওয়ার সময়ও। তাই তোমাদের মধ্যে খাদ্যের গ্রাস পড়ে গেলে তার ময়লা সাফ করে যেন তা খেয়ে নেই, যেন শয়তানের জন্য ছেড়ে না দেয়।
হযরত জাবির (রাঃ) শুনেছেন যে, হুজুর (সঃ) বলেন, যখন কোন মানুষ নিজের বাড়িতে প্রবেশ করার সময় এবং খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে, তখন শয়তান (অন্যান্য শয়তানের উদ্দেশে) বলে, তোমাদের জন্য এখানে থাকা খাওয়ার জন্য কোন অবকাশ নেই। কিন্তু কোন মানুষ যদি ঘরে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর নাম না নেই। তাহলে শয়তান বলে তোমরা জন্য রাতে থাকার ও সাঁঝে খাওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলে।