XtGem Forum catalog
■ময়মনসিংহ জিলা স্কুল,■ শিফট:প্রভাতি,■ ব্যাচ:-২০১৬ পেজ এ স্বাগতম।■ ঐতিহ্যের ১৬৩ বছর।■
mzs2016.mobie.in
Thursday
💜💙Miss You So Much MZS💛💚●Latest Update《new)●
Tags: mzs, Quran

》●》জীনদের নিয়ে কিছু কথা.....new

জ্বিনদের আকৃতি বদলের রহস্য
কাযী আবু ইয়ালা হামবালী (রাহ) বলেনঃ জ্বিন ও শয়তানদের এমন কোন এখতিয়ার নেই যে তারা নিজেদের রূপ বদলাতে পারে এবং অন্যান্য রূপ ধারণ করবে; অবশ্য এ কথা ঠিক যে তাদেরকে আল্লাহ এমন কিছু বিশেষ কথা ও কাজ জানিয়ে দিয়েছেন যার ফলে তারা যখন সেই বিশেষ কথা ও কাজের প্রয়োগ ঘঠায় তখন তারা আল্লাহর ইচ্ছাই এক আকৃতি থেকে অন্য আকৃতিতে বদলে যায়।কিন্তু স্বয়ং নিজে থেকে জ্বিন ও শয়তান নিজেদের আকৃতি বদলানো অসম্ভব।কেননা নিজস্ব আকৃতি থেকে অন্য আকৃতি রূপান্তরিত করা মানে নিজের মূল উপাদান তথা অঙ্গপ্রত্যঙ্গকেও বদলে দেওয়া।এটা তাদের পক্ষে কিভাবে সম্ভব?
কাযী আবু ইয়ালা হাম্বলী আরো বলেন, ফিরিশতাদের বিভিন্ন রূপ ধারণের কেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
• জ্বিনরা কি কি রূপ নিতে পারেঃ
জ্বিনরা বহুরূপী হতে পারে, যেমন মানুষ, চতুষ্পদ পশু, সাপ, বিছে, উট, গরু, ছাগল, ঘোড়া, খচ্চর, গাধা ও বিভিন্ন পশু-পাখি প্রভৃতির আকার ধারণ করতে পারে।
• সাপ ও কুকুররাও এক প্রকার জ্বিন!
সাপ হল এক প্রকার রূপান্তরিত জ্বিন, যেমন বাদর ও শুকরে রূপান্তরিত হয়ছিল বনী-ইসরাইল।তবে জ্বিন সাপ গুলো হয় সাদা।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, কিছু কিছু কুকুররা এক প্রকার জ্বিন এবং এরা খুব দুর্বল জ্বিন।সুতরাং খাওয়ার সময় কোন কুকুর বসে গেলে তাকেও কিছু দেওয়া উচিত নাইলে তারিয়ে দেওয়া দরকার।কেননা তারো একটা প্রবৃত্তি (নফস) আছে।
হযরত আবু ক্বিলাবাহ হতে বর্ণীত, রাসুল (সাঃ) বলেনঃ যদি এই কুকুরগুলা এক প্রকার সৃষ্টিজীব না হত তাহলে এগুলোকে কতল করে দিতাম।কিন্তু কোন মাখলূককে বিলিন করতে আমার ভয় হয়।তবে তোমরা এদের মধ্যে সমস্ত কালো কুকুর গুলোকে মেরে ফেলবে।কারণ এগুলো এক প্রকার শয়তান।
রাসুল আরো বলেন, নামাজীর সামনে দিয়ে কালো কুকুর গেলে নামাজ ভেঙ্গে যায়।সাহাবীরা এ ব্যাপারে আরজ করল যে, "জনাব, লাল ও সাদা কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের কি দোষ?" উত্তরে রাসুল বলল, কালো কুকুর হল এক প্রকার শয়তান।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, জ্বিনরা তিন প্রকার-এক প্রকার জ্বিন হল, সাপ, বিছে, কুকুর ও পোকা-মাকড়।দ্বিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যারা হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়।এবং তিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যাদের পরকালের জন্য হিসাব-নিকাশ ও পুরষ্কার ও আযাব আছে।
আল্লামা সুহাইলী (রাহ) বলেন, শেষ প্রকারের জ্বিনরাই নিজেদের রূপ বদলাতে পারে।
কাযী আবু বকর বাকেলানী (রাহ) বলেন, আমি বলছি যারা জ্বিন দেখেছেন তারা সত্যি দেখেছেন।কেননা আল্লাহ জ্বিনদের দৃশ্যরূপ সৃষ্টি করেন এবং এরা বিভিন্ন আকৃতির ও কোমল দেহ বিশিষ্ট হয়।
• জ্বিন হল আগুনের সৃষ্টি
পবিত্র কোরানে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি আদমের আগে জ্বিনকে সৃষ্টি করি ‘লূ’এর আগুন (অর্থাৎ অত্যন্ত সূক্ষ্ম হওয়ার জন্য অতুষ্ণ বায়ুতে পরিণত হয়েছে এমন আগুন) দিয়ে

জ্বিনজাতি সৃষ্টি হয়ছে যেদিন।
হযরত আবু আলিয়ার বর্ণনাঃ আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেন বুধবার, জ্বিনকে সৃষ্টি করেন বৃহস্পতিবার এবং আদমকে সৃষ্টি করেন শুক্রবার।
=============================
কার আগে কে সৃষ্টি
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলা যার – আগে যাকে সৃষ্টি করেন।
জান্নাতকে - জাহান্নামের আগে
আপন রহমতকে - গযবের আগে
আসমানকে - যমীনের আগে
সূর্য ও চাঁদকে - নক্ষত্রের আগে
দিনকে - রাতের আগে
পানিভাগকে - স্থলভাগের আগে
সমভুমিকে - পাহাড়-পর্বতের আগে
ফিরিশতাদেরকে - জ্বিনদের আগে
জ্বিনজাতিকে - মানবজাতির আগে
এবং
পুরুষ জাতিকে - স্ত্রী জাতির আগে
======================
আদি জ্বিনের আকাংক্ষা
=============
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা আবূল জ্বিন্নাত বা জ্বিন জাতির আদিপিতা “সামূম”কে আগুনের শিখা দিয়ে সৃষ্টি করার পর বলেন,তুমি কিছু কামনা কর।সে বলল, “আমার কামনা হল, আমরা সবাইকে দেখব কিন্তু আমাদের যেন কেউ না দেখে এবং আমাদের বৃদ্ধরা যেন জোয়ান হয়ে মারা যায়।আল্লাহ তার এই কামনা কবুল করলেন তাই জ্বিনরা অদৃশ্য এবং মারা গেলে জোয়ান হয়ে মারা যায়।
==============================
জ্বিনেরা পৃথিবীতে বাস করত মানুষের আগেঃ
==============================
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, জ্বিনেরা পৃথিবীতে এবং ফিরিশ্তারা আসমানে বাস করত।প্রত্যেক আসমানের আলাদা আলাদা ফিরিশতা থাকত এবং আসমানের বাসিন্দাদের জন্য আলাদা আলাদা নামাজ-দোয়া ছিল।মূলত এরাই ছিল আসমান ও জমিনের বাসিন্দা
জ্বিনদের সৃষ্টি আদমের (আঃ) ২০০০ বছর আগে
=========================
ইবলীস পৃথিবীতে বাস করছে যবে থেকে!
=========================
জুওয়াইবির ও উসমান (রাঃ)নিজেদের সনদ সহকারে বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করার পর তাদেরকে পৃথিবীতে বাস করার জন্য নির্দেশ দেন।ওরা পৃথিবীতে আল্লাহর একান্ত অনুগত হয়ে চলতে লাগল।অবশেষে দীর্ঘকাল কেটে যাবার পর, ওরা আল্লাহর অবাধ্যতা শুরু করে দিল এবং খুন খারাবী করতে লাগল।তাদের এক বাদশাহ ছিল, যার নাম ছিল ইউসুফ।
তাকে ও তারা মেরে ফেলল।তকন আল্লাহ তাদের ওপর দ্বিতীয় আসমানের ফেরেশতাদের এক বাহিনী পাঠালেন।তাদের মধ্যে ইবলীসও ছিল।ইবলিস ছিল ৪০০০ জনের সর্দার।সে আসমান থেকে নেমে এসে জমিনের সমস্ত জ্বিন সন্তানদের হত্যা করল এবং বাকিদের মেরে কেটে সমুদ্রের দ্বীপগুলোর দিকে তারিয়ে দিল।তখন ইবলীস তার বাহিনী সমেত এই জমিনেই থাকতে লাগল।তেদের পক্ষে আল্লাহর বিধি-বিদ্বান মেনে চলা খুব সহজ হয় গেল এবং তারা পৃথিবীতে বসবাস করাকে পছন্দ করল।


হিজড়ারা জম্মায় কেমন করে?
---------------------
হযরত ইবনে আব্বাস (রা)বলেন হিজড়ারা জ্বিনদের সন্তান।
কোন এক ব্যাক্তি আব্বাস (রা) কে জিজ্ঞেস করে এমনটা কেমন করে হয়?
উত্তরে তিনি বলেন আল্লাহ ও তার রাসুল (সা) নিষেধ করেছেন যে মানুষ যেন তার স্ত্রীর সাথে মাসিক স্রাব চলাকালিন যৌনসঙ্গম না করে।স্ত্রী লোকের ঋতুস্রাব চলাকালীন যৌন সঙ্গম করলে শয়তান তার আগে আগে থাকে এবং শয়তানের দ্বারা ঔ মহিলা গর্ববতী হয় এবং হিজড়া সন্তান প্রসব করে।
শয়তান জ্বিন মানুষের সন্তানে শরীক হয় যেভাবেঃ হযরত মুজাহিদ (রাহ) বলেন, মানুষ তার স্ত্রীর সাথে যৌনমিলন করার আগে “বিসমিল্লাহ” না পড়লে জ্বিন তার প্রস্রাবের ছিদ্র পথের সাথে জড়িয়ে যায় এবং সেও সেই পুরুষের সাথে যৌনমিলনে অংশ নেই।
এর থেকে বাঁচতে হলে মিলনের আগে এই দুয়া পড়তে হবে, “আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইত্ব-না অজান্নিবাশ শাইত্ব-না মা রাযাকতান”
=============================================
================
জ্বিন শব্দের অর্থ ও পরিচিত
হযরত ইবনে দুরাইদ (রাহ) বলেন জ্বিন হল মানব জাতি হতে আলাদা একটি জাতি বা সৃষ্টি।জ্বিন শব্দের অর্থ গুপ্ত অদৃশ্য বা লোক্কায়িত।
জ্বিন কারাঃ হযরত আবু উমর আয যাহিদ বলেন, জিন্নাত বা জ্বিন জাতির কুকুর বা ইতর শ্রেণীকে বলা হয় জ্বিন।
জ্বান কারাঃ হযরত জাওহরি বলেন, জ্বান হল জ্বিনের আদি পিতা বা আবুল জ্বিন।
শয়তান কারাঃ আল্লামা ইবনে আকিল বলেন, শয়তান হল এক প্রকার জ্বিন যারা আল্লাহর অবাধ্য ইবলীশের বংশধর।
মারাদা কারাঃ আল্লামা আকিলের মতে মারাদা হল, জ্বিন জাতির মধ্যে যারা চরম অবাধ্য।
জ্বিন জাতির শ্রেণী বিভাগঃ
১-জ্বিনঃ অর্থাৎ সাধারণ জ্বিন
২-আমিরঃ (বহু বচনে উম্মার) যারা মানুষের সাথে থাকে
৩-আরওয়াহ যারা মানুষের সামনে আসে
৪-শয়তানঃ উদ্ধত অবাধ্য
৫-ইফরীত্ব যা শয়তানের চেয়েও বিপদ জনক


• সাবার রাণী [সুলাইমান (আঃ)-এর বিবি] বিলকিসের মা ছিল জ্বিন।
*******************************************
কথিত আছেঃ বিলকিসের মা-বাপের মধ্যে একজন ছিল জ্বিন। ইবনুল কালবী বলেন, বিলকিসের বাপ জ্বিনদের মেয়েকে বিয়ে করে ছিল। যার নাম ছিল, “রেহান বিন্তে সুকুন” এরই গর্ভে বিলকিসের জন্ম হয়। এর নাম রাখাআ হয় ‘বিলকিমাহ’। বর্ণীত আছে যে বিলকিসের পায়ের সামনে ছিল চতুষ্পদ জন্তুর খুরের মত এবং তার গোরালীতে লোম ও ছিল। হযরত সুলাইমান (আঃ) তাকে বিয়ে করেছিল এবং শয়তানদের নির্দেশ দিয়েছিল, তোমরা গোসল খানা এবং লোম-বিন্নাশক পাউডার বানাও।
আবু হুরাইরা হতে বর্ণীত রাসুল (সাঃ) বলেন, বিলকিস-এর পিতা-মাতা’র মধ্যে একজন ছিল জ্বিন।
• জ্বিনদের বিয়ে-শাদী ও বংশধারা
********************
কোরআন থেকে প্রমাণ
“ইতোপুর্বে ও (অনত-নয়না স্বর্গ সুন্দরী, হুর)-দের কাছে না কোন মানুষ গিয়েছে না কোন জ্বিন। (আর রাহমান) এই আয়াত থেকে বুঝা গেল যে, জ্বিনরা যৌনমিলনও করে।
জ্বিনদের জন্মহার অনেক বেশী।
==================
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহ মানব জাতি ও জ্বিন জাতকে ১০ ভাগে ভাগ করেছেন। তার মধ্যে ৯ ভাগ জ্বিন এক ভাগ মানুষ। যখন একটি মানব শিশু জন্মায় তখন জ্বিনদের ৯ টা বাচ্চা হয়।
জ্বিনদের সাথে মানুষের বিয়ে
=================
জ্বিনের সাথে মানুষের বিয়ে হওয়া সম্ভব। তবে মাকরূহ। ইমাম সাঅলাবী (রাহঃ) বলেন, মানুষের ধারণা, বিয়ে এবং গর্ভ হওয়া মানুষ ও জ্বিন উভয়ের মধ্যে হতে পারে। পবিত্র কোরআনে বলা আছে, (আল্লাহ শয়তান কে উদ্দেশ্য করে বলেন ) তুই মানুষের সম্পদে ও সন্তানে শরীক হয় যা। (সুরা বনী ঈসরাইল)।
জ্বিন মানুষের সহজাত মিলনে সন্তানের নাম কী? “জ্বিন ও মানুষের মিলনে যে সন্তান হয় তার নাম ‘খুন্নাস’।“
• জ্বিন মানুষের মিলনে ছেলে হওয়ার ঘটনা (এ কোন বানোয়াট কাহিনী নয় হাদিস শুনাচ্ছি )।
=============================================
========
হযরত আবূ সাইদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি হযরত আলীর সাথে নাহরোয়ানে হুদুদিয়াদের হত্যাকার্যে সামিল হলাম। আলী (রাঃ) আমার কাছে ‘তালীদ’কে সন্ধান করলেন কিন্তু তাকে পেলাম না। তখন তিনি বললেন, তাকে খুঁজ। পরে তিনি নিজে তাকে খুজে বের করলেন।তারপর বললেন, “কে একে জান?” উপস্থিত ব্যক্তির মধ্যে একজন বলল, একে আমি জানি। এ “কাউস”। এর মা’ও আছেন। আলী তার মা’র কাছে একজন দূত পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এর বাপ কে? সে বলল, ‘আমি জানিনা, তবে এটুকু জানি যে, আমি অজ্ঞাতার যুগে আপন সম্প্রদায়ের বকরী-পাল চরাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার কাছে এক ছায়া মুর্তি এসে আমার সাথে যৌন-মিলন করে, যার দ্বারা আমার গর্ভ হয়। এ হল সেই গর্ভের সন্তান।

প্রত্যেক মুসলমানের ঘর-বাড়ির ছাদে মুসুলমান জ্বিন বাস করে
ইয়াজীদ বিন জাবির (তাবেঈ) বলেছেন, সকল মুসলমানের ঘরের ছাদে মুসলমান জ্বিনরা বসবাস করে। যখন বাড়ির মানুষদের জন্য খাবার তৈরী করে রাখা হয় তখন সংশ্লিষ্ট বাড়ির জ্বিনরা নেমে এসে তাদের সাথে আহার করে এবং যখন বাড়ির লোকদের রাতের খাবার দেওয়া হয় তখনও তারা নেমে এসে তাদের সাথে খাবারে শরিক হয়। এসব জ্বিনের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের খারাপ জ্বিন থেকে রক্ষা করেন।
• জ্বিনরা কী খায়
হযরত ওয়াহাব বিন মুনাব্বিহ (রাহঃ) বলেন, জ্বিন কয়েক প্রকার। এক প্রকার জ্বিন হল হাওয়া (হাওয়ায় মিশে থাকে)। ওরা খাওয়া-দাওয়া, বিয়ে-শাদী কিছুই করেনা এবং মারাও যায়না তাদের বাচ্চাও হয়না। আর এক প্রকার আছে যারা খাওয়া দাওয়া, বিয়ে-শাদী করে এবং মারা ও যায়।
হযরত আলকামাহ (রাহঃ) বলেছেন, আমি হযরত মাসউদ (রা)-কে নিবেদন করি, আপনাদের মধ্যে কেউ ‘লাইলাতুল জ্বিন’ (অর্থাৎ জ্বিনের রাত)-এ রাসুল (সাঃ)-এর সাথে ছিলেন কি?
উনি বললেন, ‘না’।কিন্ত এক রাতে আমরা তাকে মক্কায় অনুপস্থিত পেলাম। আমরা বললাম, হয়ত নবীজীকে কাফিররা ধরে ফেলেছে এবং তাকে গুম করে ফেলেছে। আমাদের ওই রাতটা খুব খারাপ অবস্থায় গেল। যখন সকাল হল, দেখা গেল নবীজী হেরা পর্বত হতে আস্তেছে। তারপর আমরা আমাদের গত রাতের উদ্বেগের কথা জানালাম। তিনি বললেন, একটি জ্বিন এসে আমাকে দাওয়াত দিয়েছিল, তাই আমি তাদের সাথে গিয়েছিলাম এবং তাদের কোরান পড়ে শুনালাম। এরপর নবীজী আমাদের নিয়ে গেলেন এবং জ্বিনদের নিদর্শন দেখালেন। ওদের আগুনের চিহ্ন দেখালেন। ওই জ্বিনরা হুজুরের কাছে সফরের সামান (বা পাথেয়) চাই। কেননা তারা ছিল এক দ্বীপের জ্বিন। তখন নবীজী তাদের বললেন, তোমাদের খাদ্য এমন সব হাড় যার প্রতি আল্লাহর নাম নেওয়া হয়ছে।
রাসুল (সাঃ) আরো বলেন, তোমরা এই দু’টো জিনিষ (হাড় ও গোবর) দিয়ে এস্তেঞ্জা করোনা। কেননা এগুলো হলো তোমাদের জ্বিন ভাইদের খোরাক।
জৈনক জ্বিনের আবেদন,
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি একবার রাসুলের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তার কাছে এক সাপ এল এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে গেল। আমি তাকে নবীজীর আরো কাছে করে দিলাম। সে রাসুলের পবিত্র কানের কাছে গিয়ে চুপিচুপি কিছু বলল। নবীজী বললেন ঠিক আছে। তারপর সাপটি চলে গেল। তখন ব্যাপারটি আমি জানতে চাইলে, হুজুর বলেন, সে ছিল জ্বিন। সে আমাকে বলে গেল, “আপনি আপনার উম্মতদের বলেদেন যে তারা যেন গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেঞ্জা না করে কেননা আল্লাহ ওই দু’টো জিনিষে আমাদের জন্য আহার্য রেখেছেন”।
• শয়তান খানা-পিনা করে বাম হাতে।
হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণীত, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আহার করে তারা যেন ডান হাত দিয়ে আহার করে এবং পান করার সময় ডান হাত দিয়ে পান করে, কেননা শয়তান বাম হাত দিয়ে আহার ও পান করে।
হুযাইফা (রাঃ) বলেন, রাসুল এর সঙ্গে যখন কোন খানার মজলিসে হাজির হতাম তখন তিনি শুরু করার আগে আমরা শুরু করতাম না। একবারের ঘটনা, আমারা খাওয়ার মজলিসে হাজীর আছি এমন সময় এক বেদুঈন এল। যেন তাকে কেউ খাবারের দিকে তারিয়ে এনেছে। সে এসে খাবারের দিকে হাত বাড়াল। নবীজী তার হাত ধরে ফেললেন এবং তাকে বসিয়ে দিল। তারপর একটি মেয়ে আসল তাকেও যেন কেউ হাকিয়ে এনেছে। মেয়েটিও এসে খাবারে হাত দিল এবং তার হাত ও ধরে ফেললেন হুজুর। তার পর তিনি বলেন, যে খাবারে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়না শয়তান সেই খাবার তার জন্য হালাল করে নেই। শয়তান এই বেদুঈনের সাথে খেতে এসেছিল আমি তার হাত ধরে ফেললাম তাই সে ওই মেয়েটির সাথে এল এবং এদের মাধ্যমে খাবারে ভাগ বসাতে চাইল। এর হাতও আমি ধরে ফেললাম। যার আয়ত্বে আমার জীবন সেই সত্তার কসম! এই দুজনের সাথে শয়তানের হাত ও (এখন) আমার মুঠোর মধ্যে।
হযরত আবু হুরাইরা বর্ণনা করেন, হুজুর ( সাঃ) বলেছেন, শয়তান তোমাদের সাথে সকল সময় সকল অবস্থায় বিদ্যমান থাকে, এমনকি খাওয়ার সময়ও। তাই তোমাদের মধ্যে খাদ্যের গ্রাস পড়ে গেলে তার ময়লা সাফ করে যেন তা খেয়ে নেই, যেন শয়তানের জন্য ছেড়ে না দেয়।
হযরত জাবির (রাঃ) শুনেছেন যে, হুজুর (সঃ) বলেন, যখন কোন মানুষ নিজের বাড়িতে প্রবেশ করার সময় এবং খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে, তখন শয়তান (অন্যান্য শয়তানের উদ্দেশে) বলে, তোমাদের জন্য এখানে থাকা খাওয়ার জন্য কোন অবকাশ নেই। কিন্তু কোন মানুষ যদি ঘরে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর নাম না নেই। তাহলে শয়তান বলে তোমরা জন্য রাতে থাকার ও সাঁঝে খাওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলে।

বর্ণনায় আকিল (রাহঃ)। আমাদের একটি বাড়ি ছিল। তাতে যখনি কোন লোক থাকত, সকালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যেত। একবার এক মরক্কোর লোক এল। ঘরটি তার পছন্দ হল এবং সে ভাড়া নিল। তারপর রাত কাটাল এবং সকালে দেখা গেল সে পুরোপুরি সুস্থ। তার কিছুই হয়নি। তা দেখে প্রতিবেশীরা অভাক। লোকটি বেশ কিছুকাল ছিল তারপর অন্যত্র চলে গেল। তাকে ওই ঘরের নিরাপদ থাকার কথা জিজ্ঞেস করা হলে সে বলল, আমি যখন সেই ঘরে থাকি তখন (প্রথম রাতে) ইশার নামাজ পড়েছি এবং কোরআন থেকে কিছু পড়েছি। তারপর দেখি এক যুবক কূপ থেকে উপরে উঠতেছে। সে আমাকে সালাম দিল। আমি তাকে দেখে ভয় পেলাম। সে বল, ভয় পেওনা আমাকেও কিছু কোরান পাঠ শেখাও। তারপর তাকে আমি কোরান শেখাই এবং জিজ্ঞেস করি এই ঘরের রহস্য কি? সে বলল, আমরা মুসলমান জ্বিন। আমরা কোরান পাঠও করি এবং নামাযও পড়ি। কিন্তু এই ঘরে বেশীর ভাগ সময় বদমাশ লোকেরা থাকে এবং মদের আসর বসায়। তাই আমরা তাদের গলা টিপে দিয়। আমি তাকে বললাম, তোমাকে আমি রাতে ভয় পায় তাই তুমি দিনের বেলায় এসো। সে বলল, খুব ভাল। তারপর থেকে সে দিনের বেলায় কুপ থেকে আসত। একবার সে কোরান পাঠ করতেছিল এমন সময় বাইরে এক ওঝা আসল এবং বলতেছে, “আমি সাপে কাটা, বদ নজর লাগা এবং জ্বিনে ধরা রোগের ঝাঁড়-ফোঁক করি”। তার কথা শুনে জ্বিনটি বলল, “সে কে?”। আমি বললাম ও হল ওঝা ঝাঁড়-ফোঁক করে। সে বলল তাকে ডাক। আমি উঠে তাকে ডেকে আনলাম। এসে দেখি, সে জ্বিনটি এক বিরাট সাপ হয়ে ঘরের ভিতরের ছাদে উঠে গেল। ওঝা এসে ঝাঁড়-ফুঁক করতেই সে ঝটপট করতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত ঘরের মেঝেই পড়ে গেল। তখন ওঝা তাকে ধরে ঝাঁপিতে ভরতে গেল আমি মানা করলাম। সে বলল, ‘তুমি আমাকে আমার শিকার ধরার কাজে বাধা দিচ্ছ’ তখন আমি তাকে একটা স্বর্ণ মুদ্রা দিলাম সে চলে গেল। তারপর সে অজগর নড়া-ছড়া করল এবং জ্বিন রূপে প্রকাশ ঘটল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কি হয়ছে? জ্বিন বলল, আমাকে ওই ওঝা পাক ইসমের মাধ্যমে শেষ করে ফেলেছে। আমি বাঁচব বলে আর বিশ্বাস হচ্ছেনা। যদি তুমি এই কুপ থেকে কোন চিৎকারের শব্দ শুনতে পাও তবে চলে যেও। সেই রাতে আমি এক আওয়াজ শুনতে পেলাম যে, “তুমি দূরে চলে যাও”। এরপর থেকে ওই ঘরে আর কেউ থাকত না।
আর এক সুন্দরী জ্বিন স্ত্রীর ঘটনা।
=======================
বর্ণনায় আল্লামা বাদরুদ্দীন শিবলী (রাহঃ)। জনাব কাযীউল ক্বযযাহ জালালুদ্দিন আহমেদ বিন ক্বাযীউল ক্বযযাহ হিসামুদ্দিন কাযী হানাফী বলেন, আমার পিতা আমাকে পরিবার পরিজন-বর্গকে প্রাচ্য হতে আনার জন্য সফরে পাঠান। যখন আমি বীরাহ নামক স্থান পার হলাম, বৃষ্টি আমাদের এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। আমি এক যাত্রী দলের সাথে ছিলাম। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি কেউ আমাকে জাগাচ্ছে। জেগে দেখি আমার কাছে মাঝারি উচ্ছতার এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তার চোখ ছিল একটা লম্বা-লম্বি ফাটলের মত। সে বলল তুমি ভয় পেওনা। আমি তোমার কাছে আমার চাঁদের মত মেয়েকে বিয়ে দিতে এসেছি। আমি ঘাবড়ে গিয়ে বললাম আল্লাহ ভালো করুন। তারপর দেখলাম কিছু মানুষ আমার দিকে আসছে। তাদের আকৃতিও ওই মহিলার মত। তাদের চোখেও লম্বা ফাটল আছে। তাদের সাথে এক কাযীও ছিল এবং সাক্ষীও। সুতরাং কাযী বিয়ের পয়গাম দিল এবং বিয়েও পড়িয়ে দিল যা আমি বাধ্য হয়ে কবুল করলাম। এবং ওরা যখন চলে গেল, তারপর মহিলা আমার কাছে আসল। এবার তার সাথে এক সুন্দরী মেয়েও ছিল। তার চোখও ছিল তার মায়ের মত ভয়ঙ্কর। মেয়েটির মা মেয়েকে আমার কাছে রেখে চলে গেল। তারপর আমার ভয় আরো বেড়ে গেল। আমি আমার সঙ্গীদের জাগাতে কাঁকর ছুঁড়ে মারলাম। কিন্তু উদের কেউ উঠল না। তখন অনুনয়-বিনয় করে আল্লাহর কাছে দুয়া করতে লাগলাম। পরে ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ার সময় এল। আমরা রওনা দিলাম কিন্তু মেয়েটি আমাকে ছাড়ল না। এই অবস্থায় তিন-দিন কেটে গেল। চারদিনের মাথায় মেয়ের মা এল এবং বলল, “সম্ভবত এই মেয়েকে তোমার পছন্দ হয়নি। তুমি মনে হয় এর থেকে বিচ্ছেদ চাইছ”। আমি বললাম, হ্যা আল্লাহর কসম। সে বলল, তবে একে তালাক দাও। আমি তাকে তালাক দিলে সে চলে গেল। পরে আমি তাকে আর কখনো দেখিনি।

Back to posts
Comments:

Post a comment

কলেজ এডমিশন Result..... 😀☺》》Copa America Live Match here......
1.
⚽Live Update📺
💚💛💜 MZS 2016 💚💛💜
📷 আজকের ছবি 📷
Section A&B 》》Copa America Live Match Here...
●●●সর্বশেষ খবর●●●
Tags: mzs, Quran

》●》জীনদের নিয়ে কিছু কথা.....new

জ্বিনদের আকৃতি বদলের রহস্য
কাযী আবু ইয়ালা হামবালী (রাহ) বলেনঃ জ্বিন ও শয়তানদের এমন কোন এখতিয়ার নেই যে তারা নিজেদের রূপ বদলাতে পারে এবং অন্যান্য রূপ ধারণ করবে; অবশ্য এ কথা ঠিক যে তাদেরকে আল্লাহ এমন কিছু বিশেষ কথা ও কাজ জানিয়ে দিয়েছেন যার ফলে তারা যখন সেই বিশেষ কথা ও কাজের প্রয়োগ ঘঠায় তখন তারা আল্লাহর ইচ্ছাই এক আকৃতি থেকে অন্য আকৃতিতে বদলে যায়।কিন্তু স্বয়ং নিজে থেকে জ্বিন ও শয়তান নিজেদের আকৃতি বদলানো অসম্ভব।কেননা নিজস্ব আকৃতি থেকে অন্য আকৃতি রূপান্তরিত করা মানে নিজের মূল উপাদান তথা অঙ্গপ্রত্যঙ্গকেও বদলে দেওয়া।এটা তাদের পক্ষে কিভাবে সম্ভব?
কাযী আবু ইয়ালা হাম্বলী আরো বলেন, ফিরিশতাদের বিভিন্ন রূপ ধারণের কেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
• জ্বিনরা কি কি রূপ নিতে পারেঃ
জ্বিনরা বহুরূপী হতে পারে, যেমন মানুষ, চতুষ্পদ পশু, সাপ, বিছে, উট, গরু, ছাগল, ঘোড়া, খচ্চর, গাধা ও বিভিন্ন পশু-পাখি প্রভৃতির আকার ধারণ করতে পারে।
• সাপ ও কুকুররাও এক প্রকার জ্বিন!
সাপ হল এক প্রকার রূপান্তরিত জ্বিন, যেমন বাদর ও শুকরে রূপান্তরিত হয়ছিল বনী-ইসরাইল।তবে জ্বিন সাপ গুলো হয় সাদা।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, কিছু কিছু কুকুররা এক প্রকার জ্বিন এবং এরা খুব দুর্বল জ্বিন।সুতরাং খাওয়ার সময় কোন কুকুর বসে গেলে তাকেও কিছু দেওয়া উচিত নাইলে তারিয়ে দেওয়া দরকার।কেননা তারো একটা প্রবৃত্তি (নফস) আছে।
হযরত আবু ক্বিলাবাহ হতে বর্ণীত, রাসুল (সাঃ) বলেনঃ যদি এই কুকুরগুলা এক প্রকার সৃষ্টিজীব না হত তাহলে এগুলোকে কতল করে দিতাম।কিন্তু কোন মাখলূককে বিলিন করতে আমার ভয় হয়।তবে তোমরা এদের মধ্যে সমস্ত কালো কুকুর গুলোকে মেরে ফেলবে।কারণ এগুলো এক প্রকার শয়তান।
রাসুল আরো বলেন, নামাজীর সামনে দিয়ে কালো কুকুর গেলে নামাজ ভেঙ্গে যায়।সাহাবীরা এ ব্যাপারে আরজ করল যে, "জনাব, লাল ও সাদা কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের কি দোষ?" উত্তরে রাসুল বলল, কালো কুকুর হল এক প্রকার শয়তান।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, জ্বিনরা তিন প্রকার-এক প্রকার জ্বিন হল, সাপ, বিছে, কুকুর ও পোকা-মাকড়।দ্বিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যারা হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়।এবং তিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যাদের পরকালের জন্য হিসাব-নিকাশ ও পুরষ্কার ও আযাব আছে।
আল্লামা সুহাইলী (রাহ) বলেন, শেষ প্রকারের জ্বিনরাই নিজেদের রূপ বদলাতে পারে।
কাযী আবু বকর বাকেলানী (রাহ) বলেন, আমি বলছি যারা জ্বিন দেখেছেন তারা সত্যি দেখেছেন।কেননা আল্লাহ জ্বিনদের দৃশ্যরূপ সৃষ্টি করেন এবং এরা বিভিন্ন আকৃতির ও কোমল দেহ বিশিষ্ট হয়।
• জ্বিন হল আগুনের সৃষ্টি
পবিত্র কোরানে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি আদমের আগে জ্বিনকে সৃষ্টি করি ‘লূ’এর আগুন (অর্থাৎ অত্যন্ত সূক্ষ্ম হওয়ার জন্য অতুষ্ণ বায়ুতে পরিণত হয়েছে এমন আগুন) দিয়ে

জ্বিনজাতি সৃষ্টি হয়ছে যেদিন।
হযরত আবু আলিয়ার বর্ণনাঃ আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেন বুধবার, জ্বিনকে সৃষ্টি করেন বৃহস্পতিবার এবং আদমকে সৃষ্টি করেন শুক্রবার।
=============================
কার আগে কে সৃষ্টি
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলা যার – আগে যাকে সৃষ্টি করেন।
জান্নাতকে - জাহান্নামের আগে
আপন রহমতকে - গযবের আগে
আসমানকে - যমীনের আগে
সূর্য ও চাঁদকে - নক্ষত্রের আগে
দিনকে - রাতের আগে
পানিভাগকে - স্থলভাগের আগে
সমভুমিকে - পাহাড়-পর্বতের আগে
ফিরিশতাদেরকে - জ্বিনদের আগে
জ্বিনজাতিকে - মানবজাতির আগে
এবং
পুরুষ জাতিকে - স্ত্রী জাতির আগে
======================
আদি জ্বিনের আকাংক্ষা
=============
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা আবূল জ্বিন্নাত বা জ্বিন জাতির আদিপিতা “সামূম”কে আগুনের শিখা দিয়ে সৃষ্টি করার পর বলেন,তুমি কিছু কামনা কর।সে বলল, “আমার কামনা হল, আমরা সবাইকে দেখব কিন্তু আমাদের যেন কেউ না দেখে এবং আমাদের বৃদ্ধরা যেন জোয়ান হয়ে মারা যায়।আল্লাহ তার এই কামনা কবুল করলেন তাই জ্বিনরা অদৃশ্য এবং মারা গেলে জোয়ান হয়ে মারা যায়।
==============================
জ্বিনেরা পৃথিবীতে বাস করত মানুষের আগেঃ
==============================
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, জ্বিনেরা পৃথিবীতে এবং ফিরিশ্তারা আসমানে বাস করত।প্রত্যেক আসমানের আলাদা আলাদা ফিরিশতা থাকত এবং আসমানের বাসিন্দাদের জন্য আলাদা আলাদা নামাজ-দোয়া ছিল।মূলত এরাই ছিল আসমান ও জমিনের বাসিন্দা
জ্বিনদের সৃষ্টি আদমের (আঃ) ২০০০ বছর আগে
=========================
ইবলীস পৃথিবীতে বাস করছে যবে থেকে!
=========================
জুওয়াইবির ও উসমান (রাঃ)নিজেদের সনদ সহকারে বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করার পর তাদেরকে পৃথিবীতে বাস করার জন্য নির্দেশ দেন।ওরা পৃথিবীতে আল্লাহর একান্ত অনুগত হয়ে চলতে লাগল।অবশেষে দীর্ঘকাল কেটে যাবার পর, ওরা আল্লাহর অবাধ্যতা শুরু করে দিল এবং খুন খারাবী করতে লাগল।তাদের এক বাদশাহ ছিল, যার নাম ছিল ইউসুফ।
তাকে ও তারা মেরে ফেলল।তকন আল্লাহ তাদের ওপর দ্বিতীয় আসমানের ফেরেশতাদের এক বাহিনী পাঠালেন।তাদের মধ্যে ইবলীসও ছিল।ইবলিস ছিল ৪০০০ জনের সর্দার।সে আসমান থেকে নেমে এসে জমিনের সমস্ত জ্বিন সন্তানদের হত্যা করল এবং বাকিদের মেরে কেটে সমুদ্রের দ্বীপগুলোর দিকে তারিয়ে দিল।তখন ইবলীস তার বাহিনী সমেত এই জমিনেই থাকতে লাগল।তেদের পক্ষে আল্লাহর বিধি-বিদ্বান মেনে চলা খুব সহজ হয় গেল এবং তারা পৃথিবীতে বসবাস করাকে পছন্দ করল।


হিজড়ারা জম্মায় কেমন করে?
---------------------
হযরত ইবনে আব্বাস (রা)বলেন হিজড়ারা জ্বিনদের সন্তান।
কোন এক ব্যাক্তি আব্বাস (রা) কে জিজ্ঞেস করে এমনটা কেমন করে হয়?
উত্তরে তিনি বলেন আল্লাহ ও তার রাসুল (সা) নিষেধ করেছেন যে মানুষ যেন তার স্ত্রীর সাথে মাসিক স্রাব চলাকালিন যৌনসঙ্গম না করে।স্ত্রী লোকের ঋতুস্রাব চলাকালীন যৌন সঙ্গম করলে শয়তান তার আগে আগে থাকে এবং শয়তানের দ্বারা ঔ মহিলা গর্ববতী হয় এবং হিজড়া সন্তান প্রসব করে।
শয়তান জ্বিন মানুষের সন্তানে শরীক হয় যেভাবেঃ হযরত মুজাহিদ (রাহ) বলেন, মানুষ তার স্ত্রীর সাথে যৌনমিলন করার আগে “বিসমিল্লাহ” না পড়লে জ্বিন তার প্রস্রাবের ছিদ্র পথের সাথে জড়িয়ে যায় এবং সেও সেই পুরুষের সাথে যৌনমিলনে অংশ নেই।
এর থেকে বাঁচতে হলে মিলনের আগে এই দুয়া পড়তে হবে, “আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইত্ব-না অজান্নিবাশ শাইত্ব-না মা রাযাকতান”
=============================================
================
জ্বিন শব্দের অর্থ ও পরিচিত
হযরত ইবনে দুরাইদ (রাহ) বলেন জ্বিন হল মানব জাতি হতে আলাদা একটি জাতি বা সৃষ্টি।জ্বিন শব্দের অর্থ গুপ্ত অদৃশ্য বা লোক্কায়িত।
জ্বিন কারাঃ হযরত আবু উমর আয যাহিদ বলেন, জিন্নাত বা জ্বিন জাতির কুকুর বা ইতর শ্রেণীকে বলা হয় জ্বিন।
জ্বান কারাঃ হযরত জাওহরি বলেন, জ্বান হল জ্বিনের আদি পিতা বা আবুল জ্বিন।
শয়তান কারাঃ আল্লামা ইবনে আকিল বলেন, শয়তান হল এক প্রকার জ্বিন যারা আল্লাহর অবাধ্য ইবলীশের বংশধর।
মারাদা কারাঃ আল্লামা আকিলের মতে মারাদা হল, জ্বিন জাতির মধ্যে যারা চরম অবাধ্য।
জ্বিন জাতির শ্রেণী বিভাগঃ
১-জ্বিনঃ অর্থাৎ সাধারণ জ্বিন
২-আমিরঃ (বহু বচনে উম্মার) যারা মানুষের সাথে থাকে
৩-আরওয়াহ যারা মানুষের সামনে আসে
৪-শয়তানঃ উদ্ধত অবাধ্য
৫-ইফরীত্ব যা শয়তানের চেয়েও বিপদ জনক


• সাবার রাণী [সুলাইমান (আঃ)-এর বিবি] বিলকিসের মা ছিল জ্বিন।
*******************************************
কথিত আছেঃ বিলকিসের মা-বাপের মধ্যে একজন ছিল জ্বিন। ইবনুল কালবী বলেন, বিলকিসের বাপ জ্বিনদের মেয়েকে বিয়ে করে ছিল। যার নাম ছিল, “রেহান বিন্তে সুকুন” এরই গর্ভে বিলকিসের জন্ম হয়। এর নাম রাখাআ হয় ‘বিলকিমাহ’। বর্ণীত আছে যে বিলকিসের পায়ের সামনে ছিল চতুষ্পদ জন্তুর খুরের মত এবং তার গোরালীতে লোম ও ছিল। হযরত সুলাইমান (আঃ) তাকে বিয়ে করেছিল এবং শয়তানদের নির্দেশ দিয়েছিল, তোমরা গোসল খানা এবং লোম-বিন্নাশক পাউডার বানাও।
আবু হুরাইরা হতে বর্ণীত রাসুল (সাঃ) বলেন, বিলকিস-এর পিতা-মাতা’র মধ্যে একজন ছিল জ্বিন।
• জ্বিনদের বিয়ে-শাদী ও বংশধারা
********************
কোরআন থেকে প্রমাণ
“ইতোপুর্বে ও (অনত-নয়না স্বর্গ সুন্দরী, হুর)-দের কাছে না কোন মানুষ গিয়েছে না কোন জ্বিন। (আর রাহমান) এই আয়াত থেকে বুঝা গেল যে, জ্বিনরা যৌনমিলনও করে।
জ্বিনদের জন্মহার অনেক বেশী।
==================
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহ মানব জাতি ও জ্বিন জাতকে ১০ ভাগে ভাগ করেছেন। তার মধ্যে ৯ ভাগ জ্বিন এক ভাগ মানুষ। যখন একটি মানব শিশু জন্মায় তখন জ্বিনদের ৯ টা বাচ্চা হয়।
জ্বিনদের সাথে মানুষের বিয়ে
=================
জ্বিনের সাথে মানুষের বিয়ে হওয়া সম্ভব। তবে মাকরূহ। ইমাম সাঅলাবী (রাহঃ) বলেন, মানুষের ধারণা, বিয়ে এবং গর্ভ হওয়া মানুষ ও জ্বিন উভয়ের মধ্যে হতে পারে। পবিত্র কোরআনে বলা আছে, (আল্লাহ শয়তান কে উদ্দেশ্য করে বলেন ) তুই মানুষের সম্পদে ও সন্তানে শরীক হয় যা। (সুরা বনী ঈসরাইল)।
জ্বিন মানুষের সহজাত মিলনে সন্তানের নাম কী? “জ্বিন ও মানুষের মিলনে যে সন্তান হয় তার নাম ‘খুন্নাস’।“
• জ্বিন মানুষের মিলনে ছেলে হওয়ার ঘটনা (এ কোন বানোয়াট কাহিনী নয় হাদিস শুনাচ্ছি )।
=============================================
========
হযরত আবূ সাইদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি হযরত আলীর সাথে নাহরোয়ানে হুদুদিয়াদের হত্যাকার্যে সামিল হলাম। আলী (রাঃ) আমার কাছে ‘তালীদ’কে সন্ধান করলেন কিন্তু তাকে পেলাম না। তখন তিনি বললেন, তাকে খুঁজ। পরে তিনি নিজে তাকে খুজে বের করলেন।তারপর বললেন, “কে একে জান?” উপস্থিত ব্যক্তির মধ্যে একজন বলল, একে আমি জানি। এ “কাউস”। এর মা’ও আছেন। আলী তার মা’র কাছে একজন দূত পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এর বাপ কে? সে বলল, ‘আমি জানিনা, তবে এটুকু জানি যে, আমি অজ্ঞাতার যুগে আপন সম্প্রদায়ের বকরী-পাল চরাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার কাছে এক ছায়া মুর্তি এসে আমার সাথে যৌন-মিলন করে, যার দ্বারা আমার গর্ভ হয়। এ হল সেই গর্ভের সন্তান।

প্রত্যেক মুসলমানের ঘর-বাড়ির ছাদে মুসুলমান জ্বিন বাস করে
ইয়াজীদ বিন জাবির (তাবেঈ) বলেছেন, সকল মুসলমানের ঘরের ছাদে মুসলমান জ্বিনরা বসবাস করে। যখন বাড়ির মানুষদের জন্য খাবার তৈরী করে রাখা হয় তখন সংশ্লিষ্ট বাড়ির জ্বিনরা নেমে এসে তাদের সাথে আহার করে এবং যখন বাড়ির লোকদের রাতের খাবার দেওয়া হয় তখনও তারা নেমে এসে তাদের সাথে খাবারে শরিক হয়। এসব জ্বিনের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের খারাপ জ্বিন থেকে রক্ষা করেন।
• জ্বিনরা কী খায়
হযরত ওয়াহাব বিন মুনাব্বিহ (রাহঃ) বলেন, জ্বিন কয়েক প্রকার। এক প্রকার জ্বিন হল হাওয়া (হাওয়ায় মিশে থাকে)। ওরা খাওয়া-দাওয়া, বিয়ে-শাদী কিছুই করেনা এবং মারাও যায়না তাদের বাচ্চাও হয়না। আর এক প্রকার আছে যারা খাওয়া দাওয়া, বিয়ে-শাদী করে এবং মারা ও যায়।
হযরত আলকামাহ (রাহঃ) বলেছেন, আমি হযরত মাসউদ (রা)-কে নিবেদন করি, আপনাদের মধ্যে কেউ ‘লাইলাতুল জ্বিন’ (অর্থাৎ জ্বিনের রাত)-এ রাসুল (সাঃ)-এর সাথে ছিলেন কি?
উনি বললেন, ‘না’।কিন্ত এক রাতে আমরা তাকে মক্কায় অনুপস্থিত পেলাম। আমরা বললাম, হয়ত নবীজীকে কাফিররা ধরে ফেলেছে এবং তাকে গুম করে ফেলেছে। আমাদের ওই রাতটা খুব খারাপ অবস্থায় গেল। যখন সকাল হল, দেখা গেল নবীজী হেরা পর্বত হতে আস্তেছে। তারপর আমরা আমাদের গত রাতের উদ্বেগের কথা জানালাম। তিনি বললেন, একটি জ্বিন এসে আমাকে দাওয়াত দিয়েছিল, তাই আমি তাদের সাথে গিয়েছিলাম এবং তাদের কোরান পড়ে শুনালাম। এরপর নবীজী আমাদের নিয়ে গেলেন এবং জ্বিনদের নিদর্শন দেখালেন। ওদের আগুনের চিহ্ন দেখালেন। ওই জ্বিনরা হুজুরের কাছে সফরের সামান (বা পাথেয়) চাই। কেননা তারা ছিল এক দ্বীপের জ্বিন। তখন নবীজী তাদের বললেন, তোমাদের খাদ্য এমন সব হাড় যার প্রতি আল্লাহর নাম নেওয়া হয়ছে।
রাসুল (সাঃ) আরো বলেন, তোমরা এই দু’টো জিনিষ (হাড় ও গোবর) দিয়ে এস্তেঞ্জা করোনা। কেননা এগুলো হলো তোমাদের জ্বিন ভাইদের খোরাক।
জৈনক জ্বিনের আবেদন,
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি একবার রাসুলের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তার কাছে এক সাপ এল এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে গেল। আমি তাকে নবীজীর আরো কাছে করে দিলাম। সে রাসুলের পবিত্র কানের কাছে গিয়ে চুপিচুপি কিছু বলল। নবীজী বললেন ঠিক আছে। তারপর সাপটি চলে গেল। তখন ব্যাপারটি আমি জানতে চাইলে, হুজুর বলেন, সে ছিল জ্বিন। সে আমাকে বলে গেল, “আপনি আপনার উম্মতদের বলেদেন যে তারা যেন গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেঞ্জা না করে কেননা আল্লাহ ওই দু’টো জিনিষে আমাদের জন্য আহার্য রেখেছেন”।
• শয়তান খানা-পিনা করে বাম হাতে।
হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণীত, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আহার করে তারা যেন ডান হাত দিয়ে আহার করে এবং পান করার সময় ডান হাত দিয়ে পান করে, কেননা শয়তান বাম হাত দিয়ে আহার ও পান করে।
হুযাইফা (রাঃ) বলেন, রাসুল এর সঙ্গে যখন কোন খানার মজলিসে হাজির হতাম তখন তিনি শুরু করার আগে আমরা শুরু করতাম না। একবারের ঘটনা, আমারা খাওয়ার মজলিসে হাজীর আছি এমন সময় এক বেদুঈন এল। যেন তাকে কেউ খাবারের দিকে তারিয়ে এনেছে। সে এসে খাবারের দিকে হাত বাড়াল। নবীজী তার হাত ধরে ফেললেন এবং তাকে বসিয়ে দিল। তারপর একটি মেয়ে আসল তাকেও যেন কেউ হাকিয়ে এনেছে। মেয়েটিও এসে খাবারে হাত দিল এবং তার হাত ও ধরে ফেললেন হুজুর। তার পর তিনি বলেন, যে খাবারে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়না শয়তান সেই খাবার তার জন্য হালাল করে নেই। শয়তান এই বেদুঈনের সাথে খেতে এসেছিল আমি তার হাত ধরে ফেললাম তাই সে ওই মেয়েটির সাথে এল এবং এদের মাধ্যমে খাবারে ভাগ বসাতে চাইল। এর হাতও আমি ধরে ফেললাম। যার আয়ত্বে আমার জীবন সেই সত্তার কসম! এই দুজনের সাথে শয়তানের হাত ও (এখন) আমার মুঠোর মধ্যে।
হযরত আবু হুরাইরা বর্ণনা করেন, হুজুর ( সাঃ) বলেছেন, শয়তান তোমাদের সাথে সকল সময় সকল অবস্থায় বিদ্যমান থাকে, এমনকি খাওয়ার সময়ও। তাই তোমাদের মধ্যে খাদ্যের গ্রাস পড়ে গেলে তার ময়লা সাফ করে যেন তা খেয়ে নেই, যেন শয়তানের জন্য ছেড়ে না দেয়।
হযরত জাবির (রাঃ) শুনেছেন যে, হুজুর (সঃ) বলেন, যখন কোন মানুষ নিজের বাড়িতে প্রবেশ করার সময় এবং খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে, তখন শয়তান (অন্যান্য শয়তানের উদ্দেশে) বলে, তোমাদের জন্য এখানে থাকা খাওয়ার জন্য কোন অবকাশ নেই। কিন্তু কোন মানুষ যদি ঘরে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর নাম না নেই। তাহলে শয়তান বলে তোমরা জন্য রাতে থাকার ও সাঁঝে খাওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলে।

বর্ণনায় আকিল (রাহঃ)। আমাদের একটি বাড়ি ছিল। তাতে যখনি কোন লোক থাকত, সকালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যেত। একবার এক মরক্কোর লোক এল। ঘরটি তার পছন্দ হল এবং সে ভাড়া নিল। তারপর রাত কাটাল এবং সকালে দেখা গেল সে পুরোপুরি সুস্থ। তার কিছুই হয়নি। তা দেখে প্রতিবেশীরা অভাক। লোকটি বেশ কিছুকাল ছিল তারপর অন্যত্র চলে গেল। তাকে ওই ঘরের নিরাপদ থাকার কথা জিজ্ঞেস করা হলে সে বলল, আমি যখন সেই ঘরে থাকি তখন (প্রথম রাতে) ইশার নামাজ পড়েছি এবং কোরআন থেকে কিছু পড়েছি। তারপর দেখি এক যুবক কূপ থেকে উপরে উঠতেছে। সে আমাকে সালাম দিল। আমি তাকে দেখে ভয় পেলাম। সে বল, ভয় পেওনা আমাকেও কিছু কোরান পাঠ শেখাও। তারপর তাকে আমি কোরান শেখাই এবং জিজ্ঞেস করি এই ঘরের রহস্য কি? সে বলল, আমরা মুসলমান জ্বিন। আমরা কোরান পাঠও করি এবং নামাযও পড়ি। কিন্তু এই ঘরে বেশীর ভাগ সময় বদমাশ লোকেরা থাকে এবং মদের আসর বসায়। তাই আমরা তাদের গলা টিপে দিয়। আমি তাকে বললাম, তোমাকে আমি রাতে ভয় পায় তাই তুমি দিনের বেলায় এসো। সে বলল, খুব ভাল। তারপর থেকে সে দিনের বেলায় কুপ থেকে আসত। একবার সে কোরান পাঠ করতেছিল এমন সময় বাইরে এক ওঝা আসল এবং বলতেছে, “আমি সাপে কাটা, বদ নজর লাগা এবং জ্বিনে ধরা রোগের ঝাঁড়-ফোঁক করি”। তার কথা শুনে জ্বিনটি বলল, “সে কে?”। আমি বললাম ও হল ওঝা ঝাঁড়-ফোঁক করে। সে বলল তাকে ডাক। আমি উঠে তাকে ডেকে আনলাম। এসে দেখি, সে জ্বিনটি এক বিরাট সাপ হয়ে ঘরের ভিতরের ছাদে উঠে গেল। ওঝা এসে ঝাঁড়-ফুঁক করতেই সে ঝটপট করতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত ঘরের মেঝেই পড়ে গেল। তখন ওঝা তাকে ধরে ঝাঁপিতে ভরতে গেল আমি মানা করলাম। সে বলল, ‘তুমি আমাকে আমার শিকার ধরার কাজে বাধা দিচ্ছ’ তখন আমি তাকে একটা স্বর্ণ মুদ্রা দিলাম সে চলে গেল। তারপর সে অজগর নড়া-ছড়া করল এবং জ্বিন রূপে প্রকাশ ঘটল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কি হয়ছে? জ্বিন বলল, আমাকে ওই ওঝা পাক ইসমের মাধ্যমে শেষ করে ফেলেছে। আমি বাঁচব বলে আর বিশ্বাস হচ্ছেনা। যদি তুমি এই কুপ থেকে কোন চিৎকারের শব্দ শুনতে পাও তবে চলে যেও। সেই রাতে আমি এক আওয়াজ শুনতে পেলাম যে, “তুমি দূরে চলে যাও”। এরপর থেকে ওই ঘরে আর কেউ থাকত না।
আর এক সুন্দরী জ্বিন স্ত্রীর ঘটনা।
=======================
বর্ণনায় আল্লামা বাদরুদ্দীন শিবলী (রাহঃ)। জনাব কাযীউল ক্বযযাহ জালালুদ্দিন আহমেদ বিন ক্বাযীউল ক্বযযাহ হিসামুদ্দিন কাযী হানাফী বলেন, আমার পিতা আমাকে পরিবার পরিজন-বর্গকে প্রাচ্য হতে আনার জন্য সফরে পাঠান। যখন আমি বীরাহ নামক স্থান পার হলাম, বৃষ্টি আমাদের এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। আমি এক যাত্রী দলের সাথে ছিলাম। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি কেউ আমাকে জাগাচ্ছে। জেগে দেখি আমার কাছে মাঝারি উচ্ছতার এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তার চোখ ছিল একটা লম্বা-লম্বি ফাটলের মত। সে বলল তুমি ভয় পেওনা। আমি তোমার কাছে আমার চাঁদের মত মেয়েকে বিয়ে দিতে এসেছি। আমি ঘাবড়ে গিয়ে বললাম আল্লাহ ভালো করুন। তারপর দেখলাম কিছু মানুষ আমার দিকে আসছে। তাদের আকৃতিও ওই মহিলার মত। তাদের চোখেও লম্বা ফাটল আছে। তাদের সাথে এক কাযীও ছিল এবং সাক্ষীও। সুতরাং কাযী বিয়ের পয়গাম দিল এবং বিয়েও পড়িয়ে দিল যা আমি বাধ্য হয়ে কবুল করলাম। এবং ওরা যখন চলে গেল, তারপর মহিলা আমার কাছে আসল। এবার তার সাথে এক সুন্দরী মেয়েও ছিল। তার চোখও ছিল তার মায়ের মত ভয়ঙ্কর। মেয়েটির মা মেয়েকে আমার কাছে রেখে চলে গেল। তারপর আমার ভয় আরো বেড়ে গেল। আমি আমার সঙ্গীদের জাগাতে কাঁকর ছুঁড়ে মারলাম। কিন্তু উদের কেউ উঠল না। তখন অনুনয়-বিনয় করে আল্লাহর কাছে দুয়া করতে লাগলাম। পরে ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ার সময় এল। আমরা রওনা দিলাম কিন্তু মেয়েটি আমাকে ছাড়ল না। এই অবস্থায় তিন-দিন কেটে গেল। চারদিনের মাথায় মেয়ের মা এল এবং বলল, “সম্ভবত এই মেয়েকে তোমার পছন্দ হয়নি। তুমি মনে হয় এর থেকে বিচ্ছেদ চাইছ”। আমি বললাম, হ্যা আল্লাহর কসম। সে বলল, তবে একে তালাক দাও। আমি তাকে তালাক দিলে সে চলে গেল। পরে আমি তাকে আর কখনো দেখিনি।

Back to posts
Comments:

Post a comment

আমাদের সাদি সোনার Facebook ID গতকাল রাত এ HACK হইচে।তাই সবাই নতুন ID তে request পাঠা।সাদির ID Link এখনে........click here
🎡Upcomming Events👑>
Tags: mzs, Quran

》●》জীনদের নিয়ে কিছু কথা.....new

জ্বিনদের আকৃতি বদলের রহস্য
কাযী আবু ইয়ালা হামবালী (রাহ) বলেনঃ জ্বিন ও শয়তানদের এমন কোন এখতিয়ার নেই যে তারা নিজেদের রূপ বদলাতে পারে এবং অন্যান্য রূপ ধারণ করবে; অবশ্য এ কথা ঠিক যে তাদেরকে আল্লাহ এমন কিছু বিশেষ কথা ও কাজ জানিয়ে দিয়েছেন যার ফলে তারা যখন সেই বিশেষ কথা ও কাজের প্রয়োগ ঘঠায় তখন তারা আল্লাহর ইচ্ছাই এক আকৃতি থেকে অন্য আকৃতিতে বদলে যায়।কিন্তু স্বয়ং নিজে থেকে জ্বিন ও শয়তান নিজেদের আকৃতি বদলানো অসম্ভব।কেননা নিজস্ব আকৃতি থেকে অন্য আকৃতি রূপান্তরিত করা মানে নিজের মূল উপাদান তথা অঙ্গপ্রত্যঙ্গকেও বদলে দেওয়া।এটা তাদের পক্ষে কিভাবে সম্ভব?
কাযী আবু ইয়ালা হাম্বলী আরো বলেন, ফিরিশতাদের বিভিন্ন রূপ ধারণের কেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
• জ্বিনরা কি কি রূপ নিতে পারেঃ
জ্বিনরা বহুরূপী হতে পারে, যেমন মানুষ, চতুষ্পদ পশু, সাপ, বিছে, উট, গরু, ছাগল, ঘোড়া, খচ্চর, গাধা ও বিভিন্ন পশু-পাখি প্রভৃতির আকার ধারণ করতে পারে।
• সাপ ও কুকুররাও এক প্রকার জ্বিন!
সাপ হল এক প্রকার রূপান্তরিত জ্বিন, যেমন বাদর ও শুকরে রূপান্তরিত হয়ছিল বনী-ইসরাইল।তবে জ্বিন সাপ গুলো হয় সাদা।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, কিছু কিছু কুকুররা এক প্রকার জ্বিন এবং এরা খুব দুর্বল জ্বিন।সুতরাং খাওয়ার সময় কোন কুকুর বসে গেলে তাকেও কিছু দেওয়া উচিত নাইলে তারিয়ে দেওয়া দরকার।কেননা তারো একটা প্রবৃত্তি (নফস) আছে।
হযরত আবু ক্বিলাবাহ হতে বর্ণীত, রাসুল (সাঃ) বলেনঃ যদি এই কুকুরগুলা এক প্রকার সৃষ্টিজীব না হত তাহলে এগুলোকে কতল করে দিতাম।কিন্তু কোন মাখলূককে বিলিন করতে আমার ভয় হয়।তবে তোমরা এদের মধ্যে সমস্ত কালো কুকুর গুলোকে মেরে ফেলবে।কারণ এগুলো এক প্রকার শয়তান।
রাসুল আরো বলেন, নামাজীর সামনে দিয়ে কালো কুকুর গেলে নামাজ ভেঙ্গে যায়।সাহাবীরা এ ব্যাপারে আরজ করল যে, "জনাব, লাল ও সাদা কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের কি দোষ?" উত্তরে রাসুল বলল, কালো কুকুর হল এক প্রকার শয়তান।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, জ্বিনরা তিন প্রকার-এক প্রকার জ্বিন হল, সাপ, বিছে, কুকুর ও পোকা-মাকড়।দ্বিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যারা হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়।এবং তিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যাদের পরকালের জন্য হিসাব-নিকাশ ও পুরষ্কার ও আযাব আছে।
আল্লামা সুহাইলী (রাহ) বলেন, শেষ প্রকারের জ্বিনরাই নিজেদের রূপ বদলাতে পারে।
কাযী আবু বকর বাকেলানী (রাহ) বলেন, আমি বলছি যারা জ্বিন দেখেছেন তারা সত্যি দেখেছেন।কেননা আল্লাহ জ্বিনদের দৃশ্যরূপ সৃষ্টি করেন এবং এরা বিভিন্ন আকৃতির ও কোমল দেহ বিশিষ্ট হয়।
• জ্বিন হল আগুনের সৃষ্টি
পবিত্র কোরানে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি আদমের আগে জ্বিনকে সৃষ্টি করি ‘লূ’এর আগুন (অর্থাৎ অত্যন্ত সূক্ষ্ম হওয়ার জন্য অতুষ্ণ বায়ুতে পরিণত হয়েছে এমন আগুন) দিয়ে

জ্বিনজাতি সৃষ্টি হয়ছে যেদিন।
হযরত আবু আলিয়ার বর্ণনাঃ আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেন বুধবার, জ্বিনকে সৃষ্টি করেন বৃহস্পতিবার এবং আদমকে সৃষ্টি করেন শুক্রবার।
=============================
কার আগে কে সৃষ্টি
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলা যার – আগে যাকে সৃষ্টি করেন।
জান্নাতকে - জাহান্নামের আগে
আপন রহমতকে - গযবের আগে
আসমানকে - যমীনের আগে
সূর্য ও চাঁদকে - নক্ষত্রের আগে
দিনকে - রাতের আগে
পানিভাগকে - স্থলভাগের আগে
সমভুমিকে - পাহাড়-পর্বতের আগে
ফিরিশতাদেরকে - জ্বিনদের আগে
জ্বিনজাতিকে - মানবজাতির আগে
এবং
পুরুষ জাতিকে - স্ত্রী জাতির আগে
======================
আদি জ্বিনের আকাংক্ষা
=============
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা আবূল জ্বিন্নাত বা জ্বিন জাতির আদিপিতা “সামূম”কে আগুনের শিখা দিয়ে সৃষ্টি করার পর বলেন,তুমি কিছু কামনা কর।সে বলল, “আমার কামনা হল, আমরা সবাইকে দেখব কিন্তু আমাদের যেন কেউ না দেখে এবং আমাদের বৃদ্ধরা যেন জোয়ান হয়ে মারা যায়।আল্লাহ তার এই কামনা কবুল করলেন তাই জ্বিনরা অদৃশ্য এবং মারা গেলে জোয়ান হয়ে মারা যায়।
==============================
জ্বিনেরা পৃথিবীতে বাস করত মানুষের আগেঃ
==============================
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, জ্বিনেরা পৃথিবীতে এবং ফিরিশ্তারা আসমানে বাস করত।প্রত্যেক আসমানের আলাদা আলাদা ফিরিশতা থাকত এবং আসমানের বাসিন্দাদের জন্য আলাদা আলাদা নামাজ-দোয়া ছিল।মূলত এরাই ছিল আসমান ও জমিনের বাসিন্দা
জ্বিনদের সৃষ্টি আদমের (আঃ) ২০০০ বছর আগে
=========================
ইবলীস পৃথিবীতে বাস করছে যবে থেকে!
=========================
জুওয়াইবির ও উসমান (রাঃ)নিজেদের সনদ সহকারে বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করার পর তাদেরকে পৃথিবীতে বাস করার জন্য নির্দেশ দেন।ওরা পৃথিবীতে আল্লাহর একান্ত অনুগত হয়ে চলতে লাগল।অবশেষে দীর্ঘকাল কেটে যাবার পর, ওরা আল্লাহর অবাধ্যতা শুরু করে দিল এবং খুন খারাবী করতে লাগল।তাদের এক বাদশাহ ছিল, যার নাম ছিল ইউসুফ।
তাকে ও তারা মেরে ফেলল।তকন আল্লাহ তাদের ওপর দ্বিতীয় আসমানের ফেরেশতাদের এক বাহিনী পাঠালেন।তাদের মধ্যে ইবলীসও ছিল।ইবলিস ছিল ৪০০০ জনের সর্দার।সে আসমান থেকে নেমে এসে জমিনের সমস্ত জ্বিন সন্তানদের হত্যা করল এবং বাকিদের মেরে কেটে সমুদ্রের দ্বীপগুলোর দিকে তারিয়ে দিল।তখন ইবলীস তার বাহিনী সমেত এই জমিনেই থাকতে লাগল।তেদের পক্ষে আল্লাহর বিধি-বিদ্বান মেনে চলা খুব সহজ হয় গেল এবং তারা পৃথিবীতে বসবাস করাকে পছন্দ করল।


হিজড়ারা জম্মায় কেমন করে?
---------------------
হযরত ইবনে আব্বাস (রা)বলেন হিজড়ারা জ্বিনদের সন্তান।
কোন এক ব্যাক্তি আব্বাস (রা) কে জিজ্ঞেস করে এমনটা কেমন করে হয়?
উত্তরে তিনি বলেন আল্লাহ ও তার রাসুল (সা) নিষেধ করেছেন যে মানুষ যেন তার স্ত্রীর সাথে মাসিক স্রাব চলাকালিন যৌনসঙ্গম না করে।স্ত্রী লোকের ঋতুস্রাব চলাকালীন যৌন সঙ্গম করলে শয়তান তার আগে আগে থাকে এবং শয়তানের দ্বারা ঔ মহিলা গর্ববতী হয় এবং হিজড়া সন্তান প্রসব করে।
শয়তান জ্বিন মানুষের সন্তানে শরীক হয় যেভাবেঃ হযরত মুজাহিদ (রাহ) বলেন, মানুষ তার স্ত্রীর সাথে যৌনমিলন করার আগে “বিসমিল্লাহ” না পড়লে জ্বিন তার প্রস্রাবের ছিদ্র পথের সাথে জড়িয়ে যায় এবং সেও সেই পুরুষের সাথে যৌনমিলনে অংশ নেই।
এর থেকে বাঁচতে হলে মিলনের আগে এই দুয়া পড়তে হবে, “আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইত্ব-না অজান্নিবাশ শাইত্ব-না মা রাযাকতান”
=============================================
================
জ্বিন শব্দের অর্থ ও পরিচিত
হযরত ইবনে দুরাইদ (রাহ) বলেন জ্বিন হল মানব জাতি হতে আলাদা একটি জাতি বা সৃষ্টি।জ্বিন শব্দের অর্থ গুপ্ত অদৃশ্য বা লোক্কায়িত।
জ্বিন কারাঃ হযরত আবু উমর আয যাহিদ বলেন, জিন্নাত বা জ্বিন জাতির কুকুর বা ইতর শ্রেণীকে বলা হয় জ্বিন।
জ্বান কারাঃ হযরত জাওহরি বলেন, জ্বান হল জ্বিনের আদি পিতা বা আবুল জ্বিন।
শয়তান কারাঃ আল্লামা ইবনে আকিল বলেন, শয়তান হল এক প্রকার জ্বিন যারা আল্লাহর অবাধ্য ইবলীশের বংশধর।
মারাদা কারাঃ আল্লামা আকিলের মতে মারাদা হল, জ্বিন জাতির মধ্যে যারা চরম অবাধ্য।
জ্বিন জাতির শ্রেণী বিভাগঃ
১-জ্বিনঃ অর্থাৎ সাধারণ জ্বিন
২-আমিরঃ (বহু বচনে উম্মার) যারা মানুষের সাথে থাকে
৩-আরওয়াহ যারা মানুষের সামনে আসে
৪-শয়তানঃ উদ্ধত অবাধ্য
৫-ইফরীত্ব যা শয়তানের চেয়েও বিপদ জনক


• সাবার রাণী [সুলাইমান (আঃ)-এর বিবি] বিলকিসের মা ছিল জ্বিন।
*******************************************
কথিত আছেঃ বিলকিসের মা-বাপের মধ্যে একজন ছিল জ্বিন। ইবনুল কালবী বলেন, বিলকিসের বাপ জ্বিনদের মেয়েকে বিয়ে করে ছিল। যার নাম ছিল, “রেহান বিন্তে সুকুন” এরই গর্ভে বিলকিসের জন্ম হয়। এর নাম রাখাআ হয় ‘বিলকিমাহ’। বর্ণীত আছে যে বিলকিসের পায়ের সামনে ছিল চতুষ্পদ জন্তুর খুরের মত এবং তার গোরালীতে লোম ও ছিল। হযরত সুলাইমান (আঃ) তাকে বিয়ে করেছিল এবং শয়তানদের নির্দেশ দিয়েছিল, তোমরা গোসল খানা এবং লোম-বিন্নাশক পাউডার বানাও।
আবু হুরাইরা হতে বর্ণীত রাসুল (সাঃ) বলেন, বিলকিস-এর পিতা-মাতা’র মধ্যে একজন ছিল জ্বিন।
• জ্বিনদের বিয়ে-শাদী ও বংশধারা
********************
কোরআন থেকে প্রমাণ
“ইতোপুর্বে ও (অনত-নয়না স্বর্গ সুন্দরী, হুর)-দের কাছে না কোন মানুষ গিয়েছে না কোন জ্বিন। (আর রাহমান) এই আয়াত থেকে বুঝা গেল যে, জ্বিনরা যৌনমিলনও করে।
জ্বিনদের জন্মহার অনেক বেশী।
==================
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহ মানব জাতি ও জ্বিন জাতকে ১০ ভাগে ভাগ করেছেন। তার মধ্যে ৯ ভাগ জ্বিন এক ভাগ মানুষ। যখন একটি মানব শিশু জন্মায় তখন জ্বিনদের ৯ টা বাচ্চা হয়।
জ্বিনদের সাথে মানুষের বিয়ে
=================
জ্বিনের সাথে মানুষের বিয়ে হওয়া সম্ভব। তবে মাকরূহ। ইমাম সাঅলাবী (রাহঃ) বলেন, মানুষের ধারণা, বিয়ে এবং গর্ভ হওয়া মানুষ ও জ্বিন উভয়ের মধ্যে হতে পারে। পবিত্র কোরআনে বলা আছে, (আল্লাহ শয়তান কে উদ্দেশ্য করে বলেন ) তুই মানুষের সম্পদে ও সন্তানে শরীক হয় যা। (সুরা বনী ঈসরাইল)।
জ্বিন মানুষের সহজাত মিলনে সন্তানের নাম কী? “জ্বিন ও মানুষের মিলনে যে সন্তান হয় তার নাম ‘খুন্নাস’।“
• জ্বিন মানুষের মিলনে ছেলে হওয়ার ঘটনা (এ কোন বানোয়াট কাহিনী নয় হাদিস শুনাচ্ছি )।
=============================================
========
হযরত আবূ সাইদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি হযরত আলীর সাথে নাহরোয়ানে হুদুদিয়াদের হত্যাকার্যে সামিল হলাম। আলী (রাঃ) আমার কাছে ‘তালীদ’কে সন্ধান করলেন কিন্তু তাকে পেলাম না। তখন তিনি বললেন, তাকে খুঁজ। পরে তিনি নিজে তাকে খুজে বের করলেন।তারপর বললেন, “কে একে জান?” উপস্থিত ব্যক্তির মধ্যে একজন বলল, একে আমি জানি। এ “কাউস”। এর মা’ও আছেন। আলী তার মা’র কাছে একজন দূত পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এর বাপ কে? সে বলল, ‘আমি জানিনা, তবে এটুকু জানি যে, আমি অজ্ঞাতার যুগে আপন সম্প্রদায়ের বকরী-পাল চরাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার কাছে এক ছায়া মুর্তি এসে আমার সাথে যৌন-মিলন করে, যার দ্বারা আমার গর্ভ হয়। এ হল সেই গর্ভের সন্তান।

প্রত্যেক মুসলমানের ঘর-বাড়ির ছাদে মুসুলমান জ্বিন বাস করে
ইয়াজীদ বিন জাবির (তাবেঈ) বলেছেন, সকল মুসলমানের ঘরের ছাদে মুসলমান জ্বিনরা বসবাস করে। যখন বাড়ির মানুষদের জন্য খাবার তৈরী করে রাখা হয় তখন সংশ্লিষ্ট বাড়ির জ্বিনরা নেমে এসে তাদের সাথে আহার করে এবং যখন বাড়ির লোকদের রাতের খাবার দেওয়া হয় তখনও তারা নেমে এসে তাদের সাথে খাবারে শরিক হয়। এসব জ্বিনের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের খারাপ জ্বিন থেকে রক্ষা করেন।
• জ্বিনরা কী খায়
হযরত ওয়াহাব বিন মুনাব্বিহ (রাহঃ) বলেন, জ্বিন কয়েক প্রকার। এক প্রকার জ্বিন হল হাওয়া (হাওয়ায় মিশে থাকে)। ওরা খাওয়া-দাওয়া, বিয়ে-শাদী কিছুই করেনা এবং মারাও যায়না তাদের বাচ্চাও হয়না। আর এক প্রকার আছে যারা খাওয়া দাওয়া, বিয়ে-শাদী করে এবং মারা ও যায়।
হযরত আলকামাহ (রাহঃ) বলেছেন, আমি হযরত মাসউদ (রা)-কে নিবেদন করি, আপনাদের মধ্যে কেউ ‘লাইলাতুল জ্বিন’ (অর্থাৎ জ্বিনের রাত)-এ রাসুল (সাঃ)-এর সাথে ছিলেন কি?
উনি বললেন, ‘না’।কিন্ত এক রাতে আমরা তাকে মক্কায় অনুপস্থিত পেলাম। আমরা বললাম, হয়ত নবীজীকে কাফিররা ধরে ফেলেছে এবং তাকে গুম করে ফেলেছে। আমাদের ওই রাতটা খুব খারাপ অবস্থায় গেল। যখন সকাল হল, দেখা গেল নবীজী হেরা পর্বত হতে আস্তেছে। তারপর আমরা আমাদের গত রাতের উদ্বেগের কথা জানালাম। তিনি বললেন, একটি জ্বিন এসে আমাকে দাওয়াত দিয়েছিল, তাই আমি তাদের সাথে গিয়েছিলাম এবং তাদের কোরান পড়ে শুনালাম। এরপর নবীজী আমাদের নিয়ে গেলেন এবং জ্বিনদের নিদর্শন দেখালেন। ওদের আগুনের চিহ্ন দেখালেন। ওই জ্বিনরা হুজুরের কাছে সফরের সামান (বা পাথেয়) চাই। কেননা তারা ছিল এক দ্বীপের জ্বিন। তখন নবীজী তাদের বললেন, তোমাদের খাদ্য এমন সব হাড় যার প্রতি আল্লাহর নাম নেওয়া হয়ছে।
রাসুল (সাঃ) আরো বলেন, তোমরা এই দু’টো জিনিষ (হাড় ও গোবর) দিয়ে এস্তেঞ্জা করোনা। কেননা এগুলো হলো তোমাদের জ্বিন ভাইদের খোরাক।
জৈনক জ্বিনের আবেদন,
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি একবার রাসুলের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তার কাছে এক সাপ এল এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে গেল। আমি তাকে নবীজীর আরো কাছে করে দিলাম। সে রাসুলের পবিত্র কানের কাছে গিয়ে চুপিচুপি কিছু বলল। নবীজী বললেন ঠিক আছে। তারপর সাপটি চলে গেল। তখন ব্যাপারটি আমি জানতে চাইলে, হুজুর বলেন, সে ছিল জ্বিন। সে আমাকে বলে গেল, “আপনি আপনার উম্মতদের বলেদেন যে তারা যেন গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেঞ্জা না করে কেননা আল্লাহ ওই দু’টো জিনিষে আমাদের জন্য আহার্য রেখেছেন”।
• শয়তান খানা-পিনা করে বাম হাতে।
হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণীত, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আহার করে তারা যেন ডান হাত দিয়ে আহার করে এবং পান করার সময় ডান হাত দিয়ে পান করে, কেননা শয়তান বাম হাত দিয়ে আহার ও পান করে।
হুযাইফা (রাঃ) বলেন, রাসুল এর সঙ্গে যখন কোন খানার মজলিসে হাজির হতাম তখন তিনি শুরু করার আগে আমরা শুরু করতাম না। একবারের ঘটনা, আমারা খাওয়ার মজলিসে হাজীর আছি এমন সময় এক বেদুঈন এল। যেন তাকে কেউ খাবারের দিকে তারিয়ে এনেছে। সে এসে খাবারের দিকে হাত বাড়াল। নবীজী তার হাত ধরে ফেললেন এবং তাকে বসিয়ে দিল। তারপর একটি মেয়ে আসল তাকেও যেন কেউ হাকিয়ে এনেছে। মেয়েটিও এসে খাবারে হাত দিল এবং তার হাত ও ধরে ফেললেন হুজুর। তার পর তিনি বলেন, যে খাবারে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়না শয়তান সেই খাবার তার জন্য হালাল করে নেই। শয়তান এই বেদুঈনের সাথে খেতে এসেছিল আমি তার হাত ধরে ফেললাম তাই সে ওই মেয়েটির সাথে এল এবং এদের মাধ্যমে খাবারে ভাগ বসাতে চাইল। এর হাতও আমি ধরে ফেললাম। যার আয়ত্বে আমার জীবন সেই সত্তার কসম! এই দুজনের সাথে শয়তানের হাত ও (এখন) আমার মুঠোর মধ্যে।
হযরত আবু হুরাইরা বর্ণনা করেন, হুজুর ( সাঃ) বলেছেন, শয়তান তোমাদের সাথে সকল সময় সকল অবস্থায় বিদ্যমান থাকে, এমনকি খাওয়ার সময়ও। তাই তোমাদের মধ্যে খাদ্যের গ্রাস পড়ে গেলে তার ময়লা সাফ করে যেন তা খেয়ে নেই, যেন শয়তানের জন্য ছেড়ে না দেয়।
হযরত জাবির (রাঃ) শুনেছেন যে, হুজুর (সঃ) বলেন, যখন কোন মানুষ নিজের বাড়িতে প্রবেশ করার সময় এবং খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে, তখন শয়তান (অন্যান্য শয়তানের উদ্দেশে) বলে, তোমাদের জন্য এখানে থাকা খাওয়ার জন্য কোন অবকাশ নেই। কিন্তু কোন মানুষ যদি ঘরে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর নাম না নেই। তাহলে শয়তান বলে তোমরা জন্য রাতে থাকার ও সাঁঝে খাওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলে।

বর্ণনায় আকিল (রাহঃ)। আমাদের একটি বাড়ি ছিল। তাতে যখনি কোন লোক থাকত, সকালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যেত। একবার এক মরক্কোর লোক এল। ঘরটি তার পছন্দ হল এবং সে ভাড়া নিল। তারপর রাত কাটাল এবং সকালে দেখা গেল সে পুরোপুরি সুস্থ। তার কিছুই হয়নি। তা দেখে প্রতিবেশীরা অভাক। লোকটি বেশ কিছুকাল ছিল তারপর অন্যত্র চলে গেল। তাকে ওই ঘরের নিরাপদ থাকার কথা জিজ্ঞেস করা হলে সে বলল, আমি যখন সেই ঘরে থাকি তখন (প্রথম রাতে) ইশার নামাজ পড়েছি এবং কোরআন থেকে কিছু পড়েছি। তারপর দেখি এক যুবক কূপ থেকে উপরে উঠতেছে। সে আমাকে সালাম দিল। আমি তাকে দেখে ভয় পেলাম। সে বল, ভয় পেওনা আমাকেও কিছু কোরান পাঠ শেখাও। তারপর তাকে আমি কোরান শেখাই এবং জিজ্ঞেস করি এই ঘরের রহস্য কি? সে বলল, আমরা মুসলমান জ্বিন। আমরা কোরান পাঠও করি এবং নামাযও পড়ি। কিন্তু এই ঘরে বেশীর ভাগ সময় বদমাশ লোকেরা থাকে এবং মদের আসর বসায়। তাই আমরা তাদের গলা টিপে দিয়। আমি তাকে বললাম, তোমাকে আমি রাতে ভয় পায় তাই তুমি দিনের বেলায় এসো। সে বলল, খুব ভাল। তারপর থেকে সে দিনের বেলায় কুপ থেকে আসত। একবার সে কোরান পাঠ করতেছিল এমন সময় বাইরে এক ওঝা আসল এবং বলতেছে, “আমি সাপে কাটা, বদ নজর লাগা এবং জ্বিনে ধরা রোগের ঝাঁড়-ফোঁক করি”। তার কথা শুনে জ্বিনটি বলল, “সে কে?”। আমি বললাম ও হল ওঝা ঝাঁড়-ফোঁক করে। সে বলল তাকে ডাক। আমি উঠে তাকে ডেকে আনলাম। এসে দেখি, সে জ্বিনটি এক বিরাট সাপ হয়ে ঘরের ভিতরের ছাদে উঠে গেল। ওঝা এসে ঝাঁড়-ফুঁক করতেই সে ঝটপট করতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত ঘরের মেঝেই পড়ে গেল। তখন ওঝা তাকে ধরে ঝাঁপিতে ভরতে গেল আমি মানা করলাম। সে বলল, ‘তুমি আমাকে আমার শিকার ধরার কাজে বাধা দিচ্ছ’ তখন আমি তাকে একটা স্বর্ণ মুদ্রা দিলাম সে চলে গেল। তারপর সে অজগর নড়া-ছড়া করল এবং জ্বিন রূপে প্রকাশ ঘটল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কি হয়ছে? জ্বিন বলল, আমাকে ওই ওঝা পাক ইসমের মাধ্যমে শেষ করে ফেলেছে। আমি বাঁচব বলে আর বিশ্বাস হচ্ছেনা। যদি তুমি এই কুপ থেকে কোন চিৎকারের শব্দ শুনতে পাও তবে চলে যেও। সেই রাতে আমি এক আওয়াজ শুনতে পেলাম যে, “তুমি দূরে চলে যাও”। এরপর থেকে ওই ঘরে আর কেউ থাকত না।
আর এক সুন্দরী জ্বিন স্ত্রীর ঘটনা।
=======================
বর্ণনায় আল্লামা বাদরুদ্দীন শিবলী (রাহঃ)। জনাব কাযীউল ক্বযযাহ জালালুদ্দিন আহমেদ বিন ক্বাযীউল ক্বযযাহ হিসামুদ্দিন কাযী হানাফী বলেন, আমার পিতা আমাকে পরিবার পরিজন-বর্গকে প্রাচ্য হতে আনার জন্য সফরে পাঠান। যখন আমি বীরাহ নামক স্থান পার হলাম, বৃষ্টি আমাদের এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। আমি এক যাত্রী দলের সাথে ছিলাম। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি কেউ আমাকে জাগাচ্ছে। জেগে দেখি আমার কাছে মাঝারি উচ্ছতার এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তার চোখ ছিল একটা লম্বা-লম্বি ফাটলের মত। সে বলল তুমি ভয় পেওনা। আমি তোমার কাছে আমার চাঁদের মত মেয়েকে বিয়ে দিতে এসেছি। আমি ঘাবড়ে গিয়ে বললাম আল্লাহ ভালো করুন। তারপর দেখলাম কিছু মানুষ আমার দিকে আসছে। তাদের আকৃতিও ওই মহিলার মত। তাদের চোখেও লম্বা ফাটল আছে। তাদের সাথে এক কাযীও ছিল এবং সাক্ষীও। সুতরাং কাযী বিয়ের পয়গাম দিল এবং বিয়েও পড়িয়ে দিল যা আমি বাধ্য হয়ে কবুল করলাম। এবং ওরা যখন চলে গেল, তারপর মহিলা আমার কাছে আসল। এবার তার সাথে এক সুন্দরী মেয়েও ছিল। তার চোখও ছিল তার মায়ের মত ভয়ঙ্কর। মেয়েটির মা মেয়েকে আমার কাছে রেখে চলে গেল। তারপর আমার ভয় আরো বেড়ে গেল। আমি আমার সঙ্গীদের জাগাতে কাঁকর ছুঁড়ে মারলাম। কিন্তু উদের কেউ উঠল না। তখন অনুনয়-বিনয় করে আল্লাহর কাছে দুয়া করতে লাগলাম। পরে ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ার সময় এল। আমরা রওনা দিলাম কিন্তু মেয়েটি আমাকে ছাড়ল না। এই অবস্থায় তিন-দিন কেটে গেল। চারদিনের মাথায় মেয়ের মা এল এবং বলল, “সম্ভবত এই মেয়েকে তোমার পছন্দ হয়নি। তুমি মনে হয় এর থেকে বিচ্ছেদ চাইছ”। আমি বললাম, হ্যা আল্লাহর কসম। সে বলল, তবে একে তালাক দাও। আমি তাকে তালাক দিলে সে চলে গেল। পরে আমি তাকে আর কখনো দেখিনি।

Back to posts
Comments:

Post a comment

Contact List
Tags: mzs, Quran

》●》জীনদের নিয়ে কিছু কথা.....new

জ্বিনদের আকৃতি বদলের রহস্য
কাযী আবু ইয়ালা হামবালী (রাহ) বলেনঃ জ্বিন ও শয়তানদের এমন কোন এখতিয়ার নেই যে তারা নিজেদের রূপ বদলাতে পারে এবং অন্যান্য রূপ ধারণ করবে; অবশ্য এ কথা ঠিক যে তাদেরকে আল্লাহ এমন কিছু বিশেষ কথা ও কাজ জানিয়ে দিয়েছেন যার ফলে তারা যখন সেই বিশেষ কথা ও কাজের প্রয়োগ ঘঠায় তখন তারা আল্লাহর ইচ্ছাই এক আকৃতি থেকে অন্য আকৃতিতে বদলে যায়।কিন্তু স্বয়ং নিজে থেকে জ্বিন ও শয়তান নিজেদের আকৃতি বদলানো অসম্ভব।কেননা নিজস্ব আকৃতি থেকে অন্য আকৃতি রূপান্তরিত করা মানে নিজের মূল উপাদান তথা অঙ্গপ্রত্যঙ্গকেও বদলে দেওয়া।এটা তাদের পক্ষে কিভাবে সম্ভব?
কাযী আবু ইয়ালা হাম্বলী আরো বলেন, ফিরিশতাদের বিভিন্ন রূপ ধারণের কেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
• জ্বিনরা কি কি রূপ নিতে পারেঃ
জ্বিনরা বহুরূপী হতে পারে, যেমন মানুষ, চতুষ্পদ পশু, সাপ, বিছে, উট, গরু, ছাগল, ঘোড়া, খচ্চর, গাধা ও বিভিন্ন পশু-পাখি প্রভৃতির আকার ধারণ করতে পারে।
• সাপ ও কুকুররাও এক প্রকার জ্বিন!
সাপ হল এক প্রকার রূপান্তরিত জ্বিন, যেমন বাদর ও শুকরে রূপান্তরিত হয়ছিল বনী-ইসরাইল।তবে জ্বিন সাপ গুলো হয় সাদা।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, কিছু কিছু কুকুররা এক প্রকার জ্বিন এবং এরা খুব দুর্বল জ্বিন।সুতরাং খাওয়ার সময় কোন কুকুর বসে গেলে তাকেও কিছু দেওয়া উচিত নাইলে তারিয়ে দেওয়া দরকার।কেননা তারো একটা প্রবৃত্তি (নফস) আছে।
হযরত আবু ক্বিলাবাহ হতে বর্ণীত, রাসুল (সাঃ) বলেনঃ যদি এই কুকুরগুলা এক প্রকার সৃষ্টিজীব না হত তাহলে এগুলোকে কতল করে দিতাম।কিন্তু কোন মাখলূককে বিলিন করতে আমার ভয় হয়।তবে তোমরা এদের মধ্যে সমস্ত কালো কুকুর গুলোকে মেরে ফেলবে।কারণ এগুলো এক প্রকার শয়তান।
রাসুল আরো বলেন, নামাজীর সামনে দিয়ে কালো কুকুর গেলে নামাজ ভেঙ্গে যায়।সাহাবীরা এ ব্যাপারে আরজ করল যে, "জনাব, লাল ও সাদা কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের কি দোষ?" উত্তরে রাসুল বলল, কালো কুকুর হল এক প্রকার শয়তান।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, জ্বিনরা তিন প্রকার-এক প্রকার জ্বিন হল, সাপ, বিছে, কুকুর ও পোকা-মাকড়।দ্বিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যারা হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়।এবং তিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যাদের পরকালের জন্য হিসাব-নিকাশ ও পুরষ্কার ও আযাব আছে।
আল্লামা সুহাইলী (রাহ) বলেন, শেষ প্রকারের জ্বিনরাই নিজেদের রূপ বদলাতে পারে।
কাযী আবু বকর বাকেলানী (রাহ) বলেন, আমি বলছি যারা জ্বিন দেখেছেন তারা সত্যি দেখেছেন।কেননা আল্লাহ জ্বিনদের দৃশ্যরূপ সৃষ্টি করেন এবং এরা বিভিন্ন আকৃতির ও কোমল দেহ বিশিষ্ট হয়।
• জ্বিন হল আগুনের সৃষ্টি
পবিত্র কোরানে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি আদমের আগে জ্বিনকে সৃষ্টি করি ‘লূ’এর আগুন (অর্থাৎ অত্যন্ত সূক্ষ্ম হওয়ার জন্য অতুষ্ণ বায়ুতে পরিণত হয়েছে এমন আগুন) দিয়ে

জ্বিনজাতি সৃষ্টি হয়ছে যেদিন।
হযরত আবু আলিয়ার বর্ণনাঃ আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেন বুধবার, জ্বিনকে সৃষ্টি করেন বৃহস্পতিবার এবং আদমকে সৃষ্টি করেন শুক্রবার।
=============================
কার আগে কে সৃষ্টি
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলা যার – আগে যাকে সৃষ্টি করেন।
জান্নাতকে - জাহান্নামের আগে
আপন রহমতকে - গযবের আগে
আসমানকে - যমীনের আগে
সূর্য ও চাঁদকে - নক্ষত্রের আগে
দিনকে - রাতের আগে
পানিভাগকে - স্থলভাগের আগে
সমভুমিকে - পাহাড়-পর্বতের আগে
ফিরিশতাদেরকে - জ্বিনদের আগে
জ্বিনজাতিকে - মানবজাতির আগে
এবং
পুরুষ জাতিকে - স্ত্রী জাতির আগে
======================
আদি জ্বিনের আকাংক্ষা
=============
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা আবূল জ্বিন্নাত বা জ্বিন জাতির আদিপিতা “সামূম”কে আগুনের শিখা দিয়ে সৃষ্টি করার পর বলেন,তুমি কিছু কামনা কর।সে বলল, “আমার কামনা হল, আমরা সবাইকে দেখব কিন্তু আমাদের যেন কেউ না দেখে এবং আমাদের বৃদ্ধরা যেন জোয়ান হয়ে মারা যায়।আল্লাহ তার এই কামনা কবুল করলেন তাই জ্বিনরা অদৃশ্য এবং মারা গেলে জোয়ান হয়ে মারা যায়।
==============================
জ্বিনেরা পৃথিবীতে বাস করত মানুষের আগেঃ
==============================
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, জ্বিনেরা পৃথিবীতে এবং ফিরিশ্তারা আসমানে বাস করত।প্রত্যেক আসমানের আলাদা আলাদা ফিরিশতা থাকত এবং আসমানের বাসিন্দাদের জন্য আলাদা আলাদা নামাজ-দোয়া ছিল।মূলত এরাই ছিল আসমান ও জমিনের বাসিন্দা
জ্বিনদের সৃষ্টি আদমের (আঃ) ২০০০ বছর আগে
=========================
ইবলীস পৃথিবীতে বাস করছে যবে থেকে!
=========================
জুওয়াইবির ও উসমান (রাঃ)নিজেদের সনদ সহকারে বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করার পর তাদেরকে পৃথিবীতে বাস করার জন্য নির্দেশ দেন।ওরা পৃথিবীতে আল্লাহর একান্ত অনুগত হয়ে চলতে লাগল।অবশেষে দীর্ঘকাল কেটে যাবার পর, ওরা আল্লাহর অবাধ্যতা শুরু করে দিল এবং খুন খারাবী করতে লাগল।তাদের এক বাদশাহ ছিল, যার নাম ছিল ইউসুফ।
তাকে ও তারা মেরে ফেলল।তকন আল্লাহ তাদের ওপর দ্বিতীয় আসমানের ফেরেশতাদের এক বাহিনী পাঠালেন।তাদের মধ্যে ইবলীসও ছিল।ইবলিস ছিল ৪০০০ জনের সর্দার।সে আসমান থেকে নেমে এসে জমিনের সমস্ত জ্বিন সন্তানদের হত্যা করল এবং বাকিদের মেরে কেটে সমুদ্রের দ্বীপগুলোর দিকে তারিয়ে দিল।তখন ইবলীস তার বাহিনী সমেত এই জমিনেই থাকতে লাগল।তেদের পক্ষে আল্লাহর বিধি-বিদ্বান মেনে চলা খুব সহজ হয় গেল এবং তারা পৃথিবীতে বসবাস করাকে পছন্দ করল।


হিজড়ারা জম্মায় কেমন করে?
---------------------
হযরত ইবনে আব্বাস (রা)বলেন হিজড়ারা জ্বিনদের সন্তান।
কোন এক ব্যাক্তি আব্বাস (রা) কে জিজ্ঞেস করে এমনটা কেমন করে হয়?
উত্তরে তিনি বলেন আল্লাহ ও তার রাসুল (সা) নিষেধ করেছেন যে মানুষ যেন তার স্ত্রীর সাথে মাসিক স্রাব চলাকালিন যৌনসঙ্গম না করে।স্ত্রী লোকের ঋতুস্রাব চলাকালীন যৌন সঙ্গম করলে শয়তান তার আগে আগে থাকে এবং শয়তানের দ্বারা ঔ মহিলা গর্ববতী হয় এবং হিজড়া সন্তান প্রসব করে।
শয়তান জ্বিন মানুষের সন্তানে শরীক হয় যেভাবেঃ হযরত মুজাহিদ (রাহ) বলেন, মানুষ তার স্ত্রীর সাথে যৌনমিলন করার আগে “বিসমিল্লাহ” না পড়লে জ্বিন তার প্রস্রাবের ছিদ্র পথের সাথে জড়িয়ে যায় এবং সেও সেই পুরুষের সাথে যৌনমিলনে অংশ নেই।
এর থেকে বাঁচতে হলে মিলনের আগে এই দুয়া পড়তে হবে, “আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইত্ব-না অজান্নিবাশ শাইত্ব-না মা রাযাকতান”
=============================================
================
জ্বিন শব্দের অর্থ ও পরিচিত
হযরত ইবনে দুরাইদ (রাহ) বলেন জ্বিন হল মানব জাতি হতে আলাদা একটি জাতি বা সৃষ্টি।জ্বিন শব্দের অর্থ গুপ্ত অদৃশ্য বা লোক্কায়িত।
জ্বিন কারাঃ হযরত আবু উমর আয যাহিদ বলেন, জিন্নাত বা জ্বিন জাতির কুকুর বা ইতর শ্রেণীকে বলা হয় জ্বিন।
জ্বান কারাঃ হযরত জাওহরি বলেন, জ্বান হল জ্বিনের আদি পিতা বা আবুল জ্বিন।
শয়তান কারাঃ আল্লামা ইবনে আকিল বলেন, শয়তান হল এক প্রকার জ্বিন যারা আল্লাহর অবাধ্য ইবলীশের বংশধর।
মারাদা কারাঃ আল্লামা আকিলের মতে মারাদা হল, জ্বিন জাতির মধ্যে যারা চরম অবাধ্য।
জ্বিন জাতির শ্রেণী বিভাগঃ
১-জ্বিনঃ অর্থাৎ সাধারণ জ্বিন
২-আমিরঃ (বহু বচনে উম্মার) যারা মানুষের সাথে থাকে
৩-আরওয়াহ যারা মানুষের সামনে আসে
৪-শয়তানঃ উদ্ধত অবাধ্য
৫-ইফরীত্ব যা শয়তানের চেয়েও বিপদ জনক


• সাবার রাণী [সুলাইমান (আঃ)-এর বিবি] বিলকিসের মা ছিল জ্বিন।
*******************************************
কথিত আছেঃ বিলকিসের মা-বাপের মধ্যে একজন ছিল জ্বিন। ইবনুল কালবী বলেন, বিলকিসের বাপ জ্বিনদের মেয়েকে বিয়ে করে ছিল। যার নাম ছিল, “রেহান বিন্তে সুকুন” এরই গর্ভে বিলকিসের জন্ম হয়। এর নাম রাখাআ হয় ‘বিলকিমাহ’। বর্ণীত আছে যে বিলকিসের পায়ের সামনে ছিল চতুষ্পদ জন্তুর খুরের মত এবং তার গোরালীতে লোম ও ছিল। হযরত সুলাইমান (আঃ) তাকে বিয়ে করেছিল এবং শয়তানদের নির্দেশ দিয়েছিল, তোমরা গোসল খানা এবং লোম-বিন্নাশক পাউডার বানাও।
আবু হুরাইরা হতে বর্ণীত রাসুল (সাঃ) বলেন, বিলকিস-এর পিতা-মাতা’র মধ্যে একজন ছিল জ্বিন।
• জ্বিনদের বিয়ে-শাদী ও বংশধারা
********************
কোরআন থেকে প্রমাণ
“ইতোপুর্বে ও (অনত-নয়না স্বর্গ সুন্দরী, হুর)-দের কাছে না কোন মানুষ গিয়েছে না কোন জ্বিন। (আর রাহমান) এই আয়াত থেকে বুঝা গেল যে, জ্বিনরা যৌনমিলনও করে।
জ্বিনদের জন্মহার অনেক বেশী।
==================
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহ মানব জাতি ও জ্বিন জাতকে ১০ ভাগে ভাগ করেছেন। তার মধ্যে ৯ ভাগ জ্বিন এক ভাগ মানুষ। যখন একটি মানব শিশু জন্মায় তখন জ্বিনদের ৯ টা বাচ্চা হয়।
জ্বিনদের সাথে মানুষের বিয়ে
=================
জ্বিনের সাথে মানুষের বিয়ে হওয়া সম্ভব। তবে মাকরূহ। ইমাম সাঅলাবী (রাহঃ) বলেন, মানুষের ধারণা, বিয়ে এবং গর্ভ হওয়া মানুষ ও জ্বিন উভয়ের মধ্যে হতে পারে। পবিত্র কোরআনে বলা আছে, (আল্লাহ শয়তান কে উদ্দেশ্য করে বলেন ) তুই মানুষের সম্পদে ও সন্তানে শরীক হয় যা। (সুরা বনী ঈসরাইল)।
জ্বিন মানুষের সহজাত মিলনে সন্তানের নাম কী? “জ্বিন ও মানুষের মিলনে যে সন্তান হয় তার নাম ‘খুন্নাস’।“
• জ্বিন মানুষের মিলনে ছেলে হওয়ার ঘটনা (এ কোন বানোয়াট কাহিনী নয় হাদিস শুনাচ্ছি )।
=============================================
========
হযরত আবূ সাইদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি হযরত আলীর সাথে নাহরোয়ানে হুদুদিয়াদের হত্যাকার্যে সামিল হলাম। আলী (রাঃ) আমার কাছে ‘তালীদ’কে সন্ধান করলেন কিন্তু তাকে পেলাম না। তখন তিনি বললেন, তাকে খুঁজ। পরে তিনি নিজে তাকে খুজে বের করলেন।তারপর বললেন, “কে একে জান?” উপস্থিত ব্যক্তির মধ্যে একজন বলল, একে আমি জানি। এ “কাউস”। এর মা’ও আছেন। আলী তার মা’র কাছে একজন দূত পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এর বাপ কে? সে বলল, ‘আমি জানিনা, তবে এটুকু জানি যে, আমি অজ্ঞাতার যুগে আপন সম্প্রদায়ের বকরী-পাল চরাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার কাছে এক ছায়া মুর্তি এসে আমার সাথে যৌন-মিলন করে, যার দ্বারা আমার গর্ভ হয়। এ হল সেই গর্ভের সন্তান।

প্রত্যেক মুসলমানের ঘর-বাড়ির ছাদে মুসুলমান জ্বিন বাস করে
ইয়াজীদ বিন জাবির (তাবেঈ) বলেছেন, সকল মুসলমানের ঘরের ছাদে মুসলমান জ্বিনরা বসবাস করে। যখন বাড়ির মানুষদের জন্য খাবার তৈরী করে রাখা হয় তখন সংশ্লিষ্ট বাড়ির জ্বিনরা নেমে এসে তাদের সাথে আহার করে এবং যখন বাড়ির লোকদের রাতের খাবার দেওয়া হয় তখনও তারা নেমে এসে তাদের সাথে খাবারে শরিক হয়। এসব জ্বিনের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের খারাপ জ্বিন থেকে রক্ষা করেন।
• জ্বিনরা কী খায়
হযরত ওয়াহাব বিন মুনাব্বিহ (রাহঃ) বলেন, জ্বিন কয়েক প্রকার। এক প্রকার জ্বিন হল হাওয়া (হাওয়ায় মিশে থাকে)। ওরা খাওয়া-দাওয়া, বিয়ে-শাদী কিছুই করেনা এবং মারাও যায়না তাদের বাচ্চাও হয়না। আর এক প্রকার আছে যারা খাওয়া দাওয়া, বিয়ে-শাদী করে এবং মারা ও যায়।
হযরত আলকামাহ (রাহঃ) বলেছেন, আমি হযরত মাসউদ (রা)-কে নিবেদন করি, আপনাদের মধ্যে কেউ ‘লাইলাতুল জ্বিন’ (অর্থাৎ জ্বিনের রাত)-এ রাসুল (সাঃ)-এর সাথে ছিলেন কি?
উনি বললেন, ‘না’।কিন্ত এক রাতে আমরা তাকে মক্কায় অনুপস্থিত পেলাম। আমরা বললাম, হয়ত নবীজীকে কাফিররা ধরে ফেলেছে এবং তাকে গুম করে ফেলেছে। আমাদের ওই রাতটা খুব খারাপ অবস্থায় গেল। যখন সকাল হল, দেখা গেল নবীজী হেরা পর্বত হতে আস্তেছে। তারপর আমরা আমাদের গত রাতের উদ্বেগের কথা জানালাম। তিনি বললেন, একটি জ্বিন এসে আমাকে দাওয়াত দিয়েছিল, তাই আমি তাদের সাথে গিয়েছিলাম এবং তাদের কোরান পড়ে শুনালাম। এরপর নবীজী আমাদের নিয়ে গেলেন এবং জ্বিনদের নিদর্শন দেখালেন। ওদের আগুনের চিহ্ন দেখালেন। ওই জ্বিনরা হুজুরের কাছে সফরের সামান (বা পাথেয়) চাই। কেননা তারা ছিল এক দ্বীপের জ্বিন। তখন নবীজী তাদের বললেন, তোমাদের খাদ্য এমন সব হাড় যার প্রতি আল্লাহর নাম নেওয়া হয়ছে।
রাসুল (সাঃ) আরো বলেন, তোমরা এই দু’টো জিনিষ (হাড় ও গোবর) দিয়ে এস্তেঞ্জা করোনা। কেননা এগুলো হলো তোমাদের জ্বিন ভাইদের খোরাক।
জৈনক জ্বিনের আবেদন,
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি একবার রাসুলের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তার কাছে এক সাপ এল এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে গেল। আমি তাকে নবীজীর আরো কাছে করে দিলাম। সে রাসুলের পবিত্র কানের কাছে গিয়ে চুপিচুপি কিছু বলল। নবীজী বললেন ঠিক আছে। তারপর সাপটি চলে গেল। তখন ব্যাপারটি আমি জানতে চাইলে, হুজুর বলেন, সে ছিল জ্বিন। সে আমাকে বলে গেল, “আপনি আপনার উম্মতদের বলেদেন যে তারা যেন গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেঞ্জা না করে কেননা আল্লাহ ওই দু’টো জিনিষে আমাদের জন্য আহার্য রেখেছেন”।
• শয়তান খানা-পিনা করে বাম হাতে।
হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণীত, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আহার করে তারা যেন ডান হাত দিয়ে আহার করে এবং পান করার সময় ডান হাত দিয়ে পান করে, কেননা শয়তান বাম হাত দিয়ে আহার ও পান করে।
হুযাইফা (রাঃ) বলেন, রাসুল এর সঙ্গে যখন কোন খানার মজলিসে হাজির হতাম তখন তিনি শুরু করার আগে আমরা শুরু করতাম না। একবারের ঘটনা, আমারা খাওয়ার মজলিসে হাজীর আছি এমন সময় এক বেদুঈন এল। যেন তাকে কেউ খাবারের দিকে তারিয়ে এনেছে। সে এসে খাবারের দিকে হাত বাড়াল। নবীজী তার হাত ধরে ফেললেন এবং তাকে বসিয়ে দিল। তারপর একটি মেয়ে আসল তাকেও যেন কেউ হাকিয়ে এনেছে। মেয়েটিও এসে খাবারে হাত দিল এবং তার হাত ও ধরে ফেললেন হুজুর। তার পর তিনি বলেন, যে খাবারে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়না শয়তান সেই খাবার তার জন্য হালাল করে নেই। শয়তান এই বেদুঈনের সাথে খেতে এসেছিল আমি তার হাত ধরে ফেললাম তাই সে ওই মেয়েটির সাথে এল এবং এদের মাধ্যমে খাবারে ভাগ বসাতে চাইল। এর হাতও আমি ধরে ফেললাম। যার আয়ত্বে আমার জীবন সেই সত্তার কসম! এই দুজনের সাথে শয়তানের হাত ও (এখন) আমার মুঠোর মধ্যে।
হযরত আবু হুরাইরা বর্ণনা করেন, হুজুর ( সাঃ) বলেছেন, শয়তান তোমাদের সাথে সকল সময় সকল অবস্থায় বিদ্যমান থাকে, এমনকি খাওয়ার সময়ও। তাই তোমাদের মধ্যে খাদ্যের গ্রাস পড়ে গেলে তার ময়লা সাফ করে যেন তা খেয়ে নেই, যেন শয়তানের জন্য ছেড়ে না দেয়।
হযরত জাবির (রাঃ) শুনেছেন যে, হুজুর (সঃ) বলেন, যখন কোন মানুষ নিজের বাড়িতে প্রবেশ করার সময় এবং খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে, তখন শয়তান (অন্যান্য শয়তানের উদ্দেশে) বলে, তোমাদের জন্য এখানে থাকা খাওয়ার জন্য কোন অবকাশ নেই। কিন্তু কোন মানুষ যদি ঘরে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর নাম না নেই। তাহলে শয়তান বলে তোমরা জন্য রাতে থাকার ও সাঁঝে খাওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলে।

বর্ণনায় আকিল (রাহঃ)। আমাদের একটি বাড়ি ছিল। তাতে যখনি কোন লোক থাকত, সকালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যেত। একবার এক মরক্কোর লোক এল। ঘরটি তার পছন্দ হল এবং সে ভাড়া নিল। তারপর রাত কাটাল এবং সকালে দেখা গেল সে পুরোপুরি সুস্থ। তার কিছুই হয়নি। তা দেখে প্রতিবেশীরা অভাক। লোকটি বেশ কিছুকাল ছিল তারপর অন্যত্র চলে গেল। তাকে ওই ঘরের নিরাপদ থাকার কথা জিজ্ঞেস করা হলে সে বলল, আমি যখন সেই ঘরে থাকি তখন (প্রথম রাতে) ইশার নামাজ পড়েছি এবং কোরআন থেকে কিছু পড়েছি। তারপর দেখি এক যুবক কূপ থেকে উপরে উঠতেছে। সে আমাকে সালাম দিল। আমি তাকে দেখে ভয় পেলাম। সে বল, ভয় পেওনা আমাকেও কিছু কোরান পাঠ শেখাও। তারপর তাকে আমি কোরান শেখাই এবং জিজ্ঞেস করি এই ঘরের রহস্য কি? সে বলল, আমরা মুসলমান জ্বিন। আমরা কোরান পাঠও করি এবং নামাযও পড়ি। কিন্তু এই ঘরে বেশীর ভাগ সময় বদমাশ লোকেরা থাকে এবং মদের আসর বসায়। তাই আমরা তাদের গলা টিপে দিয়। আমি তাকে বললাম, তোমাকে আমি রাতে ভয় পায় তাই তুমি দিনের বেলায় এসো। সে বলল, খুব ভাল। তারপর থেকে সে দিনের বেলায় কুপ থেকে আসত। একবার সে কোরান পাঠ করতেছিল এমন সময় বাইরে এক ওঝা আসল এবং বলতেছে, “আমি সাপে কাটা, বদ নজর লাগা এবং জ্বিনে ধরা রোগের ঝাঁড়-ফোঁক করি”। তার কথা শুনে জ্বিনটি বলল, “সে কে?”। আমি বললাম ও হল ওঝা ঝাঁড়-ফোঁক করে। সে বলল তাকে ডাক। আমি উঠে তাকে ডেকে আনলাম। এসে দেখি, সে জ্বিনটি এক বিরাট সাপ হয়ে ঘরের ভিতরের ছাদে উঠে গেল। ওঝা এসে ঝাঁড়-ফুঁক করতেই সে ঝটপট করতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত ঘরের মেঝেই পড়ে গেল। তখন ওঝা তাকে ধরে ঝাঁপিতে ভরতে গেল আমি মানা করলাম। সে বলল, ‘তুমি আমাকে আমার শিকার ধরার কাজে বাধা দিচ্ছ’ তখন আমি তাকে একটা স্বর্ণ মুদ্রা দিলাম সে চলে গেল। তারপর সে অজগর নড়া-ছড়া করল এবং জ্বিন রূপে প্রকাশ ঘটল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কি হয়ছে? জ্বিন বলল, আমাকে ওই ওঝা পাক ইসমের মাধ্যমে শেষ করে ফেলেছে। আমি বাঁচব বলে আর বিশ্বাস হচ্ছেনা। যদি তুমি এই কুপ থেকে কোন চিৎকারের শব্দ শুনতে পাও তবে চলে যেও। সেই রাতে আমি এক আওয়াজ শুনতে পেলাম যে, “তুমি দূরে চলে যাও”। এরপর থেকে ওই ঘরে আর কেউ থাকত না।
আর এক সুন্দরী জ্বিন স্ত্রীর ঘটনা।
=======================
বর্ণনায় আল্লামা বাদরুদ্দীন শিবলী (রাহঃ)। জনাব কাযীউল ক্বযযাহ জালালুদ্দিন আহমেদ বিন ক্বাযীউল ক্বযযাহ হিসামুদ্দিন কাযী হানাফী বলেন, আমার পিতা আমাকে পরিবার পরিজন-বর্গকে প্রাচ্য হতে আনার জন্য সফরে পাঠান। যখন আমি বীরাহ নামক স্থান পার হলাম, বৃষ্টি আমাদের এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। আমি এক যাত্রী দলের সাথে ছিলাম। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি কেউ আমাকে জাগাচ্ছে। জেগে দেখি আমার কাছে মাঝারি উচ্ছতার এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তার চোখ ছিল একটা লম্বা-লম্বি ফাটলের মত। সে বলল তুমি ভয় পেওনা। আমি তোমার কাছে আমার চাঁদের মত মেয়েকে বিয়ে দিতে এসেছি। আমি ঘাবড়ে গিয়ে বললাম আল্লাহ ভালো করুন। তারপর দেখলাম কিছু মানুষ আমার দিকে আসছে। তাদের আকৃতিও ওই মহিলার মত। তাদের চোখেও লম্বা ফাটল আছে। তাদের সাথে এক কাযীও ছিল এবং সাক্ষীও। সুতরাং কাযী বিয়ের পয়গাম দিল এবং বিয়েও পড়িয়ে দিল যা আমি বাধ্য হয়ে কবুল করলাম। এবং ওরা যখন চলে গেল, তারপর মহিলা আমার কাছে আসল। এবার তার সাথে এক সুন্দরী মেয়েও ছিল। তার চোখও ছিল তার মায়ের মত ভয়ঙ্কর। মেয়েটির মা মেয়েকে আমার কাছে রেখে চলে গেল। তারপর আমার ভয় আরো বেড়ে গেল। আমি আমার সঙ্গীদের জাগাতে কাঁকর ছুঁড়ে মারলাম। কিন্তু উদের কেউ উঠল না। তখন অনুনয়-বিনয় করে আল্লাহর কাছে দুয়া করতে লাগলাম। পরে ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ার সময় এল। আমরা রওনা দিলাম কিন্তু মেয়েটি আমাকে ছাড়ল না। এই অবস্থায় তিন-দিন কেটে গেল। চারদিনের মাথায় মেয়ের মা এল এবং বলল, “সম্ভবত এই মেয়েকে তোমার পছন্দ হয়নি। তুমি মনে হয় এর থেকে বিচ্ছেদ চাইছ”। আমি বললাম, হ্যা আল্লাহর কসম। সে বলল, তবে একে তালাক দাও। আমি তাকে তালাক দিলে সে চলে গেল। পরে আমি তাকে আর কখনো দেখিনি।

Back to posts
Comments:

Post a comment

» Join Our Facebook Group
» Join Our Page
» Our School's Website
⚽Sports Update🎾
Tags: mzs, Quran

》●》জীনদের নিয়ে কিছু কথা.....new

জ্বিনদের আকৃতি বদলের রহস্য
কাযী আবু ইয়ালা হামবালী (রাহ) বলেনঃ জ্বিন ও শয়তানদের এমন কোন এখতিয়ার নেই যে তারা নিজেদের রূপ বদলাতে পারে এবং অন্যান্য রূপ ধারণ করবে; অবশ্য এ কথা ঠিক যে তাদেরকে আল্লাহ এমন কিছু বিশেষ কথা ও কাজ জানিয়ে দিয়েছেন যার ফলে তারা যখন সেই বিশেষ কথা ও কাজের প্রয়োগ ঘঠায় তখন তারা আল্লাহর ইচ্ছাই এক আকৃতি থেকে অন্য আকৃতিতে বদলে যায়।কিন্তু স্বয়ং নিজে থেকে জ্বিন ও শয়তান নিজেদের আকৃতি বদলানো অসম্ভব।কেননা নিজস্ব আকৃতি থেকে অন্য আকৃতি রূপান্তরিত করা মানে নিজের মূল উপাদান তথা অঙ্গপ্রত্যঙ্গকেও বদলে দেওয়া।এটা তাদের পক্ষে কিভাবে সম্ভব?
কাযী আবু ইয়ালা হাম্বলী আরো বলেন, ফিরিশতাদের বিভিন্ন রূপ ধারণের কেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
• জ্বিনরা কি কি রূপ নিতে পারেঃ
জ্বিনরা বহুরূপী হতে পারে, যেমন মানুষ, চতুষ্পদ পশু, সাপ, বিছে, উট, গরু, ছাগল, ঘোড়া, খচ্চর, গাধা ও বিভিন্ন পশু-পাখি প্রভৃতির আকার ধারণ করতে পারে।
• সাপ ও কুকুররাও এক প্রকার জ্বিন!
সাপ হল এক প্রকার রূপান্তরিত জ্বিন, যেমন বাদর ও শুকরে রূপান্তরিত হয়ছিল বনী-ইসরাইল।তবে জ্বিন সাপ গুলো হয় সাদা।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, কিছু কিছু কুকুররা এক প্রকার জ্বিন এবং এরা খুব দুর্বল জ্বিন।সুতরাং খাওয়ার সময় কোন কুকুর বসে গেলে তাকেও কিছু দেওয়া উচিত নাইলে তারিয়ে দেওয়া দরকার।কেননা তারো একটা প্রবৃত্তি (নফস) আছে।
হযরত আবু ক্বিলাবাহ হতে বর্ণীত, রাসুল (সাঃ) বলেনঃ যদি এই কুকুরগুলা এক প্রকার সৃষ্টিজীব না হত তাহলে এগুলোকে কতল করে দিতাম।কিন্তু কোন মাখলূককে বিলিন করতে আমার ভয় হয়।তবে তোমরা এদের মধ্যে সমস্ত কালো কুকুর গুলোকে মেরে ফেলবে।কারণ এগুলো এক প্রকার শয়তান।
রাসুল আরো বলেন, নামাজীর সামনে দিয়ে কালো কুকুর গেলে নামাজ ভেঙ্গে যায়।সাহাবীরা এ ব্যাপারে আরজ করল যে, "জনাব, লাল ও সাদা কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের কি দোষ?" উত্তরে রাসুল বলল, কালো কুকুর হল এক প্রকার শয়তান।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, জ্বিনরা তিন প্রকার-এক প্রকার জ্বিন হল, সাপ, বিছে, কুকুর ও পোকা-মাকড়।দ্বিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যারা হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়।এবং তিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যাদের পরকালের জন্য হিসাব-নিকাশ ও পুরষ্কার ও আযাব আছে।
আল্লামা সুহাইলী (রাহ) বলেন, শেষ প্রকারের জ্বিনরাই নিজেদের রূপ বদলাতে পারে।
কাযী আবু বকর বাকেলানী (রাহ) বলেন, আমি বলছি যারা জ্বিন দেখেছেন তারা সত্যি দেখেছেন।কেননা আল্লাহ জ্বিনদের দৃশ্যরূপ সৃষ্টি করেন এবং এরা বিভিন্ন আকৃতির ও কোমল দেহ বিশিষ্ট হয়।
• জ্বিন হল আগুনের সৃষ্টি
পবিত্র কোরানে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি আদমের আগে জ্বিনকে সৃষ্টি করি ‘লূ’এর আগুন (অর্থাৎ অত্যন্ত সূক্ষ্ম হওয়ার জন্য অতুষ্ণ বায়ুতে পরিণত হয়েছে এমন আগুন) দিয়ে

জ্বিনজাতি সৃষ্টি হয়ছে যেদিন।
হযরত আবু আলিয়ার বর্ণনাঃ আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেন বুধবার, জ্বিনকে সৃষ্টি করেন বৃহস্পতিবার এবং আদমকে সৃষ্টি করেন শুক্রবার।
=============================
কার আগে কে সৃষ্টি
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলা যার – আগে যাকে সৃষ্টি করেন।
জান্নাতকে - জাহান্নামের আগে
আপন রহমতকে - গযবের আগে
আসমানকে - যমীনের আগে
সূর্য ও চাঁদকে - নক্ষত্রের আগে
দিনকে - রাতের আগে
পানিভাগকে - স্থলভাগের আগে
সমভুমিকে - পাহাড়-পর্বতের আগে
ফিরিশতাদেরকে - জ্বিনদের আগে
জ্বিনজাতিকে - মানবজাতির আগে
এবং
পুরুষ জাতিকে - স্ত্রী জাতির আগে
======================
আদি জ্বিনের আকাংক্ষা
=============
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা আবূল জ্বিন্নাত বা জ্বিন জাতির আদিপিতা “সামূম”কে আগুনের শিখা দিয়ে সৃষ্টি করার পর বলেন,তুমি কিছু কামনা কর।সে বলল, “আমার কামনা হল, আমরা সবাইকে দেখব কিন্তু আমাদের যেন কেউ না দেখে এবং আমাদের বৃদ্ধরা যেন জোয়ান হয়ে মারা যায়।আল্লাহ তার এই কামনা কবুল করলেন তাই জ্বিনরা অদৃশ্য এবং মারা গেলে জোয়ান হয়ে মারা যায়।
==============================
জ্বিনেরা পৃথিবীতে বাস করত মানুষের আগেঃ
==============================
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, জ্বিনেরা পৃথিবীতে এবং ফিরিশ্তারা আসমানে বাস করত।প্রত্যেক আসমানের আলাদা আলাদা ফিরিশতা থাকত এবং আসমানের বাসিন্দাদের জন্য আলাদা আলাদা নামাজ-দোয়া ছিল।মূলত এরাই ছিল আসমান ও জমিনের বাসিন্দা
জ্বিনদের সৃষ্টি আদমের (আঃ) ২০০০ বছর আগে
=========================
ইবলীস পৃথিবীতে বাস করছে যবে থেকে!
=========================
জুওয়াইবির ও উসমান (রাঃ)নিজেদের সনদ সহকারে বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করার পর তাদেরকে পৃথিবীতে বাস করার জন্য নির্দেশ দেন।ওরা পৃথিবীতে আল্লাহর একান্ত অনুগত হয়ে চলতে লাগল।অবশেষে দীর্ঘকাল কেটে যাবার পর, ওরা আল্লাহর অবাধ্যতা শুরু করে দিল এবং খুন খারাবী করতে লাগল।তাদের এক বাদশাহ ছিল, যার নাম ছিল ইউসুফ।
তাকে ও তারা মেরে ফেলল।তকন আল্লাহ তাদের ওপর দ্বিতীয় আসমানের ফেরেশতাদের এক বাহিনী পাঠালেন।তাদের মধ্যে ইবলীসও ছিল।ইবলিস ছিল ৪০০০ জনের সর্দার।সে আসমান থেকে নেমে এসে জমিনের সমস্ত জ্বিন সন্তানদের হত্যা করল এবং বাকিদের মেরে কেটে সমুদ্রের দ্বীপগুলোর দিকে তারিয়ে দিল।তখন ইবলীস তার বাহিনী সমেত এই জমিনেই থাকতে লাগল।তেদের পক্ষে আল্লাহর বিধি-বিদ্বান মেনে চলা খুব সহজ হয় গেল এবং তারা পৃথিবীতে বসবাস করাকে পছন্দ করল।


হিজড়ারা জম্মায় কেমন করে?
---------------------
হযরত ইবনে আব্বাস (রা)বলেন হিজড়ারা জ্বিনদের সন্তান।
কোন এক ব্যাক্তি আব্বাস (রা) কে জিজ্ঞেস করে এমনটা কেমন করে হয়?
উত্তরে তিনি বলেন আল্লাহ ও তার রাসুল (সা) নিষেধ করেছেন যে মানুষ যেন তার স্ত্রীর সাথে মাসিক স্রাব চলাকালিন যৌনসঙ্গম না করে।স্ত্রী লোকের ঋতুস্রাব চলাকালীন যৌন সঙ্গম করলে শয়তান তার আগে আগে থাকে এবং শয়তানের দ্বারা ঔ মহিলা গর্ববতী হয় এবং হিজড়া সন্তান প্রসব করে।
শয়তান জ্বিন মানুষের সন্তানে শরীক হয় যেভাবেঃ হযরত মুজাহিদ (রাহ) বলেন, মানুষ তার স্ত্রীর সাথে যৌনমিলন করার আগে “বিসমিল্লাহ” না পড়লে জ্বিন তার প্রস্রাবের ছিদ্র পথের সাথে জড়িয়ে যায় এবং সেও সেই পুরুষের সাথে যৌনমিলনে অংশ নেই।
এর থেকে বাঁচতে হলে মিলনের আগে এই দুয়া পড়তে হবে, “আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইত্ব-না অজান্নিবাশ শাইত্ব-না মা রাযাকতান”
=============================================
================
জ্বিন শব্দের অর্থ ও পরিচিত
হযরত ইবনে দুরাইদ (রাহ) বলেন জ্বিন হল মানব জাতি হতে আলাদা একটি জাতি বা সৃষ্টি।জ্বিন শব্দের অর্থ গুপ্ত অদৃশ্য বা লোক্কায়িত।
জ্বিন কারাঃ হযরত আবু উমর আয যাহিদ বলেন, জিন্নাত বা জ্বিন জাতির কুকুর বা ইতর শ্রেণীকে বলা হয় জ্বিন।
জ্বান কারাঃ হযরত জাওহরি বলেন, জ্বান হল জ্বিনের আদি পিতা বা আবুল জ্বিন।
শয়তান কারাঃ আল্লামা ইবনে আকিল বলেন, শয়তান হল এক প্রকার জ্বিন যারা আল্লাহর অবাধ্য ইবলীশের বংশধর।
মারাদা কারাঃ আল্লামা আকিলের মতে মারাদা হল, জ্বিন জাতির মধ্যে যারা চরম অবাধ্য।
জ্বিন জাতির শ্রেণী বিভাগঃ
১-জ্বিনঃ অর্থাৎ সাধারণ জ্বিন
২-আমিরঃ (বহু বচনে উম্মার) যারা মানুষের সাথে থাকে
৩-আরওয়াহ যারা মানুষের সামনে আসে
৪-শয়তানঃ উদ্ধত অবাধ্য
৫-ইফরীত্ব যা শয়তানের চেয়েও বিপদ জনক


• সাবার রাণী [সুলাইমান (আঃ)-এর বিবি] বিলকিসের মা ছিল জ্বিন।
*******************************************
কথিত আছেঃ বিলকিসের মা-বাপের মধ্যে একজন ছিল জ্বিন। ইবনুল কালবী বলেন, বিলকিসের বাপ জ্বিনদের মেয়েকে বিয়ে করে ছিল। যার নাম ছিল, “রেহান বিন্তে সুকুন” এরই গর্ভে বিলকিসের জন্ম হয়। এর নাম রাখাআ হয় ‘বিলকিমাহ’। বর্ণীত আছে যে বিলকিসের পায়ের সামনে ছিল চতুষ্পদ জন্তুর খুরের মত এবং তার গোরালীতে লোম ও ছিল। হযরত সুলাইমান (আঃ) তাকে বিয়ে করেছিল এবং শয়তানদের নির্দেশ দিয়েছিল, তোমরা গোসল খানা এবং লোম-বিন্নাশক পাউডার বানাও।
আবু হুরাইরা হতে বর্ণীত রাসুল (সাঃ) বলেন, বিলকিস-এর পিতা-মাতা’র মধ্যে একজন ছিল জ্বিন।
• জ্বিনদের বিয়ে-শাদী ও বংশধারা
********************
কোরআন থেকে প্রমাণ
“ইতোপুর্বে ও (অনত-নয়না স্বর্গ সুন্দরী, হুর)-দের কাছে না কোন মানুষ গিয়েছে না কোন জ্বিন। (আর রাহমান) এই আয়াত থেকে বুঝা গেল যে, জ্বিনরা যৌনমিলনও করে।
জ্বিনদের জন্মহার অনেক বেশী।
==================
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহ মানব জাতি ও জ্বিন জাতকে ১০ ভাগে ভাগ করেছেন। তার মধ্যে ৯ ভাগ জ্বিন এক ভাগ মানুষ। যখন একটি মানব শিশু জন্মায় তখন জ্বিনদের ৯ টা বাচ্চা হয়।
জ্বিনদের সাথে মানুষের বিয়ে
=================
জ্বিনের সাথে মানুষের বিয়ে হওয়া সম্ভব। তবে মাকরূহ। ইমাম সাঅলাবী (রাহঃ) বলেন, মানুষের ধারণা, বিয়ে এবং গর্ভ হওয়া মানুষ ও জ্বিন উভয়ের মধ্যে হতে পারে। পবিত্র কোরআনে বলা আছে, (আল্লাহ শয়তান কে উদ্দেশ্য করে বলেন ) তুই মানুষের সম্পদে ও সন্তানে শরীক হয় যা। (সুরা বনী ঈসরাইল)।
জ্বিন মানুষের সহজাত মিলনে সন্তানের নাম কী? “জ্বিন ও মানুষের মিলনে যে সন্তান হয় তার নাম ‘খুন্নাস’।“
• জ্বিন মানুষের মিলনে ছেলে হওয়ার ঘটনা (এ কোন বানোয়াট কাহিনী নয় হাদিস শুনাচ্ছি )।
=============================================
========
হযরত আবূ সাইদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি হযরত আলীর সাথে নাহরোয়ানে হুদুদিয়াদের হত্যাকার্যে সামিল হলাম। আলী (রাঃ) আমার কাছে ‘তালীদ’কে সন্ধান করলেন কিন্তু তাকে পেলাম না। তখন তিনি বললেন, তাকে খুঁজ। পরে তিনি নিজে তাকে খুজে বের করলেন।তারপর বললেন, “কে একে জান?” উপস্থিত ব্যক্তির মধ্যে একজন বলল, একে আমি জানি। এ “কাউস”। এর মা’ও আছেন। আলী তার মা’র কাছে একজন দূত পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এর বাপ কে? সে বলল, ‘আমি জানিনা, তবে এটুকু জানি যে, আমি অজ্ঞাতার যুগে আপন সম্প্রদায়ের বকরী-পাল চরাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার কাছে এক ছায়া মুর্তি এসে আমার সাথে যৌন-মিলন করে, যার দ্বারা আমার গর্ভ হয়। এ হল সেই গর্ভের সন্তান।

প্রত্যেক মুসলমানের ঘর-বাড়ির ছাদে মুসুলমান জ্বিন বাস করে
ইয়াজীদ বিন জাবির (তাবেঈ) বলেছেন, সকল মুসলমানের ঘরের ছাদে মুসলমান জ্বিনরা বসবাস করে। যখন বাড়ির মানুষদের জন্য খাবার তৈরী করে রাখা হয় তখন সংশ্লিষ্ট বাড়ির জ্বিনরা নেমে এসে তাদের সাথে আহার করে এবং যখন বাড়ির লোকদের রাতের খাবার দেওয়া হয় তখনও তারা নেমে এসে তাদের সাথে খাবারে শরিক হয়। এসব জ্বিনের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের খারাপ জ্বিন থেকে রক্ষা করেন।
• জ্বিনরা কী খায়
হযরত ওয়াহাব বিন মুনাব্বিহ (রাহঃ) বলেন, জ্বিন কয়েক প্রকার। এক প্রকার জ্বিন হল হাওয়া (হাওয়ায় মিশে থাকে)। ওরা খাওয়া-দাওয়া, বিয়ে-শাদী কিছুই করেনা এবং মারাও যায়না তাদের বাচ্চাও হয়না। আর এক প্রকার আছে যারা খাওয়া দাওয়া, বিয়ে-শাদী করে এবং মারা ও যায়।
হযরত আলকামাহ (রাহঃ) বলেছেন, আমি হযরত মাসউদ (রা)-কে নিবেদন করি, আপনাদের মধ্যে কেউ ‘লাইলাতুল জ্বিন’ (অর্থাৎ জ্বিনের রাত)-এ রাসুল (সাঃ)-এর সাথে ছিলেন কি?
উনি বললেন, ‘না’।কিন্ত এক রাতে আমরা তাকে মক্কায় অনুপস্থিত পেলাম। আমরা বললাম, হয়ত নবীজীকে কাফিররা ধরে ফেলেছে এবং তাকে গুম করে ফেলেছে। আমাদের ওই রাতটা খুব খারাপ অবস্থায় গেল। যখন সকাল হল, দেখা গেল নবীজী হেরা পর্বত হতে আস্তেছে। তারপর আমরা আমাদের গত রাতের উদ্বেগের কথা জানালাম। তিনি বললেন, একটি জ্বিন এসে আমাকে দাওয়াত দিয়েছিল, তাই আমি তাদের সাথে গিয়েছিলাম এবং তাদের কোরান পড়ে শুনালাম। এরপর নবীজী আমাদের নিয়ে গেলেন এবং জ্বিনদের নিদর্শন দেখালেন। ওদের আগুনের চিহ্ন দেখালেন। ওই জ্বিনরা হুজুরের কাছে সফরের সামান (বা পাথেয়) চাই। কেননা তারা ছিল এক দ্বীপের জ্বিন। তখন নবীজী তাদের বললেন, তোমাদের খাদ্য এমন সব হাড় যার প্রতি আল্লাহর নাম নেওয়া হয়ছে।
রাসুল (সাঃ) আরো বলেন, তোমরা এই দু’টো জিনিষ (হাড় ও গোবর) দিয়ে এস্তেঞ্জা করোনা। কেননা এগুলো হলো তোমাদের জ্বিন ভাইদের খোরাক।
জৈনক জ্বিনের আবেদন,
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি একবার রাসুলের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তার কাছে এক সাপ এল এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে গেল। আমি তাকে নবীজীর আরো কাছে করে দিলাম। সে রাসুলের পবিত্র কানের কাছে গিয়ে চুপিচুপি কিছু বলল। নবীজী বললেন ঠিক আছে। তারপর সাপটি চলে গেল। তখন ব্যাপারটি আমি জানতে চাইলে, হুজুর বলেন, সে ছিল জ্বিন। সে আমাকে বলে গেল, “আপনি আপনার উম্মতদের বলেদেন যে তারা যেন গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেঞ্জা না করে কেননা আল্লাহ ওই দু’টো জিনিষে আমাদের জন্য আহার্য রেখেছেন”।
• শয়তান খানা-পিনা করে বাম হাতে।
হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণীত, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আহার করে তারা যেন ডান হাত দিয়ে আহার করে এবং পান করার সময় ডান হাত দিয়ে পান করে, কেননা শয়তান বাম হাত দিয়ে আহার ও পান করে।
হুযাইফা (রাঃ) বলেন, রাসুল এর সঙ্গে যখন কোন খানার মজলিসে হাজির হতাম তখন তিনি শুরু করার আগে আমরা শুরু করতাম না। একবারের ঘটনা, আমারা খাওয়ার মজলিসে হাজীর আছি এমন সময় এক বেদুঈন এল। যেন তাকে কেউ খাবারের দিকে তারিয়ে এনেছে। সে এসে খাবারের দিকে হাত বাড়াল। নবীজী তার হাত ধরে ফেললেন এবং তাকে বসিয়ে দিল। তারপর একটি মেয়ে আসল তাকেও যেন কেউ হাকিয়ে এনেছে। মেয়েটিও এসে খাবারে হাত দিল এবং তার হাত ও ধরে ফেললেন হুজুর। তার পর তিনি বলেন, যে খাবারে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়না শয়তান সেই খাবার তার জন্য হালাল করে নেই। শয়তান এই বেদুঈনের সাথে খেতে এসেছিল আমি তার হাত ধরে ফেললাম তাই সে ওই মেয়েটির সাথে এল এবং এদের মাধ্যমে খাবারে ভাগ বসাতে চাইল। এর হাতও আমি ধরে ফেললাম। যার আয়ত্বে আমার জীবন সেই সত্তার কসম! এই দুজনের সাথে শয়তানের হাত ও (এখন) আমার মুঠোর মধ্যে।
হযরত আবু হুরাইরা বর্ণনা করেন, হুজুর ( সাঃ) বলেছেন, শয়তান তোমাদের সাথে সকল সময় সকল অবস্থায় বিদ্যমান থাকে, এমনকি খাওয়ার সময়ও। তাই তোমাদের মধ্যে খাদ্যের গ্রাস পড়ে গেলে তার ময়লা সাফ করে যেন তা খেয়ে নেই, যেন শয়তানের জন্য ছেড়ে না দেয়।
হযরত জাবির (রাঃ) শুনেছেন যে, হুজুর (সঃ) বলেন, যখন কোন মানুষ নিজের বাড়িতে প্রবেশ করার সময় এবং খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে, তখন শয়তান (অন্যান্য শয়তানের উদ্দেশে) বলে, তোমাদের জন্য এখানে থাকা খাওয়ার জন্য কোন অবকাশ নেই। কিন্তু কোন মানুষ যদি ঘরে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর নাম না নেই। তাহলে শয়তান বলে তোমরা জন্য রাতে থাকার ও সাঁঝে খাওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলে।

বর্ণনায় আকিল (রাহঃ)। আমাদের একটি বাড়ি ছিল। তাতে যখনি কোন লোক থাকত, সকালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যেত। একবার এক মরক্কোর লোক এল। ঘরটি তার পছন্দ হল এবং সে ভাড়া নিল। তারপর রাত কাটাল এবং সকালে দেখা গেল সে পুরোপুরি সুস্থ। তার কিছুই হয়নি। তা দেখে প্রতিবেশীরা অভাক। লোকটি বেশ কিছুকাল ছিল তারপর অন্যত্র চলে গেল। তাকে ওই ঘরের নিরাপদ থাকার কথা জিজ্ঞেস করা হলে সে বলল, আমি যখন সেই ঘরে থাকি তখন (প্রথম রাতে) ইশার নামাজ পড়েছি এবং কোরআন থেকে কিছু পড়েছি। তারপর দেখি এক যুবক কূপ থেকে উপরে উঠতেছে। সে আমাকে সালাম দিল। আমি তাকে দেখে ভয় পেলাম। সে বল, ভয় পেওনা আমাকেও কিছু কোরান পাঠ শেখাও। তারপর তাকে আমি কোরান শেখাই এবং জিজ্ঞেস করি এই ঘরের রহস্য কি? সে বলল, আমরা মুসলমান জ্বিন। আমরা কোরান পাঠও করি এবং নামাযও পড়ি। কিন্তু এই ঘরে বেশীর ভাগ সময় বদমাশ লোকেরা থাকে এবং মদের আসর বসায়। তাই আমরা তাদের গলা টিপে দিয়। আমি তাকে বললাম, তোমাকে আমি রাতে ভয় পায় তাই তুমি দিনের বেলায় এসো। সে বলল, খুব ভাল। তারপর থেকে সে দিনের বেলায় কুপ থেকে আসত। একবার সে কোরান পাঠ করতেছিল এমন সময় বাইরে এক ওঝা আসল এবং বলতেছে, “আমি সাপে কাটা, বদ নজর লাগা এবং জ্বিনে ধরা রোগের ঝাঁড়-ফোঁক করি”। তার কথা শুনে জ্বিনটি বলল, “সে কে?”। আমি বললাম ও হল ওঝা ঝাঁড়-ফোঁক করে। সে বলল তাকে ডাক। আমি উঠে তাকে ডেকে আনলাম। এসে দেখি, সে জ্বিনটি এক বিরাট সাপ হয়ে ঘরের ভিতরের ছাদে উঠে গেল। ওঝা এসে ঝাঁড়-ফুঁক করতেই সে ঝটপট করতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত ঘরের মেঝেই পড়ে গেল। তখন ওঝা তাকে ধরে ঝাঁপিতে ভরতে গেল আমি মানা করলাম। সে বলল, ‘তুমি আমাকে আমার শিকার ধরার কাজে বাধা দিচ্ছ’ তখন আমি তাকে একটা স্বর্ণ মুদ্রা দিলাম সে চলে গেল। তারপর সে অজগর নড়া-ছড়া করল এবং জ্বিন রূপে প্রকাশ ঘটল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কি হয়ছে? জ্বিন বলল, আমাকে ওই ওঝা পাক ইসমের মাধ্যমে শেষ করে ফেলেছে। আমি বাঁচব বলে আর বিশ্বাস হচ্ছেনা। যদি তুমি এই কুপ থেকে কোন চিৎকারের শব্দ শুনতে পাও তবে চলে যেও। সেই রাতে আমি এক আওয়াজ শুনতে পেলাম যে, “তুমি দূরে চলে যাও”। এরপর থেকে ওই ঘরে আর কেউ থাকত না।
আর এক সুন্দরী জ্বিন স্ত্রীর ঘটনা।
=======================
বর্ণনায় আল্লামা বাদরুদ্দীন শিবলী (রাহঃ)। জনাব কাযীউল ক্বযযাহ জালালুদ্দিন আহমেদ বিন ক্বাযীউল ক্বযযাহ হিসামুদ্দিন কাযী হানাফী বলেন, আমার পিতা আমাকে পরিবার পরিজন-বর্গকে প্রাচ্য হতে আনার জন্য সফরে পাঠান। যখন আমি বীরাহ নামক স্থান পার হলাম, বৃষ্টি আমাদের এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। আমি এক যাত্রী দলের সাথে ছিলাম। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি কেউ আমাকে জাগাচ্ছে। জেগে দেখি আমার কাছে মাঝারি উচ্ছতার এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তার চোখ ছিল একটা লম্বা-লম্বি ফাটলের মত। সে বলল তুমি ভয় পেওনা। আমি তোমার কাছে আমার চাঁদের মত মেয়েকে বিয়ে দিতে এসেছি। আমি ঘাবড়ে গিয়ে বললাম আল্লাহ ভালো করুন। তারপর দেখলাম কিছু মানুষ আমার দিকে আসছে। তাদের আকৃতিও ওই মহিলার মত। তাদের চোখেও লম্বা ফাটল আছে। তাদের সাথে এক কাযীও ছিল এবং সাক্ষীও। সুতরাং কাযী বিয়ের পয়গাম দিল এবং বিয়েও পড়িয়ে দিল যা আমি বাধ্য হয়ে কবুল করলাম। এবং ওরা যখন চলে গেল, তারপর মহিলা আমার কাছে আসল। এবার তার সাথে এক সুন্দরী মেয়েও ছিল। তার চোখও ছিল তার মায়ের মত ভয়ঙ্কর। মেয়েটির মা মেয়েকে আমার কাছে রেখে চলে গেল। তারপর আমার ভয় আরো বেড়ে গেল। আমি আমার সঙ্গীদের জাগাতে কাঁকর ছুঁড়ে মারলাম। কিন্তু উদের কেউ উঠল না। তখন অনুনয়-বিনয় করে আল্লাহর কাছে দুয়া করতে লাগলাম। পরে ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ার সময় এল। আমরা রওনা দিলাম কিন্তু মেয়েটি আমাকে ছাড়ল না। এই অবস্থায় তিন-দিন কেটে গেল। চারদিনের মাথায় মেয়ের মা এল এবং বলল, “সম্ভবত এই মেয়েকে তোমার পছন্দ হয়নি। তুমি মনে হয় এর থেকে বিচ্ছেদ চাইছ”। আমি বললাম, হ্যা আল্লাহর কসম। সে বলল, তবে একে তালাক দাও। আমি তাকে তালাক দিলে সে চলে গেল। পরে আমি তাকে আর কখনো দেখিনি।

Back to posts
Comments:

Post a comment

🌏ফেসবুক কর্ণার🌎
Tags: mzs, Quran

》●》জীনদের নিয়ে কিছু কথা.....new

জ্বিনদের আকৃতি বদলের রহস্য
কাযী আবু ইয়ালা হামবালী (রাহ) বলেনঃ জ্বিন ও শয়তানদের এমন কোন এখতিয়ার নেই যে তারা নিজেদের রূপ বদলাতে পারে এবং অন্যান্য রূপ ধারণ করবে; অবশ্য এ কথা ঠিক যে তাদেরকে আল্লাহ এমন কিছু বিশেষ কথা ও কাজ জানিয়ে দিয়েছেন যার ফলে তারা যখন সেই বিশেষ কথা ও কাজের প্রয়োগ ঘঠায় তখন তারা আল্লাহর ইচ্ছাই এক আকৃতি থেকে অন্য আকৃতিতে বদলে যায়।কিন্তু স্বয়ং নিজে থেকে জ্বিন ও শয়তান নিজেদের আকৃতি বদলানো অসম্ভব।কেননা নিজস্ব আকৃতি থেকে অন্য আকৃতি রূপান্তরিত করা মানে নিজের মূল উপাদান তথা অঙ্গপ্রত্যঙ্গকেও বদলে দেওয়া।এটা তাদের পক্ষে কিভাবে সম্ভব?
কাযী আবু ইয়ালা হাম্বলী আরো বলেন, ফিরিশতাদের বিভিন্ন রূপ ধারণের কেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
• জ্বিনরা কি কি রূপ নিতে পারেঃ
জ্বিনরা বহুরূপী হতে পারে, যেমন মানুষ, চতুষ্পদ পশু, সাপ, বিছে, উট, গরু, ছাগল, ঘোড়া, খচ্চর, গাধা ও বিভিন্ন পশু-পাখি প্রভৃতির আকার ধারণ করতে পারে।
• সাপ ও কুকুররাও এক প্রকার জ্বিন!
সাপ হল এক প্রকার রূপান্তরিত জ্বিন, যেমন বাদর ও শুকরে রূপান্তরিত হয়ছিল বনী-ইসরাইল।তবে জ্বিন সাপ গুলো হয় সাদা।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, কিছু কিছু কুকুররা এক প্রকার জ্বিন এবং এরা খুব দুর্বল জ্বিন।সুতরাং খাওয়ার সময় কোন কুকুর বসে গেলে তাকেও কিছু দেওয়া উচিত নাইলে তারিয়ে দেওয়া দরকার।কেননা তারো একটা প্রবৃত্তি (নফস) আছে।
হযরত আবু ক্বিলাবাহ হতে বর্ণীত, রাসুল (সাঃ) বলেনঃ যদি এই কুকুরগুলা এক প্রকার সৃষ্টিজীব না হত তাহলে এগুলোকে কতল করে দিতাম।কিন্তু কোন মাখলূককে বিলিন করতে আমার ভয় হয়।তবে তোমরা এদের মধ্যে সমস্ত কালো কুকুর গুলোকে মেরে ফেলবে।কারণ এগুলো এক প্রকার শয়তান।
রাসুল আরো বলেন, নামাজীর সামনে দিয়ে কালো কুকুর গেলে নামাজ ভেঙ্গে যায়।সাহাবীরা এ ব্যাপারে আরজ করল যে, "জনাব, লাল ও সাদা কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের কি দোষ?" উত্তরে রাসুল বলল, কালো কুকুর হল এক প্রকার শয়তান।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, জ্বিনরা তিন প্রকার-এক প্রকার জ্বিন হল, সাপ, বিছে, কুকুর ও পোকা-মাকড়।দ্বিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যারা হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়।এবং তিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যাদের পরকালের জন্য হিসাব-নিকাশ ও পুরষ্কার ও আযাব আছে।
আল্লামা সুহাইলী (রাহ) বলেন, শেষ প্রকারের জ্বিনরাই নিজেদের রূপ বদলাতে পারে।
কাযী আবু বকর বাকেলানী (রাহ) বলেন, আমি বলছি যারা জ্বিন দেখেছেন তারা সত্যি দেখেছেন।কেননা আল্লাহ জ্বিনদের দৃশ্যরূপ সৃষ্টি করেন এবং এরা বিভিন্ন আকৃতির ও কোমল দেহ বিশিষ্ট হয়।
• জ্বিন হল আগুনের সৃষ্টি
পবিত্র কোরানে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি আদমের আগে জ্বিনকে সৃষ্টি করি ‘লূ’এর আগুন (অর্থাৎ অত্যন্ত সূক্ষ্ম হওয়ার জন্য অতুষ্ণ বায়ুতে পরিণত হয়েছে এমন আগুন) দিয়ে

জ্বিনজাতি সৃষ্টি হয়ছে যেদিন।
হযরত আবু আলিয়ার বর্ণনাঃ আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেন বুধবার, জ্বিনকে সৃষ্টি করেন বৃহস্পতিবার এবং আদমকে সৃষ্টি করেন শুক্রবার।
=============================
কার আগে কে সৃষ্টি
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলা যার – আগে যাকে সৃষ্টি করেন।
জান্নাতকে - জাহান্নামের আগে
আপন রহমতকে - গযবের আগে
আসমানকে - যমীনের আগে
সূর্য ও চাঁদকে - নক্ষত্রের আগে
দিনকে - রাতের আগে
পানিভাগকে - স্থলভাগের আগে
সমভুমিকে - পাহাড়-পর্বতের আগে
ফিরিশতাদেরকে - জ্বিনদের আগে
জ্বিনজাতিকে - মানবজাতির আগে
এবং
পুরুষ জাতিকে - স্ত্রী জাতির আগে
======================
আদি জ্বিনের আকাংক্ষা
=============
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা আবূল জ্বিন্নাত বা জ্বিন জাতির আদিপিতা “সামূম”কে আগুনের শিখা দিয়ে সৃষ্টি করার পর বলেন,তুমি কিছু কামনা কর।সে বলল, “আমার কামনা হল, আমরা সবাইকে দেখব কিন্তু আমাদের যেন কেউ না দেখে এবং আমাদের বৃদ্ধরা যেন জোয়ান হয়ে মারা যায়।আল্লাহ তার এই কামনা কবুল করলেন তাই জ্বিনরা অদৃশ্য এবং মারা গেলে জোয়ান হয়ে মারা যায়।
==============================
জ্বিনেরা পৃথিবীতে বাস করত মানুষের আগেঃ
==============================
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, জ্বিনেরা পৃথিবীতে এবং ফিরিশ্তারা আসমানে বাস করত।প্রত্যেক আসমানের আলাদা আলাদা ফিরিশতা থাকত এবং আসমানের বাসিন্দাদের জন্য আলাদা আলাদা নামাজ-দোয়া ছিল।মূলত এরাই ছিল আসমান ও জমিনের বাসিন্দা
জ্বিনদের সৃষ্টি আদমের (আঃ) ২০০০ বছর আগে
=========================
ইবলীস পৃথিবীতে বাস করছে যবে থেকে!
=========================
জুওয়াইবির ও উসমান (রাঃ)নিজেদের সনদ সহকারে বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করার পর তাদেরকে পৃথিবীতে বাস করার জন্য নির্দেশ দেন।ওরা পৃথিবীতে আল্লাহর একান্ত অনুগত হয়ে চলতে লাগল।অবশেষে দীর্ঘকাল কেটে যাবার পর, ওরা আল্লাহর অবাধ্যতা শুরু করে দিল এবং খুন খারাবী করতে লাগল।তাদের এক বাদশাহ ছিল, যার নাম ছিল ইউসুফ।
তাকে ও তারা মেরে ফেলল।তকন আল্লাহ তাদের ওপর দ্বিতীয় আসমানের ফেরেশতাদের এক বাহিনী পাঠালেন।তাদের মধ্যে ইবলীসও ছিল।ইবলিস ছিল ৪০০০ জনের সর্দার।সে আসমান থেকে নেমে এসে জমিনের সমস্ত জ্বিন সন্তানদের হত্যা করল এবং বাকিদের মেরে কেটে সমুদ্রের দ্বীপগুলোর দিকে তারিয়ে দিল।তখন ইবলীস তার বাহিনী সমেত এই জমিনেই থাকতে লাগল।তেদের পক্ষে আল্লাহর বিধি-বিদ্বান মেনে চলা খুব সহজ হয় গেল এবং তারা পৃথিবীতে বসবাস করাকে পছন্দ করল।


হিজড়ারা জম্মায় কেমন করে?
---------------------
হযরত ইবনে আব্বাস (রা)বলেন হিজড়ারা জ্বিনদের সন্তান।
কোন এক ব্যাক্তি আব্বাস (রা) কে জিজ্ঞেস করে এমনটা কেমন করে হয়?
উত্তরে তিনি বলেন আল্লাহ ও তার রাসুল (সা) নিষেধ করেছেন যে মানুষ যেন তার স্ত্রীর সাথে মাসিক স্রাব চলাকালিন যৌনসঙ্গম না করে।স্ত্রী লোকের ঋতুস্রাব চলাকালীন যৌন সঙ্গম করলে শয়তান তার আগে আগে থাকে এবং শয়তানের দ্বারা ঔ মহিলা গর্ববতী হয় এবং হিজড়া সন্তান প্রসব করে।
শয়তান জ্বিন মানুষের সন্তানে শরীক হয় যেভাবেঃ হযরত মুজাহিদ (রাহ) বলেন, মানুষ তার স্ত্রীর সাথে যৌনমিলন করার আগে “বিসমিল্লাহ” না পড়লে জ্বিন তার প্রস্রাবের ছিদ্র পথের সাথে জড়িয়ে যায় এবং সেও সেই পুরুষের সাথে যৌনমিলনে অংশ নেই।
এর থেকে বাঁচতে হলে মিলনের আগে এই দুয়া পড়তে হবে, “আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইত্ব-না অজান্নিবাশ শাইত্ব-না মা রাযাকতান”
=============================================
================
জ্বিন শব্দের অর্থ ও পরিচিত
হযরত ইবনে দুরাইদ (রাহ) বলেন জ্বিন হল মানব জাতি হতে আলাদা একটি জাতি বা সৃষ্টি।জ্বিন শব্দের অর্থ গুপ্ত অদৃশ্য বা লোক্কায়িত।
জ্বিন কারাঃ হযরত আবু উমর আয যাহিদ বলেন, জিন্নাত বা জ্বিন জাতির কুকুর বা ইতর শ্রেণীকে বলা হয় জ্বিন।
জ্বান কারাঃ হযরত জাওহরি বলেন, জ্বান হল জ্বিনের আদি পিতা বা আবুল জ্বিন।
শয়তান কারাঃ আল্লামা ইবনে আকিল বলেন, শয়তান হল এক প্রকার জ্বিন যারা আল্লাহর অবাধ্য ইবলীশের বংশধর।
মারাদা কারাঃ আল্লামা আকিলের মতে মারাদা হল, জ্বিন জাতির মধ্যে যারা চরম অবাধ্য।
জ্বিন জাতির শ্রেণী বিভাগঃ
১-জ্বিনঃ অর্থাৎ সাধারণ জ্বিন
২-আমিরঃ (বহু বচনে উম্মার) যারা মানুষের সাথে থাকে
৩-আরওয়াহ যারা মানুষের সামনে আসে
৪-শয়তানঃ উদ্ধত অবাধ্য
৫-ইফরীত্ব যা শয়তানের চেয়েও বিপদ জনক


• সাবার রাণী [সুলাইমান (আঃ)-এর বিবি] বিলকিসের মা ছিল জ্বিন।
*******************************************
কথিত আছেঃ বিলকিসের মা-বাপের মধ্যে একজন ছিল জ্বিন। ইবনুল কালবী বলেন, বিলকিসের বাপ জ্বিনদের মেয়েকে বিয়ে করে ছিল। যার নাম ছিল, “রেহান বিন্তে সুকুন” এরই গর্ভে বিলকিসের জন্ম হয়। এর নাম রাখাআ হয় ‘বিলকিমাহ’। বর্ণীত আছে যে বিলকিসের পায়ের সামনে ছিল চতুষ্পদ জন্তুর খুরের মত এবং তার গোরালীতে লোম ও ছিল। হযরত সুলাইমান (আঃ) তাকে বিয়ে করেছিল এবং শয়তানদের নির্দেশ দিয়েছিল, তোমরা গোসল খানা এবং লোম-বিন্নাশক পাউডার বানাও।
আবু হুরাইরা হতে বর্ণীত রাসুল (সাঃ) বলেন, বিলকিস-এর পিতা-মাতা’র মধ্যে একজন ছিল জ্বিন।
• জ্বিনদের বিয়ে-শাদী ও বংশধারা
********************
কোরআন থেকে প্রমাণ
“ইতোপুর্বে ও (অনত-নয়না স্বর্গ সুন্দরী, হুর)-দের কাছে না কোন মানুষ গিয়েছে না কোন জ্বিন। (আর রাহমান) এই আয়াত থেকে বুঝা গেল যে, জ্বিনরা যৌনমিলনও করে।
জ্বিনদের জন্মহার অনেক বেশী।
==================
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহ মানব জাতি ও জ্বিন জাতকে ১০ ভাগে ভাগ করেছেন। তার মধ্যে ৯ ভাগ জ্বিন এক ভাগ মানুষ। যখন একটি মানব শিশু জন্মায় তখন জ্বিনদের ৯ টা বাচ্চা হয়।
জ্বিনদের সাথে মানুষের বিয়ে
=================
জ্বিনের সাথে মানুষের বিয়ে হওয়া সম্ভব। তবে মাকরূহ। ইমাম সাঅলাবী (রাহঃ) বলেন, মানুষের ধারণা, বিয়ে এবং গর্ভ হওয়া মানুষ ও জ্বিন উভয়ের মধ্যে হতে পারে। পবিত্র কোরআনে বলা আছে, (আল্লাহ শয়তান কে উদ্দেশ্য করে বলেন ) তুই মানুষের সম্পদে ও সন্তানে শরীক হয় যা। (সুরা বনী ঈসরাইল)।
জ্বিন মানুষের সহজাত মিলনে সন্তানের নাম কী? “জ্বিন ও মানুষের মিলনে যে সন্তান হয় তার নাম ‘খুন্নাস’।“
• জ্বিন মানুষের মিলনে ছেলে হওয়ার ঘটনা (এ কোন বানোয়াট কাহিনী নয় হাদিস শুনাচ্ছি )।
=============================================
========
হযরত আবূ সাইদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি হযরত আলীর সাথে নাহরোয়ানে হুদুদিয়াদের হত্যাকার্যে সামিল হলাম। আলী (রাঃ) আমার কাছে ‘তালীদ’কে সন্ধান করলেন কিন্তু তাকে পেলাম না। তখন তিনি বললেন, তাকে খুঁজ। পরে তিনি নিজে তাকে খুজে বের করলেন।তারপর বললেন, “কে একে জান?” উপস্থিত ব্যক্তির মধ্যে একজন বলল, একে আমি জানি। এ “কাউস”। এর মা’ও আছেন। আলী তার মা’র কাছে একজন দূত পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এর বাপ কে? সে বলল, ‘আমি জানিনা, তবে এটুকু জানি যে, আমি অজ্ঞাতার যুগে আপন সম্প্রদায়ের বকরী-পাল চরাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার কাছে এক ছায়া মুর্তি এসে আমার সাথে যৌন-মিলন করে, যার দ্বারা আমার গর্ভ হয়। এ হল সেই গর্ভের সন্তান।

প্রত্যেক মুসলমানের ঘর-বাড়ির ছাদে মুসুলমান জ্বিন বাস করে
ইয়াজীদ বিন জাবির (তাবেঈ) বলেছেন, সকল মুসলমানের ঘরের ছাদে মুসলমান জ্বিনরা বসবাস করে। যখন বাড়ির মানুষদের জন্য খাবার তৈরী করে রাখা হয় তখন সংশ্লিষ্ট বাড়ির জ্বিনরা নেমে এসে তাদের সাথে আহার করে এবং যখন বাড়ির লোকদের রাতের খাবার দেওয়া হয় তখনও তারা নেমে এসে তাদের সাথে খাবারে শরিক হয়। এসব জ্বিনের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের খারাপ জ্বিন থেকে রক্ষা করেন।
• জ্বিনরা কী খায়
হযরত ওয়াহাব বিন মুনাব্বিহ (রাহঃ) বলেন, জ্বিন কয়েক প্রকার। এক প্রকার জ্বিন হল হাওয়া (হাওয়ায় মিশে থাকে)। ওরা খাওয়া-দাওয়া, বিয়ে-শাদী কিছুই করেনা এবং মারাও যায়না তাদের বাচ্চাও হয়না। আর এক প্রকার আছে যারা খাওয়া দাওয়া, বিয়ে-শাদী করে এবং মারা ও যায়।
হযরত আলকামাহ (রাহঃ) বলেছেন, আমি হযরত মাসউদ (রা)-কে নিবেদন করি, আপনাদের মধ্যে কেউ ‘লাইলাতুল জ্বিন’ (অর্থাৎ জ্বিনের রাত)-এ রাসুল (সাঃ)-এর সাথে ছিলেন কি?
উনি বললেন, ‘না’।কিন্ত এক রাতে আমরা তাকে মক্কায় অনুপস্থিত পেলাম। আমরা বললাম, হয়ত নবীজীকে কাফিররা ধরে ফেলেছে এবং তাকে গুম করে ফেলেছে। আমাদের ওই রাতটা খুব খারাপ অবস্থায় গেল। যখন সকাল হল, দেখা গেল নবীজী হেরা পর্বত হতে আস্তেছে। তারপর আমরা আমাদের গত রাতের উদ্বেগের কথা জানালাম। তিনি বললেন, একটি জ্বিন এসে আমাকে দাওয়াত দিয়েছিল, তাই আমি তাদের সাথে গিয়েছিলাম এবং তাদের কোরান পড়ে শুনালাম। এরপর নবীজী আমাদের নিয়ে গেলেন এবং জ্বিনদের নিদর্শন দেখালেন। ওদের আগুনের চিহ্ন দেখালেন। ওই জ্বিনরা হুজুরের কাছে সফরের সামান (বা পাথেয়) চাই। কেননা তারা ছিল এক দ্বীপের জ্বিন। তখন নবীজী তাদের বললেন, তোমাদের খাদ্য এমন সব হাড় যার প্রতি আল্লাহর নাম নেওয়া হয়ছে।
রাসুল (সাঃ) আরো বলেন, তোমরা এই দু’টো জিনিষ (হাড় ও গোবর) দিয়ে এস্তেঞ্জা করোনা। কেননা এগুলো হলো তোমাদের জ্বিন ভাইদের খোরাক।
জৈনক জ্বিনের আবেদন,
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি একবার রাসুলের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তার কাছে এক সাপ এল এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে গেল। আমি তাকে নবীজীর আরো কাছে করে দিলাম। সে রাসুলের পবিত্র কানের কাছে গিয়ে চুপিচুপি কিছু বলল। নবীজী বললেন ঠিক আছে। তারপর সাপটি চলে গেল। তখন ব্যাপারটি আমি জানতে চাইলে, হুজুর বলেন, সে ছিল জ্বিন। সে আমাকে বলে গেল, “আপনি আপনার উম্মতদের বলেদেন যে তারা যেন গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেঞ্জা না করে কেননা আল্লাহ ওই দু’টো জিনিষে আমাদের জন্য আহার্য রেখেছেন”।
• শয়তান খানা-পিনা করে বাম হাতে।
হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণীত, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আহার করে তারা যেন ডান হাত দিয়ে আহার করে এবং পান করার সময় ডান হাত দিয়ে পান করে, কেননা শয়তান বাম হাত দিয়ে আহার ও পান করে।
হুযাইফা (রাঃ) বলেন, রাসুল এর সঙ্গে যখন কোন খানার মজলিসে হাজির হতাম তখন তিনি শুরু করার আগে আমরা শুরু করতাম না। একবারের ঘটনা, আমারা খাওয়ার মজলিসে হাজীর আছি এমন সময় এক বেদুঈন এল। যেন তাকে কেউ খাবারের দিকে তারিয়ে এনেছে। সে এসে খাবারের দিকে হাত বাড়াল। নবীজী তার হাত ধরে ফেললেন এবং তাকে বসিয়ে দিল। তারপর একটি মেয়ে আসল তাকেও যেন কেউ হাকিয়ে এনেছে। মেয়েটিও এসে খাবারে হাত দিল এবং তার হাত ও ধরে ফেললেন হুজুর। তার পর তিনি বলেন, যে খাবারে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়না শয়তান সেই খাবার তার জন্য হালাল করে নেই। শয়তান এই বেদুঈনের সাথে খেতে এসেছিল আমি তার হাত ধরে ফেললাম তাই সে ওই মেয়েটির সাথে এল এবং এদের মাধ্যমে খাবারে ভাগ বসাতে চাইল। এর হাতও আমি ধরে ফেললাম। যার আয়ত্বে আমার জীবন সেই সত্তার কসম! এই দুজনের সাথে শয়তানের হাত ও (এখন) আমার মুঠোর মধ্যে।
হযরত আবু হুরাইরা বর্ণনা করেন, হুজুর ( সাঃ) বলেছেন, শয়তান তোমাদের সাথে সকল সময় সকল অবস্থায় বিদ্যমান থাকে, এমনকি খাওয়ার সময়ও। তাই তোমাদের মধ্যে খাদ্যের গ্রাস পড়ে গেলে তার ময়লা সাফ করে যেন তা খেয়ে নেই, যেন শয়তানের জন্য ছেড়ে না দেয়।
হযরত জাবির (রাঃ) শুনেছেন যে, হুজুর (সঃ) বলেন, যখন কোন মানুষ নিজের বাড়িতে প্রবেশ করার সময় এবং খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে, তখন শয়তান (অন্যান্য শয়তানের উদ্দেশে) বলে, তোমাদের জন্য এখানে থাকা খাওয়ার জন্য কোন অবকাশ নেই। কিন্তু কোন মানুষ যদি ঘরে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর নাম না নেই। তাহলে শয়তান বলে তোমরা জন্য রাতে থাকার ও সাঁঝে খাওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলে।

বর্ণনায় আকিল (রাহঃ)। আমাদের একটি বাড়ি ছিল। তাতে যখনি কোন লোক থাকত, সকালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যেত। একবার এক মরক্কোর লোক এল। ঘরটি তার পছন্দ হল এবং সে ভাড়া নিল। তারপর রাত কাটাল এবং সকালে দেখা গেল সে পুরোপুরি সুস্থ। তার কিছুই হয়নি। তা দেখে প্রতিবেশীরা অভাক। লোকটি বেশ কিছুকাল ছিল তারপর অন্যত্র চলে গেল। তাকে ওই ঘরের নিরাপদ থাকার কথা জিজ্ঞেস করা হলে সে বলল, আমি যখন সেই ঘরে থাকি তখন (প্রথম রাতে) ইশার নামাজ পড়েছি এবং কোরআন থেকে কিছু পড়েছি। তারপর দেখি এক যুবক কূপ থেকে উপরে উঠতেছে। সে আমাকে সালাম দিল। আমি তাকে দেখে ভয় পেলাম। সে বল, ভয় পেওনা আমাকেও কিছু কোরান পাঠ শেখাও। তারপর তাকে আমি কোরান শেখাই এবং জিজ্ঞেস করি এই ঘরের রহস্য কি? সে বলল, আমরা মুসলমান জ্বিন। আমরা কোরান পাঠও করি এবং নামাযও পড়ি। কিন্তু এই ঘরে বেশীর ভাগ সময় বদমাশ লোকেরা থাকে এবং মদের আসর বসায়। তাই আমরা তাদের গলা টিপে দিয়। আমি তাকে বললাম, তোমাকে আমি রাতে ভয় পায় তাই তুমি দিনের বেলায় এসো। সে বলল, খুব ভাল। তারপর থেকে সে দিনের বেলায় কুপ থেকে আসত। একবার সে কোরান পাঠ করতেছিল এমন সময় বাইরে এক ওঝা আসল এবং বলতেছে, “আমি সাপে কাটা, বদ নজর লাগা এবং জ্বিনে ধরা রোগের ঝাঁড়-ফোঁক করি”। তার কথা শুনে জ্বিনটি বলল, “সে কে?”। আমি বললাম ও হল ওঝা ঝাঁড়-ফোঁক করে। সে বলল তাকে ডাক। আমি উঠে তাকে ডেকে আনলাম। এসে দেখি, সে জ্বিনটি এক বিরাট সাপ হয়ে ঘরের ভিতরের ছাদে উঠে গেল। ওঝা এসে ঝাঁড়-ফুঁক করতেই সে ঝটপট করতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত ঘরের মেঝেই পড়ে গেল। তখন ওঝা তাকে ধরে ঝাঁপিতে ভরতে গেল আমি মানা করলাম। সে বলল, ‘তুমি আমাকে আমার শিকার ধরার কাজে বাধা দিচ্ছ’ তখন আমি তাকে একটা স্বর্ণ মুদ্রা দিলাম সে চলে গেল। তারপর সে অজগর নড়া-ছড়া করল এবং জ্বিন রূপে প্রকাশ ঘটল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কি হয়ছে? জ্বিন বলল, আমাকে ওই ওঝা পাক ইসমের মাধ্যমে শেষ করে ফেলেছে। আমি বাঁচব বলে আর বিশ্বাস হচ্ছেনা। যদি তুমি এই কুপ থেকে কোন চিৎকারের শব্দ শুনতে পাও তবে চলে যেও। সেই রাতে আমি এক আওয়াজ শুনতে পেলাম যে, “তুমি দূরে চলে যাও”। এরপর থেকে ওই ঘরে আর কেউ থাকত না।
আর এক সুন্দরী জ্বিন স্ত্রীর ঘটনা।
=======================
বর্ণনায় আল্লামা বাদরুদ্দীন শিবলী (রাহঃ)। জনাব কাযীউল ক্বযযাহ জালালুদ্দিন আহমেদ বিন ক্বাযীউল ক্বযযাহ হিসামুদ্দিন কাযী হানাফী বলেন, আমার পিতা আমাকে পরিবার পরিজন-বর্গকে প্রাচ্য হতে আনার জন্য সফরে পাঠান। যখন আমি বীরাহ নামক স্থান পার হলাম, বৃষ্টি আমাদের এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। আমি এক যাত্রী দলের সাথে ছিলাম। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি কেউ আমাকে জাগাচ্ছে। জেগে দেখি আমার কাছে মাঝারি উচ্ছতার এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তার চোখ ছিল একটা লম্বা-লম্বি ফাটলের মত। সে বলল তুমি ভয় পেওনা। আমি তোমার কাছে আমার চাঁদের মত মেয়েকে বিয়ে দিতে এসেছি। আমি ঘাবড়ে গিয়ে বললাম আল্লাহ ভালো করুন। তারপর দেখলাম কিছু মানুষ আমার দিকে আসছে। তাদের আকৃতিও ওই মহিলার মত। তাদের চোখেও লম্বা ফাটল আছে। তাদের সাথে এক কাযীও ছিল এবং সাক্ষীও। সুতরাং কাযী বিয়ের পয়গাম দিল এবং বিয়েও পড়িয়ে দিল যা আমি বাধ্য হয়ে কবুল করলাম। এবং ওরা যখন চলে গেল, তারপর মহিলা আমার কাছে আসল। এবার তার সাথে এক সুন্দরী মেয়েও ছিল। তার চোখও ছিল তার মায়ের মত ভয়ঙ্কর। মেয়েটির মা মেয়েকে আমার কাছে রেখে চলে গেল। তারপর আমার ভয় আরো বেড়ে গেল। আমি আমার সঙ্গীদের জাগাতে কাঁকর ছুঁড়ে মারলাম। কিন্তু উদের কেউ উঠল না। তখন অনুনয়-বিনয় করে আল্লাহর কাছে দুয়া করতে লাগলাম। পরে ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ার সময় এল। আমরা রওনা দিলাম কিন্তু মেয়েটি আমাকে ছাড়ল না। এই অবস্থায় তিন-দিন কেটে গেল। চারদিনের মাথায় মেয়ের মা এল এবং বলল, “সম্ভবত এই মেয়েকে তোমার পছন্দ হয়নি। তুমি মনে হয় এর থেকে বিচ্ছেদ চাইছ”। আমি বললাম, হ্যা আল্লাহর কসম। সে বলল, তবে একে তালাক দাও। আমি তাকে তালাক দিলে সে চলে গেল। পরে আমি তাকে আর কখনো দেখিনি।

Back to posts
Comments:

Post a comment

🔡EDUCATION🔣
Tags: mzs, Quran

》●》জীনদের নিয়ে কিছু কথা.....new

জ্বিনদের আকৃতি বদলের রহস্য
কাযী আবু ইয়ালা হামবালী (রাহ) বলেনঃ জ্বিন ও শয়তানদের এমন কোন এখতিয়ার নেই যে তারা নিজেদের রূপ বদলাতে পারে এবং অন্যান্য রূপ ধারণ করবে; অবশ্য এ কথা ঠিক যে তাদেরকে আল্লাহ এমন কিছু বিশেষ কথা ও কাজ জানিয়ে দিয়েছেন যার ফলে তারা যখন সেই বিশেষ কথা ও কাজের প্রয়োগ ঘঠায় তখন তারা আল্লাহর ইচ্ছাই এক আকৃতি থেকে অন্য আকৃতিতে বদলে যায়।কিন্তু স্বয়ং নিজে থেকে জ্বিন ও শয়তান নিজেদের আকৃতি বদলানো অসম্ভব।কেননা নিজস্ব আকৃতি থেকে অন্য আকৃতি রূপান্তরিত করা মানে নিজের মূল উপাদান তথা অঙ্গপ্রত্যঙ্গকেও বদলে দেওয়া।এটা তাদের পক্ষে কিভাবে সম্ভব?
কাযী আবু ইয়ালা হাম্বলী আরো বলেন, ফিরিশতাদের বিভিন্ন রূপ ধারণের কেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
• জ্বিনরা কি কি রূপ নিতে পারেঃ
জ্বিনরা বহুরূপী হতে পারে, যেমন মানুষ, চতুষ্পদ পশু, সাপ, বিছে, উট, গরু, ছাগল, ঘোড়া, খচ্চর, গাধা ও বিভিন্ন পশু-পাখি প্রভৃতির আকার ধারণ করতে পারে।
• সাপ ও কুকুররাও এক প্রকার জ্বিন!
সাপ হল এক প্রকার রূপান্তরিত জ্বিন, যেমন বাদর ও শুকরে রূপান্তরিত হয়ছিল বনী-ইসরাইল।তবে জ্বিন সাপ গুলো হয় সাদা।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, কিছু কিছু কুকুররা এক প্রকার জ্বিন এবং এরা খুব দুর্বল জ্বিন।সুতরাং খাওয়ার সময় কোন কুকুর বসে গেলে তাকেও কিছু দেওয়া উচিত নাইলে তারিয়ে দেওয়া দরকার।কেননা তারো একটা প্রবৃত্তি (নফস) আছে।
হযরত আবু ক্বিলাবাহ হতে বর্ণীত, রাসুল (সাঃ) বলেনঃ যদি এই কুকুরগুলা এক প্রকার সৃষ্টিজীব না হত তাহলে এগুলোকে কতল করে দিতাম।কিন্তু কোন মাখলূককে বিলিন করতে আমার ভয় হয়।তবে তোমরা এদের মধ্যে সমস্ত কালো কুকুর গুলোকে মেরে ফেলবে।কারণ এগুলো এক প্রকার শয়তান।
রাসুল আরো বলেন, নামাজীর সামনে দিয়ে কালো কুকুর গেলে নামাজ ভেঙ্গে যায়।সাহাবীরা এ ব্যাপারে আরজ করল যে, "জনাব, লাল ও সাদা কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের কি দোষ?" উত্তরে রাসুল বলল, কালো কুকুর হল এক প্রকার শয়তান।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, জ্বিনরা তিন প্রকার-এক প্রকার জ্বিন হল, সাপ, বিছে, কুকুর ও পোকা-মাকড়।দ্বিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যারা হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়।এবং তিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যাদের পরকালের জন্য হিসাব-নিকাশ ও পুরষ্কার ও আযাব আছে।
আল্লামা সুহাইলী (রাহ) বলেন, শেষ প্রকারের জ্বিনরাই নিজেদের রূপ বদলাতে পারে।
কাযী আবু বকর বাকেলানী (রাহ) বলেন, আমি বলছি যারা জ্বিন দেখেছেন তারা সত্যি দেখেছেন।কেননা আল্লাহ জ্বিনদের দৃশ্যরূপ সৃষ্টি করেন এবং এরা বিভিন্ন আকৃতির ও কোমল দেহ বিশিষ্ট হয়।
• জ্বিন হল আগুনের সৃষ্টি
পবিত্র কোরানে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি আদমের আগে জ্বিনকে সৃষ্টি করি ‘লূ’এর আগুন (অর্থাৎ অত্যন্ত সূক্ষ্ম হওয়ার জন্য অতুষ্ণ বায়ুতে পরিণত হয়েছে এমন আগুন) দিয়ে

জ্বিনজাতি সৃষ্টি হয়ছে যেদিন।
হযরত আবু আলিয়ার বর্ণনাঃ আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেন বুধবার, জ্বিনকে সৃষ্টি করেন বৃহস্পতিবার এবং আদমকে সৃষ্টি করেন শুক্রবার।
=============================
কার আগে কে সৃষ্টি
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলা যার – আগে যাকে সৃষ্টি করেন।
জান্নাতকে - জাহান্নামের আগে
আপন রহমতকে - গযবের আগে
আসমানকে - যমীনের আগে
সূর্য ও চাঁদকে - নক্ষত্রের আগে
দিনকে - রাতের আগে
পানিভাগকে - স্থলভাগের আগে
সমভুমিকে - পাহাড়-পর্বতের আগে
ফিরিশতাদেরকে - জ্বিনদের আগে
জ্বিনজাতিকে - মানবজাতির আগে
এবং
পুরুষ জাতিকে - স্ত্রী জাতির আগে
======================
আদি জ্বিনের আকাংক্ষা
=============
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা আবূল জ্বিন্নাত বা জ্বিন জাতির আদিপিতা “সামূম”কে আগুনের শিখা দিয়ে সৃষ্টি করার পর বলেন,তুমি কিছু কামনা কর।সে বলল, “আমার কামনা হল, আমরা সবাইকে দেখব কিন্তু আমাদের যেন কেউ না দেখে এবং আমাদের বৃদ্ধরা যেন জোয়ান হয়ে মারা যায়।আল্লাহ তার এই কামনা কবুল করলেন তাই জ্বিনরা অদৃশ্য এবং মারা গেলে জোয়ান হয়ে মারা যায়।
==============================
জ্বিনেরা পৃথিবীতে বাস করত মানুষের আগেঃ
==============================
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, জ্বিনেরা পৃথিবীতে এবং ফিরিশ্তারা আসমানে বাস করত।প্রত্যেক আসমানের আলাদা আলাদা ফিরিশতা থাকত এবং আসমানের বাসিন্দাদের জন্য আলাদা আলাদা নামাজ-দোয়া ছিল।মূলত এরাই ছিল আসমান ও জমিনের বাসিন্দা
জ্বিনদের সৃষ্টি আদমের (আঃ) ২০০০ বছর আগে
=========================
ইবলীস পৃথিবীতে বাস করছে যবে থেকে!
=========================
জুওয়াইবির ও উসমান (রাঃ)নিজেদের সনদ সহকারে বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করার পর তাদেরকে পৃথিবীতে বাস করার জন্য নির্দেশ দেন।ওরা পৃথিবীতে আল্লাহর একান্ত অনুগত হয়ে চলতে লাগল।অবশেষে দীর্ঘকাল কেটে যাবার পর, ওরা আল্লাহর অবাধ্যতা শুরু করে দিল এবং খুন খারাবী করতে লাগল।তাদের এক বাদশাহ ছিল, যার নাম ছিল ইউসুফ।
তাকে ও তারা মেরে ফেলল।তকন আল্লাহ তাদের ওপর দ্বিতীয় আসমানের ফেরেশতাদের এক বাহিনী পাঠালেন।তাদের মধ্যে ইবলীসও ছিল।ইবলিস ছিল ৪০০০ জনের সর্দার।সে আসমান থেকে নেমে এসে জমিনের সমস্ত জ্বিন সন্তানদের হত্যা করল এবং বাকিদের মেরে কেটে সমুদ্রের দ্বীপগুলোর দিকে তারিয়ে দিল।তখন ইবলীস তার বাহিনী সমেত এই জমিনেই থাকতে লাগল।তেদের পক্ষে আল্লাহর বিধি-বিদ্বান মেনে চলা খুব সহজ হয় গেল এবং তারা পৃথিবীতে বসবাস করাকে পছন্দ করল।


হিজড়ারা জম্মায় কেমন করে?
---------------------
হযরত ইবনে আব্বাস (রা)বলেন হিজড়ারা জ্বিনদের সন্তান।
কোন এক ব্যাক্তি আব্বাস (রা) কে জিজ্ঞেস করে এমনটা কেমন করে হয়?
উত্তরে তিনি বলেন আল্লাহ ও তার রাসুল (সা) নিষেধ করেছেন যে মানুষ যেন তার স্ত্রীর সাথে মাসিক স্রাব চলাকালিন যৌনসঙ্গম না করে।স্ত্রী লোকের ঋতুস্রাব চলাকালীন যৌন সঙ্গম করলে শয়তান তার আগে আগে থাকে এবং শয়তানের দ্বারা ঔ মহিলা গর্ববতী হয় এবং হিজড়া সন্তান প্রসব করে।
শয়তান জ্বিন মানুষের সন্তানে শরীক হয় যেভাবেঃ হযরত মুজাহিদ (রাহ) বলেন, মানুষ তার স্ত্রীর সাথে যৌনমিলন করার আগে “বিসমিল্লাহ” না পড়লে জ্বিন তার প্রস্রাবের ছিদ্র পথের সাথে জড়িয়ে যায় এবং সেও সেই পুরুষের সাথে যৌনমিলনে অংশ নেই।
এর থেকে বাঁচতে হলে মিলনের আগে এই দুয়া পড়তে হবে, “আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইত্ব-না অজান্নিবাশ শাইত্ব-না মা রাযাকতান”
=============================================
================
জ্বিন শব্দের অর্থ ও পরিচিত
হযরত ইবনে দুরাইদ (রাহ) বলেন জ্বিন হল মানব জাতি হতে আলাদা একটি জাতি বা সৃষ্টি।জ্বিন শব্দের অর্থ গুপ্ত অদৃশ্য বা লোক্কায়িত।
জ্বিন কারাঃ হযরত আবু উমর আয যাহিদ বলেন, জিন্নাত বা জ্বিন জাতির কুকুর বা ইতর শ্রেণীকে বলা হয় জ্বিন।
জ্বান কারাঃ হযরত জাওহরি বলেন, জ্বান হল জ্বিনের আদি পিতা বা আবুল জ্বিন।
শয়তান কারাঃ আল্লামা ইবনে আকিল বলেন, শয়তান হল এক প্রকার জ্বিন যারা আল্লাহর অবাধ্য ইবলীশের বংশধর।
মারাদা কারাঃ আল্লামা আকিলের মতে মারাদা হল, জ্বিন জাতির মধ্যে যারা চরম অবাধ্য।
জ্বিন জাতির শ্রেণী বিভাগঃ
১-জ্বিনঃ অর্থাৎ সাধারণ জ্বিন
২-আমিরঃ (বহু বচনে উম্মার) যারা মানুষের সাথে থাকে
৩-আরওয়াহ যারা মানুষের সামনে আসে
৪-শয়তানঃ উদ্ধত অবাধ্য
৫-ইফরীত্ব যা শয়তানের চেয়েও বিপদ জনক


• সাবার রাণী [সুলাইমান (আঃ)-এর বিবি] বিলকিসের মা ছিল জ্বিন।
*******************************************
কথিত আছেঃ বিলকিসের মা-বাপের মধ্যে একজন ছিল জ্বিন। ইবনুল কালবী বলেন, বিলকিসের বাপ জ্বিনদের মেয়েকে বিয়ে করে ছিল। যার নাম ছিল, “রেহান বিন্তে সুকুন” এরই গর্ভে বিলকিসের জন্ম হয়। এর নাম রাখাআ হয় ‘বিলকিমাহ’। বর্ণীত আছে যে বিলকিসের পায়ের সামনে ছিল চতুষ্পদ জন্তুর খুরের মত এবং তার গোরালীতে লোম ও ছিল। হযরত সুলাইমান (আঃ) তাকে বিয়ে করেছিল এবং শয়তানদের নির্দেশ দিয়েছিল, তোমরা গোসল খানা এবং লোম-বিন্নাশক পাউডার বানাও।
আবু হুরাইরা হতে বর্ণীত রাসুল (সাঃ) বলেন, বিলকিস-এর পিতা-মাতা’র মধ্যে একজন ছিল জ্বিন।
• জ্বিনদের বিয়ে-শাদী ও বংশধারা
********************
কোরআন থেকে প্রমাণ
“ইতোপুর্বে ও (অনত-নয়না স্বর্গ সুন্দরী, হুর)-দের কাছে না কোন মানুষ গিয়েছে না কোন জ্বিন। (আর রাহমান) এই আয়াত থেকে বুঝা গেল যে, জ্বিনরা যৌনমিলনও করে।
জ্বিনদের জন্মহার অনেক বেশী।
==================
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহ মানব জাতি ও জ্বিন জাতকে ১০ ভাগে ভাগ করেছেন। তার মধ্যে ৯ ভাগ জ্বিন এক ভাগ মানুষ। যখন একটি মানব শিশু জন্মায় তখন জ্বিনদের ৯ টা বাচ্চা হয়।
জ্বিনদের সাথে মানুষের বিয়ে
=================
জ্বিনের সাথে মানুষের বিয়ে হওয়া সম্ভব। তবে মাকরূহ। ইমাম সাঅলাবী (রাহঃ) বলেন, মানুষের ধারণা, বিয়ে এবং গর্ভ হওয়া মানুষ ও জ্বিন উভয়ের মধ্যে হতে পারে। পবিত্র কোরআনে বলা আছে, (আল্লাহ শয়তান কে উদ্দেশ্য করে বলেন ) তুই মানুষের সম্পদে ও সন্তানে শরীক হয় যা। (সুরা বনী ঈসরাইল)।
জ্বিন মানুষের সহজাত মিলনে সন্তানের নাম কী? “জ্বিন ও মানুষের মিলনে যে সন্তান হয় তার নাম ‘খুন্নাস’।“
• জ্বিন মানুষের মিলনে ছেলে হওয়ার ঘটনা (এ কোন বানোয়াট কাহিনী নয় হাদিস শুনাচ্ছি )।
=============================================
========
হযরত আবূ সাইদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি হযরত আলীর সাথে নাহরোয়ানে হুদুদিয়াদের হত্যাকার্যে সামিল হলাম। আলী (রাঃ) আমার কাছে ‘তালীদ’কে সন্ধান করলেন কিন্তু তাকে পেলাম না। তখন তিনি বললেন, তাকে খুঁজ। পরে তিনি নিজে তাকে খুজে বের করলেন।তারপর বললেন, “কে একে জান?” উপস্থিত ব্যক্তির মধ্যে একজন বলল, একে আমি জানি। এ “কাউস”। এর মা’ও আছেন। আলী তার মা’র কাছে একজন দূত পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এর বাপ কে? সে বলল, ‘আমি জানিনা, তবে এটুকু জানি যে, আমি অজ্ঞাতার যুগে আপন সম্প্রদায়ের বকরী-পাল চরাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার কাছে এক ছায়া মুর্তি এসে আমার সাথে যৌন-মিলন করে, যার দ্বারা আমার গর্ভ হয়। এ হল সেই গর্ভের সন্তান।

প্রত্যেক মুসলমানের ঘর-বাড়ির ছাদে মুসুলমান জ্বিন বাস করে
ইয়াজীদ বিন জাবির (তাবেঈ) বলেছেন, সকল মুসলমানের ঘরের ছাদে মুসলমান জ্বিনরা বসবাস করে। যখন বাড়ির মানুষদের জন্য খাবার তৈরী করে রাখা হয় তখন সংশ্লিষ্ট বাড়ির জ্বিনরা নেমে এসে তাদের সাথে আহার করে এবং যখন বাড়ির লোকদের রাতের খাবার দেওয়া হয় তখনও তারা নেমে এসে তাদের সাথে খাবারে শরিক হয়। এসব জ্বিনের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের খারাপ জ্বিন থেকে রক্ষা করেন।
• জ্বিনরা কী খায়
হযরত ওয়াহাব বিন মুনাব্বিহ (রাহঃ) বলেন, জ্বিন কয়েক প্রকার। এক প্রকার জ্বিন হল হাওয়া (হাওয়ায় মিশে থাকে)। ওরা খাওয়া-দাওয়া, বিয়ে-শাদী কিছুই করেনা এবং মারাও যায়না তাদের বাচ্চাও হয়না। আর এক প্রকার আছে যারা খাওয়া দাওয়া, বিয়ে-শাদী করে এবং মারা ও যায়।
হযরত আলকামাহ (রাহঃ) বলেছেন, আমি হযরত মাসউদ (রা)-কে নিবেদন করি, আপনাদের মধ্যে কেউ ‘লাইলাতুল জ্বিন’ (অর্থাৎ জ্বিনের রাত)-এ রাসুল (সাঃ)-এর সাথে ছিলেন কি?
উনি বললেন, ‘না’।কিন্ত এক রাতে আমরা তাকে মক্কায় অনুপস্থিত পেলাম। আমরা বললাম, হয়ত নবীজীকে কাফিররা ধরে ফেলেছে এবং তাকে গুম করে ফেলেছে। আমাদের ওই রাতটা খুব খারাপ অবস্থায় গেল। যখন সকাল হল, দেখা গেল নবীজী হেরা পর্বত হতে আস্তেছে। তারপর আমরা আমাদের গত রাতের উদ্বেগের কথা জানালাম। তিনি বললেন, একটি জ্বিন এসে আমাকে দাওয়াত দিয়েছিল, তাই আমি তাদের সাথে গিয়েছিলাম এবং তাদের কোরান পড়ে শুনালাম। এরপর নবীজী আমাদের নিয়ে গেলেন এবং জ্বিনদের নিদর্শন দেখালেন। ওদের আগুনের চিহ্ন দেখালেন। ওই জ্বিনরা হুজুরের কাছে সফরের সামান (বা পাথেয়) চাই। কেননা তারা ছিল এক দ্বীপের জ্বিন। তখন নবীজী তাদের বললেন, তোমাদের খাদ্য এমন সব হাড় যার প্রতি আল্লাহর নাম নেওয়া হয়ছে।
রাসুল (সাঃ) আরো বলেন, তোমরা এই দু’টো জিনিষ (হাড় ও গোবর) দিয়ে এস্তেঞ্জা করোনা। কেননা এগুলো হলো তোমাদের জ্বিন ভাইদের খোরাক।
জৈনক জ্বিনের আবেদন,
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি একবার রাসুলের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তার কাছে এক সাপ এল এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে গেল। আমি তাকে নবীজীর আরো কাছে করে দিলাম। সে রাসুলের পবিত্র কানের কাছে গিয়ে চুপিচুপি কিছু বলল। নবীজী বললেন ঠিক আছে। তারপর সাপটি চলে গেল। তখন ব্যাপারটি আমি জানতে চাইলে, হুজুর বলেন, সে ছিল জ্বিন। সে আমাকে বলে গেল, “আপনি আপনার উম্মতদের বলেদেন যে তারা যেন গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেঞ্জা না করে কেননা আল্লাহ ওই দু’টো জিনিষে আমাদের জন্য আহার্য রেখেছেন”।
• শয়তান খানা-পিনা করে বাম হাতে।
হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণীত, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আহার করে তারা যেন ডান হাত দিয়ে আহার করে এবং পান করার সময় ডান হাত দিয়ে পান করে, কেননা শয়তান বাম হাত দিয়ে আহার ও পান করে।
হুযাইফা (রাঃ) বলেন, রাসুল এর সঙ্গে যখন কোন খানার মজলিসে হাজির হতাম তখন তিনি শুরু করার আগে আমরা শুরু করতাম না। একবারের ঘটনা, আমারা খাওয়ার মজলিসে হাজীর আছি এমন সময় এক বেদুঈন এল। যেন তাকে কেউ খাবারের দিকে তারিয়ে এনেছে। সে এসে খাবারের দিকে হাত বাড়াল। নবীজী তার হাত ধরে ফেললেন এবং তাকে বসিয়ে দিল। তারপর একটি মেয়ে আসল তাকেও যেন কেউ হাকিয়ে এনেছে। মেয়েটিও এসে খাবারে হাত দিল এবং তার হাত ও ধরে ফেললেন হুজুর। তার পর তিনি বলেন, যে খাবারে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়না শয়তান সেই খাবার তার জন্য হালাল করে নেই। শয়তান এই বেদুঈনের সাথে খেতে এসেছিল আমি তার হাত ধরে ফেললাম তাই সে ওই মেয়েটির সাথে এল এবং এদের মাধ্যমে খাবারে ভাগ বসাতে চাইল। এর হাতও আমি ধরে ফেললাম। যার আয়ত্বে আমার জীবন সেই সত্তার কসম! এই দুজনের সাথে শয়তানের হাত ও (এখন) আমার মুঠোর মধ্যে।
হযরত আবু হুরাইরা বর্ণনা করেন, হুজুর ( সাঃ) বলেছেন, শয়তান তোমাদের সাথে সকল সময় সকল অবস্থায় বিদ্যমান থাকে, এমনকি খাওয়ার সময়ও। তাই তোমাদের মধ্যে খাদ্যের গ্রাস পড়ে গেলে তার ময়লা সাফ করে যেন তা খেয়ে নেই, যেন শয়তানের জন্য ছেড়ে না দেয়।
হযরত জাবির (রাঃ) শুনেছেন যে, হুজুর (সঃ) বলেন, যখন কোন মানুষ নিজের বাড়িতে প্রবেশ করার সময় এবং খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে, তখন শয়তান (অন্যান্য শয়তানের উদ্দেশে) বলে, তোমাদের জন্য এখানে থাকা খাওয়ার জন্য কোন অবকাশ নেই। কিন্তু কোন মানুষ যদি ঘরে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর নাম না নেই। তাহলে শয়তান বলে তোমরা জন্য রাতে থাকার ও সাঁঝে খাওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলে।

বর্ণনায় আকিল (রাহঃ)। আমাদের একটি বাড়ি ছিল। তাতে যখনি কোন লোক থাকত, সকালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যেত। একবার এক মরক্কোর লোক এল। ঘরটি তার পছন্দ হল এবং সে ভাড়া নিল। তারপর রাত কাটাল এবং সকালে দেখা গেল সে পুরোপুরি সুস্থ। তার কিছুই হয়নি। তা দেখে প্রতিবেশীরা অভাক। লোকটি বেশ কিছুকাল ছিল তারপর অন্যত্র চলে গেল। তাকে ওই ঘরের নিরাপদ থাকার কথা জিজ্ঞেস করা হলে সে বলল, আমি যখন সেই ঘরে থাকি তখন (প্রথম রাতে) ইশার নামাজ পড়েছি এবং কোরআন থেকে কিছু পড়েছি। তারপর দেখি এক যুবক কূপ থেকে উপরে উঠতেছে। সে আমাকে সালাম দিল। আমি তাকে দেখে ভয় পেলাম। সে বল, ভয় পেওনা আমাকেও কিছু কোরান পাঠ শেখাও। তারপর তাকে আমি কোরান শেখাই এবং জিজ্ঞেস করি এই ঘরের রহস্য কি? সে বলল, আমরা মুসলমান জ্বিন। আমরা কোরান পাঠও করি এবং নামাযও পড়ি। কিন্তু এই ঘরে বেশীর ভাগ সময় বদমাশ লোকেরা থাকে এবং মদের আসর বসায়। তাই আমরা তাদের গলা টিপে দিয়। আমি তাকে বললাম, তোমাকে আমি রাতে ভয় পায় তাই তুমি দিনের বেলায় এসো। সে বলল, খুব ভাল। তারপর থেকে সে দিনের বেলায় কুপ থেকে আসত। একবার সে কোরান পাঠ করতেছিল এমন সময় বাইরে এক ওঝা আসল এবং বলতেছে, “আমি সাপে কাটা, বদ নজর লাগা এবং জ্বিনে ধরা রোগের ঝাঁড়-ফোঁক করি”। তার কথা শুনে জ্বিনটি বলল, “সে কে?”। আমি বললাম ও হল ওঝা ঝাঁড়-ফোঁক করে। সে বলল তাকে ডাক। আমি উঠে তাকে ডেকে আনলাম। এসে দেখি, সে জ্বিনটি এক বিরাট সাপ হয়ে ঘরের ভিতরের ছাদে উঠে গেল। ওঝা এসে ঝাঁড়-ফুঁক করতেই সে ঝটপট করতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত ঘরের মেঝেই পড়ে গেল। তখন ওঝা তাকে ধরে ঝাঁপিতে ভরতে গেল আমি মানা করলাম। সে বলল, ‘তুমি আমাকে আমার শিকার ধরার কাজে বাধা দিচ্ছ’ তখন আমি তাকে একটা স্বর্ণ মুদ্রা দিলাম সে চলে গেল। তারপর সে অজগর নড়া-ছড়া করল এবং জ্বিন রূপে প্রকাশ ঘটল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কি হয়ছে? জ্বিন বলল, আমাকে ওই ওঝা পাক ইসমের মাধ্যমে শেষ করে ফেলেছে। আমি বাঁচব বলে আর বিশ্বাস হচ্ছেনা। যদি তুমি এই কুপ থেকে কোন চিৎকারের শব্দ শুনতে পাও তবে চলে যেও। সেই রাতে আমি এক আওয়াজ শুনতে পেলাম যে, “তুমি দূরে চলে যাও”। এরপর থেকে ওই ঘরে আর কেউ থাকত না।
আর এক সুন্দরী জ্বিন স্ত্রীর ঘটনা।
=======================
বর্ণনায় আল্লামা বাদরুদ্দীন শিবলী (রাহঃ)। জনাব কাযীউল ক্বযযাহ জালালুদ্দিন আহমেদ বিন ক্বাযীউল ক্বযযাহ হিসামুদ্দিন কাযী হানাফী বলেন, আমার পিতা আমাকে পরিবার পরিজন-বর্গকে প্রাচ্য হতে আনার জন্য সফরে পাঠান। যখন আমি বীরাহ নামক স্থান পার হলাম, বৃষ্টি আমাদের এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। আমি এক যাত্রী দলের সাথে ছিলাম। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি কেউ আমাকে জাগাচ্ছে। জেগে দেখি আমার কাছে মাঝারি উচ্ছতার এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তার চোখ ছিল একটা লম্বা-লম্বি ফাটলের মত। সে বলল তুমি ভয় পেওনা। আমি তোমার কাছে আমার চাঁদের মত মেয়েকে বিয়ে দিতে এসেছি। আমি ঘাবড়ে গিয়ে বললাম আল্লাহ ভালো করুন। তারপর দেখলাম কিছু মানুষ আমার দিকে আসছে। তাদের আকৃতিও ওই মহিলার মত। তাদের চোখেও লম্বা ফাটল আছে। তাদের সাথে এক কাযীও ছিল এবং সাক্ষীও। সুতরাং কাযী বিয়ের পয়গাম দিল এবং বিয়েও পড়িয়ে দিল যা আমি বাধ্য হয়ে কবুল করলাম। এবং ওরা যখন চলে গেল, তারপর মহিলা আমার কাছে আসল। এবার তার সাথে এক সুন্দরী মেয়েও ছিল। তার চোখও ছিল তার মায়ের মত ভয়ঙ্কর। মেয়েটির মা মেয়েকে আমার কাছে রেখে চলে গেল। তারপর আমার ভয় আরো বেড়ে গেল। আমি আমার সঙ্গীদের জাগাতে কাঁকর ছুঁড়ে মারলাম। কিন্তু উদের কেউ উঠল না। তখন অনুনয়-বিনয় করে আল্লাহর কাছে দুয়া করতে লাগলাম। পরে ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ার সময় এল। আমরা রওনা দিলাম কিন্তু মেয়েটি আমাকে ছাড়ল না। এই অবস্থায় তিন-দিন কেটে গেল। চারদিনের মাথায় মেয়ের মা এল এবং বলল, “সম্ভবত এই মেয়েকে তোমার পছন্দ হয়নি। তুমি মনে হয় এর থেকে বিচ্ছেদ চাইছ”। আমি বললাম, হ্যা আল্লাহর কসম। সে বলল, তবে একে তালাক দাও। আমি তাকে তালাক দিলে সে চলে গেল। পরে আমি তাকে আর কখনো দেখিনি।

Back to posts
Comments:

Post a comment

🌙আজকের হাদিস🌙
খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) সাহল (রাঃ) থেকে বর্নিত....

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ জান্নাতে রায়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) র পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাঁদের ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেওয়া হবে, সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তাঁরা ছাড়া আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাঁদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাতে এ দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে।

🏆Clash Of Clan Zone🏆
Tags: mzs, Quran

》●》জীনদের নিয়ে কিছু কথা.....new

জ্বিনদের আকৃতি বদলের রহস্য
কাযী আবু ইয়ালা হামবালী (রাহ) বলেনঃ জ্বিন ও শয়তানদের এমন কোন এখতিয়ার নেই যে তারা নিজেদের রূপ বদলাতে পারে এবং অন্যান্য রূপ ধারণ করবে; অবশ্য এ কথা ঠিক যে তাদেরকে আল্লাহ এমন কিছু বিশেষ কথা ও কাজ জানিয়ে দিয়েছেন যার ফলে তারা যখন সেই বিশেষ কথা ও কাজের প্রয়োগ ঘঠায় তখন তারা আল্লাহর ইচ্ছাই এক আকৃতি থেকে অন্য আকৃতিতে বদলে যায়।কিন্তু স্বয়ং নিজে থেকে জ্বিন ও শয়তান নিজেদের আকৃতি বদলানো অসম্ভব।কেননা নিজস্ব আকৃতি থেকে অন্য আকৃতি রূপান্তরিত করা মানে নিজের মূল উপাদান তথা অঙ্গপ্রত্যঙ্গকেও বদলে দেওয়া।এটা তাদের পক্ষে কিভাবে সম্ভব?
কাযী আবু ইয়ালা হাম্বলী আরো বলেন, ফিরিশতাদের বিভিন্ন রূপ ধারণের কেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
• জ্বিনরা কি কি রূপ নিতে পারেঃ
জ্বিনরা বহুরূপী হতে পারে, যেমন মানুষ, চতুষ্পদ পশু, সাপ, বিছে, উট, গরু, ছাগল, ঘোড়া, খচ্চর, গাধা ও বিভিন্ন পশু-পাখি প্রভৃতির আকার ধারণ করতে পারে।
• সাপ ও কুকুররাও এক প্রকার জ্বিন!
সাপ হল এক প্রকার রূপান্তরিত জ্বিন, যেমন বাদর ও শুকরে রূপান্তরিত হয়ছিল বনী-ইসরাইল।তবে জ্বিন সাপ গুলো হয় সাদা।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, কিছু কিছু কুকুররা এক প্রকার জ্বিন এবং এরা খুব দুর্বল জ্বিন।সুতরাং খাওয়ার সময় কোন কুকুর বসে গেলে তাকেও কিছু দেওয়া উচিত নাইলে তারিয়ে দেওয়া দরকার।কেননা তারো একটা প্রবৃত্তি (নফস) আছে।
হযরত আবু ক্বিলাবাহ হতে বর্ণীত, রাসুল (সাঃ) বলেনঃ যদি এই কুকুরগুলা এক প্রকার সৃষ্টিজীব না হত তাহলে এগুলোকে কতল করে দিতাম।কিন্তু কোন মাখলূককে বিলিন করতে আমার ভয় হয়।তবে তোমরা এদের মধ্যে সমস্ত কালো কুকুর গুলোকে মেরে ফেলবে।কারণ এগুলো এক প্রকার শয়তান।
রাসুল আরো বলেন, নামাজীর সামনে দিয়ে কালো কুকুর গেলে নামাজ ভেঙ্গে যায়।সাহাবীরা এ ব্যাপারে আরজ করল যে, "জনাব, লাল ও সাদা কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের কি দোষ?" উত্তরে রাসুল বলল, কালো কুকুর হল এক প্রকার শয়তান।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, জ্বিনরা তিন প্রকার-এক প্রকার জ্বিন হল, সাপ, বিছে, কুকুর ও পোকা-মাকড়।দ্বিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যারা হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়।এবং তিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যাদের পরকালের জন্য হিসাব-নিকাশ ও পুরষ্কার ও আযাব আছে।
আল্লামা সুহাইলী (রাহ) বলেন, শেষ প্রকারের জ্বিনরাই নিজেদের রূপ বদলাতে পারে।
কাযী আবু বকর বাকেলানী (রাহ) বলেন, আমি বলছি যারা জ্বিন দেখেছেন তারা সত্যি দেখেছেন।কেননা আল্লাহ জ্বিনদের দৃশ্যরূপ সৃষ্টি করেন এবং এরা বিভিন্ন আকৃতির ও কোমল দেহ বিশিষ্ট হয়।
• জ্বিন হল আগুনের সৃষ্টি
পবিত্র কোরানে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি আদমের আগে জ্বিনকে সৃষ্টি করি ‘লূ’এর আগুন (অর্থাৎ অত্যন্ত সূক্ষ্ম হওয়ার জন্য অতুষ্ণ বায়ুতে পরিণত হয়েছে এমন আগুন) দিয়ে

জ্বিনজাতি সৃষ্টি হয়ছে যেদিন।
হযরত আবু আলিয়ার বর্ণনাঃ আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেন বুধবার, জ্বিনকে সৃষ্টি করেন বৃহস্পতিবার এবং আদমকে সৃষ্টি করেন শুক্রবার।
=============================
কার আগে কে সৃষ্টি
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলা যার – আগে যাকে সৃষ্টি করেন।
জান্নাতকে - জাহান্নামের আগে
আপন রহমতকে - গযবের আগে
আসমানকে - যমীনের আগে
সূর্য ও চাঁদকে - নক্ষত্রের আগে
দিনকে - রাতের আগে
পানিভাগকে - স্থলভাগের আগে
সমভুমিকে - পাহাড়-পর্বতের আগে
ফিরিশতাদেরকে - জ্বিনদের আগে
জ্বিনজাতিকে - মানবজাতির আগে
এবং
পুরুষ জাতিকে - স্ত্রী জাতির আগে
======================
আদি জ্বিনের আকাংক্ষা
=============
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা আবূল জ্বিন্নাত বা জ্বিন জাতির আদিপিতা “সামূম”কে আগুনের শিখা দিয়ে সৃষ্টি করার পর বলেন,তুমি কিছু কামনা কর।সে বলল, “আমার কামনা হল, আমরা সবাইকে দেখব কিন্তু আমাদের যেন কেউ না দেখে এবং আমাদের বৃদ্ধরা যেন জোয়ান হয়ে মারা যায়।আল্লাহ তার এই কামনা কবুল করলেন তাই জ্বিনরা অদৃশ্য এবং মারা গেলে জোয়ান হয়ে মারা যায়।
==============================
জ্বিনেরা পৃথিবীতে বাস করত মানুষের আগেঃ
==============================
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, জ্বিনেরা পৃথিবীতে এবং ফিরিশ্তারা আসমানে বাস করত।প্রত্যেক আসমানের আলাদা আলাদা ফিরিশতা থাকত এবং আসমানের বাসিন্দাদের জন্য আলাদা আলাদা নামাজ-দোয়া ছিল।মূলত এরাই ছিল আসমান ও জমিনের বাসিন্দা
জ্বিনদের সৃষ্টি আদমের (আঃ) ২০০০ বছর আগে
=========================
ইবলীস পৃথিবীতে বাস করছে যবে থেকে!
=========================
জুওয়াইবির ও উসমান (রাঃ)নিজেদের সনদ সহকারে বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করার পর তাদেরকে পৃথিবীতে বাস করার জন্য নির্দেশ দেন।ওরা পৃথিবীতে আল্লাহর একান্ত অনুগত হয়ে চলতে লাগল।অবশেষে দীর্ঘকাল কেটে যাবার পর, ওরা আল্লাহর অবাধ্যতা শুরু করে দিল এবং খুন খারাবী করতে লাগল।তাদের এক বাদশাহ ছিল, যার নাম ছিল ইউসুফ।
তাকে ও তারা মেরে ফেলল।তকন আল্লাহ তাদের ওপর দ্বিতীয় আসমানের ফেরেশতাদের এক বাহিনী পাঠালেন।তাদের মধ্যে ইবলীসও ছিল।ইবলিস ছিল ৪০০০ জনের সর্দার।সে আসমান থেকে নেমে এসে জমিনের সমস্ত জ্বিন সন্তানদের হত্যা করল এবং বাকিদের মেরে কেটে সমুদ্রের দ্বীপগুলোর দিকে তারিয়ে দিল।তখন ইবলীস তার বাহিনী সমেত এই জমিনেই থাকতে লাগল।তেদের পক্ষে আল্লাহর বিধি-বিদ্বান মেনে চলা খুব সহজ হয় গেল এবং তারা পৃথিবীতে বসবাস করাকে পছন্দ করল।


হিজড়ারা জম্মায় কেমন করে?
---------------------
হযরত ইবনে আব্বাস (রা)বলেন হিজড়ারা জ্বিনদের সন্তান।
কোন এক ব্যাক্তি আব্বাস (রা) কে জিজ্ঞেস করে এমনটা কেমন করে হয়?
উত্তরে তিনি বলেন আল্লাহ ও তার রাসুল (সা) নিষেধ করেছেন যে মানুষ যেন তার স্ত্রীর সাথে মাসিক স্রাব চলাকালিন যৌনসঙ্গম না করে।স্ত্রী লোকের ঋতুস্রাব চলাকালীন যৌন সঙ্গম করলে শয়তান তার আগে আগে থাকে এবং শয়তানের দ্বারা ঔ মহিলা গর্ববতী হয় এবং হিজড়া সন্তান প্রসব করে।
শয়তান জ্বিন মানুষের সন্তানে শরীক হয় যেভাবেঃ হযরত মুজাহিদ (রাহ) বলেন, মানুষ তার স্ত্রীর সাথে যৌনমিলন করার আগে “বিসমিল্লাহ” না পড়লে জ্বিন তার প্রস্রাবের ছিদ্র পথের সাথে জড়িয়ে যায় এবং সেও সেই পুরুষের সাথে যৌনমিলনে অংশ নেই।
এর থেকে বাঁচতে হলে মিলনের আগে এই দুয়া পড়তে হবে, “আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইত্ব-না অজান্নিবাশ শাইত্ব-না মা রাযাকতান”
=============================================
================
জ্বিন শব্দের অর্থ ও পরিচিত
হযরত ইবনে দুরাইদ (রাহ) বলেন জ্বিন হল মানব জাতি হতে আলাদা একটি জাতি বা সৃষ্টি।জ্বিন শব্দের অর্থ গুপ্ত অদৃশ্য বা লোক্কায়িত।
জ্বিন কারাঃ হযরত আবু উমর আয যাহিদ বলেন, জিন্নাত বা জ্বিন জাতির কুকুর বা ইতর শ্রেণীকে বলা হয় জ্বিন।
জ্বান কারাঃ হযরত জাওহরি বলেন, জ্বান হল জ্বিনের আদি পিতা বা আবুল জ্বিন।
শয়তান কারাঃ আল্লামা ইবনে আকিল বলেন, শয়তান হল এক প্রকার জ্বিন যারা আল্লাহর অবাধ্য ইবলীশের বংশধর।
মারাদা কারাঃ আল্লামা আকিলের মতে মারাদা হল, জ্বিন জাতির মধ্যে যারা চরম অবাধ্য।
জ্বিন জাতির শ্রেণী বিভাগঃ
১-জ্বিনঃ অর্থাৎ সাধারণ জ্বিন
২-আমিরঃ (বহু বচনে উম্মার) যারা মানুষের সাথে থাকে
৩-আরওয়াহ যারা মানুষের সামনে আসে
৪-শয়তানঃ উদ্ধত অবাধ্য
৫-ইফরীত্ব যা শয়তানের চেয়েও বিপদ জনক


• সাবার রাণী [সুলাইমান (আঃ)-এর বিবি] বিলকিসের মা ছিল জ্বিন।
*******************************************
কথিত আছেঃ বিলকিসের মা-বাপের মধ্যে একজন ছিল জ্বিন। ইবনুল কালবী বলেন, বিলকিসের বাপ জ্বিনদের মেয়েকে বিয়ে করে ছিল। যার নাম ছিল, “রেহান বিন্তে সুকুন” এরই গর্ভে বিলকিসের জন্ম হয়। এর নাম রাখাআ হয় ‘বিলকিমাহ’। বর্ণীত আছে যে বিলকিসের পায়ের সামনে ছিল চতুষ্পদ জন্তুর খুরের মত এবং তার গোরালীতে লোম ও ছিল। হযরত সুলাইমান (আঃ) তাকে বিয়ে করেছিল এবং শয়তানদের নির্দেশ দিয়েছিল, তোমরা গোসল খানা এবং লোম-বিন্নাশক পাউডার বানাও।
আবু হুরাইরা হতে বর্ণীত রাসুল (সাঃ) বলেন, বিলকিস-এর পিতা-মাতা’র মধ্যে একজন ছিল জ্বিন।
• জ্বিনদের বিয়ে-শাদী ও বংশধারা
********************
কোরআন থেকে প্রমাণ
“ইতোপুর্বে ও (অনত-নয়না স্বর্গ সুন্দরী, হুর)-দের কাছে না কোন মানুষ গিয়েছে না কোন জ্বিন। (আর রাহমান) এই আয়াত থেকে বুঝা গেল যে, জ্বিনরা যৌনমিলনও করে।
জ্বিনদের জন্মহার অনেক বেশী।
==================
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহ মানব জাতি ও জ্বিন জাতকে ১০ ভাগে ভাগ করেছেন। তার মধ্যে ৯ ভাগ জ্বিন এক ভাগ মানুষ। যখন একটি মানব শিশু জন্মায় তখন জ্বিনদের ৯ টা বাচ্চা হয়।
জ্বিনদের সাথে মানুষের বিয়ে
=================
জ্বিনের সাথে মানুষের বিয়ে হওয়া সম্ভব। তবে মাকরূহ। ইমাম সাঅলাবী (রাহঃ) বলেন, মানুষের ধারণা, বিয়ে এবং গর্ভ হওয়া মানুষ ও জ্বিন উভয়ের মধ্যে হতে পারে। পবিত্র কোরআনে বলা আছে, (আল্লাহ শয়তান কে উদ্দেশ্য করে বলেন ) তুই মানুষের সম্পদে ও সন্তানে শরীক হয় যা। (সুরা বনী ঈসরাইল)।
জ্বিন মানুষের সহজাত মিলনে সন্তানের নাম কী? “জ্বিন ও মানুষের মিলনে যে সন্তান হয় তার নাম ‘খুন্নাস’।“
• জ্বিন মানুষের মিলনে ছেলে হওয়ার ঘটনা (এ কোন বানোয়াট কাহিনী নয় হাদিস শুনাচ্ছি )।
=============================================
========
হযরত আবূ সাইদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি হযরত আলীর সাথে নাহরোয়ানে হুদুদিয়াদের হত্যাকার্যে সামিল হলাম। আলী (রাঃ) আমার কাছে ‘তালীদ’কে সন্ধান করলেন কিন্তু তাকে পেলাম না। তখন তিনি বললেন, তাকে খুঁজ। পরে তিনি নিজে তাকে খুজে বের করলেন।তারপর বললেন, “কে একে জান?” উপস্থিত ব্যক্তির মধ্যে একজন বলল, একে আমি জানি। এ “কাউস”। এর মা’ও আছেন। আলী তার মা’র কাছে একজন দূত পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এর বাপ কে? সে বলল, ‘আমি জানিনা, তবে এটুকু জানি যে, আমি অজ্ঞাতার যুগে আপন সম্প্রদায়ের বকরী-পাল চরাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার কাছে এক ছায়া মুর্তি এসে আমার সাথে যৌন-মিলন করে, যার দ্বারা আমার গর্ভ হয়। এ হল সেই গর্ভের সন্তান।

প্রত্যেক মুসলমানের ঘর-বাড়ির ছাদে মুসুলমান জ্বিন বাস করে
ইয়াজীদ বিন জাবির (তাবেঈ) বলেছেন, সকল মুসলমানের ঘরের ছাদে মুসলমান জ্বিনরা বসবাস করে। যখন বাড়ির মানুষদের জন্য খাবার তৈরী করে রাখা হয় তখন সংশ্লিষ্ট বাড়ির জ্বিনরা নেমে এসে তাদের সাথে আহার করে এবং যখন বাড়ির লোকদের রাতের খাবার দেওয়া হয় তখনও তারা নেমে এসে তাদের সাথে খাবারে শরিক হয়। এসব জ্বিনের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের খারাপ জ্বিন থেকে রক্ষা করেন।
• জ্বিনরা কী খায়
হযরত ওয়াহাব বিন মুনাব্বিহ (রাহঃ) বলেন, জ্বিন কয়েক প্রকার। এক প্রকার জ্বিন হল হাওয়া (হাওয়ায় মিশে থাকে)। ওরা খাওয়া-দাওয়া, বিয়ে-শাদী কিছুই করেনা এবং মারাও যায়না তাদের বাচ্চাও হয়না। আর এক প্রকার আছে যারা খাওয়া দাওয়া, বিয়ে-শাদী করে এবং মারা ও যায়।
হযরত আলকামাহ (রাহঃ) বলেছেন, আমি হযরত মাসউদ (রা)-কে নিবেদন করি, আপনাদের মধ্যে কেউ ‘লাইলাতুল জ্বিন’ (অর্থাৎ জ্বিনের রাত)-এ রাসুল (সাঃ)-এর সাথে ছিলেন কি?
উনি বললেন, ‘না’।কিন্ত এক রাতে আমরা তাকে মক্কায় অনুপস্থিত পেলাম। আমরা বললাম, হয়ত নবীজীকে কাফিররা ধরে ফেলেছে এবং তাকে গুম করে ফেলেছে। আমাদের ওই রাতটা খুব খারাপ অবস্থায় গেল। যখন সকাল হল, দেখা গেল নবীজী হেরা পর্বত হতে আস্তেছে। তারপর আমরা আমাদের গত রাতের উদ্বেগের কথা জানালাম। তিনি বললেন, একটি জ্বিন এসে আমাকে দাওয়াত দিয়েছিল, তাই আমি তাদের সাথে গিয়েছিলাম এবং তাদের কোরান পড়ে শুনালাম। এরপর নবীজী আমাদের নিয়ে গেলেন এবং জ্বিনদের নিদর্শন দেখালেন। ওদের আগুনের চিহ্ন দেখালেন। ওই জ্বিনরা হুজুরের কাছে সফরের সামান (বা পাথেয়) চাই। কেননা তারা ছিল এক দ্বীপের জ্বিন। তখন নবীজী তাদের বললেন, তোমাদের খাদ্য এমন সব হাড় যার প্রতি আল্লাহর নাম নেওয়া হয়ছে।
রাসুল (সাঃ) আরো বলেন, তোমরা এই দু’টো জিনিষ (হাড় ও গোবর) দিয়ে এস্তেঞ্জা করোনা। কেননা এগুলো হলো তোমাদের জ্বিন ভাইদের খোরাক।
জৈনক জ্বিনের আবেদন,
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি একবার রাসুলের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তার কাছে এক সাপ এল এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে গেল। আমি তাকে নবীজীর আরো কাছে করে দিলাম। সে রাসুলের পবিত্র কানের কাছে গিয়ে চুপিচুপি কিছু বলল। নবীজী বললেন ঠিক আছে। তারপর সাপটি চলে গেল। তখন ব্যাপারটি আমি জানতে চাইলে, হুজুর বলেন, সে ছিল জ্বিন। সে আমাকে বলে গেল, “আপনি আপনার উম্মতদের বলেদেন যে তারা যেন গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেঞ্জা না করে কেননা আল্লাহ ওই দু’টো জিনিষে আমাদের জন্য আহার্য রেখেছেন”।
• শয়তান খানা-পিনা করে বাম হাতে।
হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণীত, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আহার করে তারা যেন ডান হাত দিয়ে আহার করে এবং পান করার সময় ডান হাত দিয়ে পান করে, কেননা শয়তান বাম হাত দিয়ে আহার ও পান করে।
হুযাইফা (রাঃ) বলেন, রাসুল এর সঙ্গে যখন কোন খানার মজলিসে হাজির হতাম তখন তিনি শুরু করার আগে আমরা শুরু করতাম না। একবারের ঘটনা, আমারা খাওয়ার মজলিসে হাজীর আছি এমন সময় এক বেদুঈন এল। যেন তাকে কেউ খাবারের দিকে তারিয়ে এনেছে। সে এসে খাবারের দিকে হাত বাড়াল। নবীজী তার হাত ধরে ফেললেন এবং তাকে বসিয়ে দিল। তারপর একটি মেয়ে আসল তাকেও যেন কেউ হাকিয়ে এনেছে। মেয়েটিও এসে খাবারে হাত দিল এবং তার হাত ও ধরে ফেললেন হুজুর। তার পর তিনি বলেন, যে খাবারে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়না শয়তান সেই খাবার তার জন্য হালাল করে নেই। শয়তান এই বেদুঈনের সাথে খেতে এসেছিল আমি তার হাত ধরে ফেললাম তাই সে ওই মেয়েটির সাথে এল এবং এদের মাধ্যমে খাবারে ভাগ বসাতে চাইল। এর হাতও আমি ধরে ফেললাম। যার আয়ত্বে আমার জীবন সেই সত্তার কসম! এই দুজনের সাথে শয়তানের হাত ও (এখন) আমার মুঠোর মধ্যে।
হযরত আবু হুরাইরা বর্ণনা করেন, হুজুর ( সাঃ) বলেছেন, শয়তান তোমাদের সাথে সকল সময় সকল অবস্থায় বিদ্যমান থাকে, এমনকি খাওয়ার সময়ও। তাই তোমাদের মধ্যে খাদ্যের গ্রাস পড়ে গেলে তার ময়লা সাফ করে যেন তা খেয়ে নেই, যেন শয়তানের জন্য ছেড়ে না দেয়।
হযরত জাবির (রাঃ) শুনেছেন যে, হুজুর (সঃ) বলেন, যখন কোন মানুষ নিজের বাড়িতে প্রবেশ করার সময় এবং খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে, তখন শয়তান (অন্যান্য শয়তানের উদ্দেশে) বলে, তোমাদের জন্য এখানে থাকা খাওয়ার জন্য কোন অবকাশ নেই। কিন্তু কোন মানুষ যদি ঘরে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর নাম না নেই। তাহলে শয়তান বলে তোমরা জন্য রাতে থাকার ও সাঁঝে খাওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলে।

বর্ণনায় আকিল (রাহঃ)। আমাদের একটি বাড়ি ছিল। তাতে যখনি কোন লোক থাকত, সকালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যেত। একবার এক মরক্কোর লোক এল। ঘরটি তার পছন্দ হল এবং সে ভাড়া নিল। তারপর রাত কাটাল এবং সকালে দেখা গেল সে পুরোপুরি সুস্থ। তার কিছুই হয়নি। তা দেখে প্রতিবেশীরা অভাক। লোকটি বেশ কিছুকাল ছিল তারপর অন্যত্র চলে গেল। তাকে ওই ঘরের নিরাপদ থাকার কথা জিজ্ঞেস করা হলে সে বলল, আমি যখন সেই ঘরে থাকি তখন (প্রথম রাতে) ইশার নামাজ পড়েছি এবং কোরআন থেকে কিছু পড়েছি। তারপর দেখি এক যুবক কূপ থেকে উপরে উঠতেছে। সে আমাকে সালাম দিল। আমি তাকে দেখে ভয় পেলাম। সে বল, ভয় পেওনা আমাকেও কিছু কোরান পাঠ শেখাও। তারপর তাকে আমি কোরান শেখাই এবং জিজ্ঞেস করি এই ঘরের রহস্য কি? সে বলল, আমরা মুসলমান জ্বিন। আমরা কোরান পাঠও করি এবং নামাযও পড়ি। কিন্তু এই ঘরে বেশীর ভাগ সময় বদমাশ লোকেরা থাকে এবং মদের আসর বসায়। তাই আমরা তাদের গলা টিপে দিয়। আমি তাকে বললাম, তোমাকে আমি রাতে ভয় পায় তাই তুমি দিনের বেলায় এসো। সে বলল, খুব ভাল। তারপর থেকে সে দিনের বেলায় কুপ থেকে আসত। একবার সে কোরান পাঠ করতেছিল এমন সময় বাইরে এক ওঝা আসল এবং বলতেছে, “আমি সাপে কাটা, বদ নজর লাগা এবং জ্বিনে ধরা রোগের ঝাঁড়-ফোঁক করি”। তার কথা শুনে জ্বিনটি বলল, “সে কে?”। আমি বললাম ও হল ওঝা ঝাঁড়-ফোঁক করে। সে বলল তাকে ডাক। আমি উঠে তাকে ডেকে আনলাম। এসে দেখি, সে জ্বিনটি এক বিরাট সাপ হয়ে ঘরের ভিতরের ছাদে উঠে গেল। ওঝা এসে ঝাঁড়-ফুঁক করতেই সে ঝটপট করতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত ঘরের মেঝেই পড়ে গেল। তখন ওঝা তাকে ধরে ঝাঁপিতে ভরতে গেল আমি মানা করলাম। সে বলল, ‘তুমি আমাকে আমার শিকার ধরার কাজে বাধা দিচ্ছ’ তখন আমি তাকে একটা স্বর্ণ মুদ্রা দিলাম সে চলে গেল। তারপর সে অজগর নড়া-ছড়া করল এবং জ্বিন রূপে প্রকাশ ঘটল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কি হয়ছে? জ্বিন বলল, আমাকে ওই ওঝা পাক ইসমের মাধ্যমে শেষ করে ফেলেছে। আমি বাঁচব বলে আর বিশ্বাস হচ্ছেনা। যদি তুমি এই কুপ থেকে কোন চিৎকারের শব্দ শুনতে পাও তবে চলে যেও। সেই রাতে আমি এক আওয়াজ শুনতে পেলাম যে, “তুমি দূরে চলে যাও”। এরপর থেকে ওই ঘরে আর কেউ থাকত না।
আর এক সুন্দরী জ্বিন স্ত্রীর ঘটনা।
=======================
বর্ণনায় আল্লামা বাদরুদ্দীন শিবলী (রাহঃ)। জনাব কাযীউল ক্বযযাহ জালালুদ্দিন আহমেদ বিন ক্বাযীউল ক্বযযাহ হিসামুদ্দিন কাযী হানাফী বলেন, আমার পিতা আমাকে পরিবার পরিজন-বর্গকে প্রাচ্য হতে আনার জন্য সফরে পাঠান। যখন আমি বীরাহ নামক স্থান পার হলাম, বৃষ্টি আমাদের এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। আমি এক যাত্রী দলের সাথে ছিলাম। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি কেউ আমাকে জাগাচ্ছে। জেগে দেখি আমার কাছে মাঝারি উচ্ছতার এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তার চোখ ছিল একটা লম্বা-লম্বি ফাটলের মত। সে বলল তুমি ভয় পেওনা। আমি তোমার কাছে আমার চাঁদের মত মেয়েকে বিয়ে দিতে এসেছি। আমি ঘাবড়ে গিয়ে বললাম আল্লাহ ভালো করুন। তারপর দেখলাম কিছু মানুষ আমার দিকে আসছে। তাদের আকৃতিও ওই মহিলার মত। তাদের চোখেও লম্বা ফাটল আছে। তাদের সাথে এক কাযীও ছিল এবং সাক্ষীও। সুতরাং কাযী বিয়ের পয়গাম দিল এবং বিয়েও পড়িয়ে দিল যা আমি বাধ্য হয়ে কবুল করলাম। এবং ওরা যখন চলে গেল, তারপর মহিলা আমার কাছে আসল। এবার তার সাথে এক সুন্দরী মেয়েও ছিল। তার চোখও ছিল তার মায়ের মত ভয়ঙ্কর। মেয়েটির মা মেয়েকে আমার কাছে রেখে চলে গেল। তারপর আমার ভয় আরো বেড়ে গেল। আমি আমার সঙ্গীদের জাগাতে কাঁকর ছুঁড়ে মারলাম। কিন্তু উদের কেউ উঠল না। তখন অনুনয়-বিনয় করে আল্লাহর কাছে দুয়া করতে লাগলাম। পরে ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ার সময় এল। আমরা রওনা দিলাম কিন্তু মেয়েটি আমাকে ছাড়ল না। এই অবস্থায় তিন-দিন কেটে গেল। চারদিনের মাথায় মেয়ের মা এল এবং বলল, “সম্ভবত এই মেয়েকে তোমার পছন্দ হয়নি। তুমি মনে হয় এর থেকে বিচ্ছেদ চাইছ”। আমি বললাম, হ্যা আল্লাহর কসম। সে বলল, তবে একে তালাক দাও। আমি তাকে তালাক দিলে সে চলে গেল। পরে আমি তাকে আর কখনো দেখিনি।

Back to posts
Comments:

Post a comment

📰বাংলাদেশের সকল পত্রিকা📰
»দৈনিক আমার দেশ 📰
»ময়মনসিংহ বার্তা 📰
»আলোকিত ময়মনসিংহ 📰
»ICT নিউজ 📰
»টেকটিউনস্ 📰
»সময় নিউজ 📰
»দৈনিক সংবাদ 📰
🌏অন্য রকম খবর🌏
Tags: mzs, Quran

》●》জীনদের নিয়ে কিছু কথা.....new

জ্বিনদের আকৃতি বদলের রহস্য
কাযী আবু ইয়ালা হামবালী (রাহ) বলেনঃ জ্বিন ও শয়তানদের এমন কোন এখতিয়ার নেই যে তারা নিজেদের রূপ বদলাতে পারে এবং অন্যান্য রূপ ধারণ করবে; অবশ্য এ কথা ঠিক যে তাদেরকে আল্লাহ এমন কিছু বিশেষ কথা ও কাজ জানিয়ে দিয়েছেন যার ফলে তারা যখন সেই বিশেষ কথা ও কাজের প্রয়োগ ঘঠায় তখন তারা আল্লাহর ইচ্ছাই এক আকৃতি থেকে অন্য আকৃতিতে বদলে যায়।কিন্তু স্বয়ং নিজে থেকে জ্বিন ও শয়তান নিজেদের আকৃতি বদলানো অসম্ভব।কেননা নিজস্ব আকৃতি থেকে অন্য আকৃতি রূপান্তরিত করা মানে নিজের মূল উপাদান তথা অঙ্গপ্রত্যঙ্গকেও বদলে দেওয়া।এটা তাদের পক্ষে কিভাবে সম্ভব?
কাযী আবু ইয়ালা হাম্বলী আরো বলেন, ফিরিশতাদের বিভিন্ন রূপ ধারণের কেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
• জ্বিনরা কি কি রূপ নিতে পারেঃ
জ্বিনরা বহুরূপী হতে পারে, যেমন মানুষ, চতুষ্পদ পশু, সাপ, বিছে, উট, গরু, ছাগল, ঘোড়া, খচ্চর, গাধা ও বিভিন্ন পশু-পাখি প্রভৃতির আকার ধারণ করতে পারে।
• সাপ ও কুকুররাও এক প্রকার জ্বিন!
সাপ হল এক প্রকার রূপান্তরিত জ্বিন, যেমন বাদর ও শুকরে রূপান্তরিত হয়ছিল বনী-ইসরাইল।তবে জ্বিন সাপ গুলো হয় সাদা।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, কিছু কিছু কুকুররা এক প্রকার জ্বিন এবং এরা খুব দুর্বল জ্বিন।সুতরাং খাওয়ার সময় কোন কুকুর বসে গেলে তাকেও কিছু দেওয়া উচিত নাইলে তারিয়ে দেওয়া দরকার।কেননা তারো একটা প্রবৃত্তি (নফস) আছে।
হযরত আবু ক্বিলাবাহ হতে বর্ণীত, রাসুল (সাঃ) বলেনঃ যদি এই কুকুরগুলা এক প্রকার সৃষ্টিজীব না হত তাহলে এগুলোকে কতল করে দিতাম।কিন্তু কোন মাখলূককে বিলিন করতে আমার ভয় হয়।তবে তোমরা এদের মধ্যে সমস্ত কালো কুকুর গুলোকে মেরে ফেলবে।কারণ এগুলো এক প্রকার শয়তান।
রাসুল আরো বলেন, নামাজীর সামনে দিয়ে কালো কুকুর গেলে নামাজ ভেঙ্গে যায়।সাহাবীরা এ ব্যাপারে আরজ করল যে, "জনাব, লাল ও সাদা কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের কি দোষ?" উত্তরে রাসুল বলল, কালো কুকুর হল এক প্রকার শয়তান।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, জ্বিনরা তিন প্রকার-এক প্রকার জ্বিন হল, সাপ, বিছে, কুকুর ও পোকা-মাকড়।দ্বিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যারা হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়।এবং তিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যাদের পরকালের জন্য হিসাব-নিকাশ ও পুরষ্কার ও আযাব আছে।
আল্লামা সুহাইলী (রাহ) বলেন, শেষ প্রকারের জ্বিনরাই নিজেদের রূপ বদলাতে পারে।
কাযী আবু বকর বাকেলানী (রাহ) বলেন, আমি বলছি যারা জ্বিন দেখেছেন তারা সত্যি দেখেছেন।কেননা আল্লাহ জ্বিনদের দৃশ্যরূপ সৃষ্টি করেন এবং এরা বিভিন্ন আকৃতির ও কোমল দেহ বিশিষ্ট হয়।
• জ্বিন হল আগুনের সৃষ্টি
পবিত্র কোরানে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি আদমের আগে জ্বিনকে সৃষ্টি করি ‘লূ’এর আগুন (অর্থাৎ অত্যন্ত সূক্ষ্ম হওয়ার জন্য অতুষ্ণ বায়ুতে পরিণত হয়েছে এমন আগুন) দিয়ে

জ্বিনজাতি সৃষ্টি হয়ছে যেদিন।
হযরত আবু আলিয়ার বর্ণনাঃ আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেন বুধবার, জ্বিনকে সৃষ্টি করেন বৃহস্পতিবার এবং আদমকে সৃষ্টি করেন শুক্রবার।
=============================
কার আগে কে সৃষ্টি
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলা যার – আগে যাকে সৃষ্টি করেন।
জান্নাতকে - জাহান্নামের আগে
আপন রহমতকে - গযবের আগে
আসমানকে - যমীনের আগে
সূর্য ও চাঁদকে - নক্ষত্রের আগে
দিনকে - রাতের আগে
পানিভাগকে - স্থলভাগের আগে
সমভুমিকে - পাহাড়-পর্বতের আগে
ফিরিশতাদেরকে - জ্বিনদের আগে
জ্বিনজাতিকে - মানবজাতির আগে
এবং
পুরুষ জাতিকে - স্ত্রী জাতির আগে
======================
আদি জ্বিনের আকাংক্ষা
=============
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা আবূল জ্বিন্নাত বা জ্বিন জাতির আদিপিতা “সামূম”কে আগুনের শিখা দিয়ে সৃষ্টি করার পর বলেন,তুমি কিছু কামনা কর।সে বলল, “আমার কামনা হল, আমরা সবাইকে দেখব কিন্তু আমাদের যেন কেউ না দেখে এবং আমাদের বৃদ্ধরা যেন জোয়ান হয়ে মারা যায়।আল্লাহ তার এই কামনা কবুল করলেন তাই জ্বিনরা অদৃশ্য এবং মারা গেলে জোয়ান হয়ে মারা যায়।
==============================
জ্বিনেরা পৃথিবীতে বাস করত মানুষের আগেঃ
==============================
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, জ্বিনেরা পৃথিবীতে এবং ফিরিশ্তারা আসমানে বাস করত।প্রত্যেক আসমানের আলাদা আলাদা ফিরিশতা থাকত এবং আসমানের বাসিন্দাদের জন্য আলাদা আলাদা নামাজ-দোয়া ছিল।মূলত এরাই ছিল আসমান ও জমিনের বাসিন্দা
জ্বিনদের সৃষ্টি আদমের (আঃ) ২০০০ বছর আগে
=========================
ইবলীস পৃথিবীতে বাস করছে যবে থেকে!
=========================
জুওয়াইবির ও উসমান (রাঃ)নিজেদের সনদ সহকারে বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করার পর তাদেরকে পৃথিবীতে বাস করার জন্য নির্দেশ দেন।ওরা পৃথিবীতে আল্লাহর একান্ত অনুগত হয়ে চলতে লাগল।অবশেষে দীর্ঘকাল কেটে যাবার পর, ওরা আল্লাহর অবাধ্যতা শুরু করে দিল এবং খুন খারাবী করতে লাগল।তাদের এক বাদশাহ ছিল, যার নাম ছিল ইউসুফ।
তাকে ও তারা মেরে ফেলল।তকন আল্লাহ তাদের ওপর দ্বিতীয় আসমানের ফেরেশতাদের এক বাহিনী পাঠালেন।তাদের মধ্যে ইবলীসও ছিল।ইবলিস ছিল ৪০০০ জনের সর্দার।সে আসমান থেকে নেমে এসে জমিনের সমস্ত জ্বিন সন্তানদের হত্যা করল এবং বাকিদের মেরে কেটে সমুদ্রের দ্বীপগুলোর দিকে তারিয়ে দিল।তখন ইবলীস তার বাহিনী সমেত এই জমিনেই থাকতে লাগল।তেদের পক্ষে আল্লাহর বিধি-বিদ্বান মেনে চলা খুব সহজ হয় গেল এবং তারা পৃথিবীতে বসবাস করাকে পছন্দ করল।


হিজড়ারা জম্মায় কেমন করে?
---------------------
হযরত ইবনে আব্বাস (রা)বলেন হিজড়ারা জ্বিনদের সন্তান।
কোন এক ব্যাক্তি আব্বাস (রা) কে জিজ্ঞেস করে এমনটা কেমন করে হয়?
উত্তরে তিনি বলেন আল্লাহ ও তার রাসুল (সা) নিষেধ করেছেন যে মানুষ যেন তার স্ত্রীর সাথে মাসিক স্রাব চলাকালিন যৌনসঙ্গম না করে।স্ত্রী লোকের ঋতুস্রাব চলাকালীন যৌন সঙ্গম করলে শয়তান তার আগে আগে থাকে এবং শয়তানের দ্বারা ঔ মহিলা গর্ববতী হয় এবং হিজড়া সন্তান প্রসব করে।
শয়তান জ্বিন মানুষের সন্তানে শরীক হয় যেভাবেঃ হযরত মুজাহিদ (রাহ) বলেন, মানুষ তার স্ত্রীর সাথে যৌনমিলন করার আগে “বিসমিল্লাহ” না পড়লে জ্বিন তার প্রস্রাবের ছিদ্র পথের সাথে জড়িয়ে যায় এবং সেও সেই পুরুষের সাথে যৌনমিলনে অংশ নেই।
এর থেকে বাঁচতে হলে মিলনের আগে এই দুয়া পড়তে হবে, “আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইত্ব-না অজান্নিবাশ শাইত্ব-না মা রাযাকতান”
=============================================
================
জ্বিন শব্দের অর্থ ও পরিচিত
হযরত ইবনে দুরাইদ (রাহ) বলেন জ্বিন হল মানব জাতি হতে আলাদা একটি জাতি বা সৃষ্টি।জ্বিন শব্দের অর্থ গুপ্ত অদৃশ্য বা লোক্কায়িত।
জ্বিন কারাঃ হযরত আবু উমর আয যাহিদ বলেন, জিন্নাত বা জ্বিন জাতির কুকুর বা ইতর শ্রেণীকে বলা হয় জ্বিন।
জ্বান কারাঃ হযরত জাওহরি বলেন, জ্বান হল জ্বিনের আদি পিতা বা আবুল জ্বিন।
শয়তান কারাঃ আল্লামা ইবনে আকিল বলেন, শয়তান হল এক প্রকার জ্বিন যারা আল্লাহর অবাধ্য ইবলীশের বংশধর।
মারাদা কারাঃ আল্লামা আকিলের মতে মারাদা হল, জ্বিন জাতির মধ্যে যারা চরম অবাধ্য।
জ্বিন জাতির শ্রেণী বিভাগঃ
১-জ্বিনঃ অর্থাৎ সাধারণ জ্বিন
২-আমিরঃ (বহু বচনে উম্মার) যারা মানুষের সাথে থাকে
৩-আরওয়াহ যারা মানুষের সামনে আসে
৪-শয়তানঃ উদ্ধত অবাধ্য
৫-ইফরীত্ব যা শয়তানের চেয়েও বিপদ জনক


• সাবার রাণী [সুলাইমান (আঃ)-এর বিবি] বিলকিসের মা ছিল জ্বিন।
*******************************************
কথিত আছেঃ বিলকিসের মা-বাপের মধ্যে একজন ছিল জ্বিন। ইবনুল কালবী বলেন, বিলকিসের বাপ জ্বিনদের মেয়েকে বিয়ে করে ছিল। যার নাম ছিল, “রেহান বিন্তে সুকুন” এরই গর্ভে বিলকিসের জন্ম হয়। এর নাম রাখাআ হয় ‘বিলকিমাহ’। বর্ণীত আছে যে বিলকিসের পায়ের সামনে ছিল চতুষ্পদ জন্তুর খুরের মত এবং তার গোরালীতে লোম ও ছিল। হযরত সুলাইমান (আঃ) তাকে বিয়ে করেছিল এবং শয়তানদের নির্দেশ দিয়েছিল, তোমরা গোসল খানা এবং লোম-বিন্নাশক পাউডার বানাও।
আবু হুরাইরা হতে বর্ণীত রাসুল (সাঃ) বলেন, বিলকিস-এর পিতা-মাতা’র মধ্যে একজন ছিল জ্বিন।
• জ্বিনদের বিয়ে-শাদী ও বংশধারা
********************
কোরআন থেকে প্রমাণ
“ইতোপুর্বে ও (অনত-নয়না স্বর্গ সুন্দরী, হুর)-দের কাছে না কোন মানুষ গিয়েছে না কোন জ্বিন। (আর রাহমান) এই আয়াত থেকে বুঝা গেল যে, জ্বিনরা যৌনমিলনও করে।
জ্বিনদের জন্মহার অনেক বেশী।
==================
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহ মানব জাতি ও জ্বিন জাতকে ১০ ভাগে ভাগ করেছেন। তার মধ্যে ৯ ভাগ জ্বিন এক ভাগ মানুষ। যখন একটি মানব শিশু জন্মায় তখন জ্বিনদের ৯ টা বাচ্চা হয়।
জ্বিনদের সাথে মানুষের বিয়ে
=================
জ্বিনের সাথে মানুষের বিয়ে হওয়া সম্ভব। তবে মাকরূহ। ইমাম সাঅলাবী (রাহঃ) বলেন, মানুষের ধারণা, বিয়ে এবং গর্ভ হওয়া মানুষ ও জ্বিন উভয়ের মধ্যে হতে পারে। পবিত্র কোরআনে বলা আছে, (আল্লাহ শয়তান কে উদ্দেশ্য করে বলেন ) তুই মানুষের সম্পদে ও সন্তানে শরীক হয় যা। (সুরা বনী ঈসরাইল)।
জ্বিন মানুষের সহজাত মিলনে সন্তানের নাম কী? “জ্বিন ও মানুষের মিলনে যে সন্তান হয় তার নাম ‘খুন্নাস’।“
• জ্বিন মানুষের মিলনে ছেলে হওয়ার ঘটনা (এ কোন বানোয়াট কাহিনী নয় হাদিস শুনাচ্ছি )।
=============================================
========
হযরত আবূ সাইদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি হযরত আলীর সাথে নাহরোয়ানে হুদুদিয়াদের হত্যাকার্যে সামিল হলাম। আলী (রাঃ) আমার কাছে ‘তালীদ’কে সন্ধান করলেন কিন্তু তাকে পেলাম না। তখন তিনি বললেন, তাকে খুঁজ। পরে তিনি নিজে তাকে খুজে বের করলেন।তারপর বললেন, “কে একে জান?” উপস্থিত ব্যক্তির মধ্যে একজন বলল, একে আমি জানি। এ “কাউস”। এর মা’ও আছেন। আলী তার মা’র কাছে একজন দূত পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এর বাপ কে? সে বলল, ‘আমি জানিনা, তবে এটুকু জানি যে, আমি অজ্ঞাতার যুগে আপন সম্প্রদায়ের বকরী-পাল চরাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার কাছে এক ছায়া মুর্তি এসে আমার সাথে যৌন-মিলন করে, যার দ্বারা আমার গর্ভ হয়। এ হল সেই গর্ভের সন্তান।

প্রত্যেক মুসলমানের ঘর-বাড়ির ছাদে মুসুলমান জ্বিন বাস করে
ইয়াজীদ বিন জাবির (তাবেঈ) বলেছেন, সকল মুসলমানের ঘরের ছাদে মুসলমান জ্বিনরা বসবাস করে। যখন বাড়ির মানুষদের জন্য খাবার তৈরী করে রাখা হয় তখন সংশ্লিষ্ট বাড়ির জ্বিনরা নেমে এসে তাদের সাথে আহার করে এবং যখন বাড়ির লোকদের রাতের খাবার দেওয়া হয় তখনও তারা নেমে এসে তাদের সাথে খাবারে শরিক হয়। এসব জ্বিনের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের খারাপ জ্বিন থেকে রক্ষা করেন।
• জ্বিনরা কী খায়
হযরত ওয়াহাব বিন মুনাব্বিহ (রাহঃ) বলেন, জ্বিন কয়েক প্রকার। এক প্রকার জ্বিন হল হাওয়া (হাওয়ায় মিশে থাকে)। ওরা খাওয়া-দাওয়া, বিয়ে-শাদী কিছুই করেনা এবং মারাও যায়না তাদের বাচ্চাও হয়না। আর এক প্রকার আছে যারা খাওয়া দাওয়া, বিয়ে-শাদী করে এবং মারা ও যায়।
হযরত আলকামাহ (রাহঃ) বলেছেন, আমি হযরত মাসউদ (রা)-কে নিবেদন করি, আপনাদের মধ্যে কেউ ‘লাইলাতুল জ্বিন’ (অর্থাৎ জ্বিনের রাত)-এ রাসুল (সাঃ)-এর সাথে ছিলেন কি?
উনি বললেন, ‘না’।কিন্ত এক রাতে আমরা তাকে মক্কায় অনুপস্থিত পেলাম। আমরা বললাম, হয়ত নবীজীকে কাফিররা ধরে ফেলেছে এবং তাকে গুম করে ফেলেছে। আমাদের ওই রাতটা খুব খারাপ অবস্থায় গেল। যখন সকাল হল, দেখা গেল নবীজী হেরা পর্বত হতে আস্তেছে। তারপর আমরা আমাদের গত রাতের উদ্বেগের কথা জানালাম। তিনি বললেন, একটি জ্বিন এসে আমাকে দাওয়াত দিয়েছিল, তাই আমি তাদের সাথে গিয়েছিলাম এবং তাদের কোরান পড়ে শুনালাম। এরপর নবীজী আমাদের নিয়ে গেলেন এবং জ্বিনদের নিদর্শন দেখালেন। ওদের আগুনের চিহ্ন দেখালেন। ওই জ্বিনরা হুজুরের কাছে সফরের সামান (বা পাথেয়) চাই। কেননা তারা ছিল এক দ্বীপের জ্বিন। তখন নবীজী তাদের বললেন, তোমাদের খাদ্য এমন সব হাড় যার প্রতি আল্লাহর নাম নেওয়া হয়ছে।
রাসুল (সাঃ) আরো বলেন, তোমরা এই দু’টো জিনিষ (হাড় ও গোবর) দিয়ে এস্তেঞ্জা করোনা। কেননা এগুলো হলো তোমাদের জ্বিন ভাইদের খোরাক।
জৈনক জ্বিনের আবেদন,
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি একবার রাসুলের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তার কাছে এক সাপ এল এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে গেল। আমি তাকে নবীজীর আরো কাছে করে দিলাম। সে রাসুলের পবিত্র কানের কাছে গিয়ে চুপিচুপি কিছু বলল। নবীজী বললেন ঠিক আছে। তারপর সাপটি চলে গেল। তখন ব্যাপারটি আমি জানতে চাইলে, হুজুর বলেন, সে ছিল জ্বিন। সে আমাকে বলে গেল, “আপনি আপনার উম্মতদের বলেদেন যে তারা যেন গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেঞ্জা না করে কেননা আল্লাহ ওই দু’টো জিনিষে আমাদের জন্য আহার্য রেখেছেন”।
• শয়তান খানা-পিনা করে বাম হাতে।
হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণীত, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আহার করে তারা যেন ডান হাত দিয়ে আহার করে এবং পান করার সময় ডান হাত দিয়ে পান করে, কেননা শয়তান বাম হাত দিয়ে আহার ও পান করে।
হুযাইফা (রাঃ) বলেন, রাসুল এর সঙ্গে যখন কোন খানার মজলিসে হাজির হতাম তখন তিনি শুরু করার আগে আমরা শুরু করতাম না। একবারের ঘটনা, আমারা খাওয়ার মজলিসে হাজীর আছি এমন সময় এক বেদুঈন এল। যেন তাকে কেউ খাবারের দিকে তারিয়ে এনেছে। সে এসে খাবারের দিকে হাত বাড়াল। নবীজী তার হাত ধরে ফেললেন এবং তাকে বসিয়ে দিল। তারপর একটি মেয়ে আসল তাকেও যেন কেউ হাকিয়ে এনেছে। মেয়েটিও এসে খাবারে হাত দিল এবং তার হাত ও ধরে ফেললেন হুজুর। তার পর তিনি বলেন, যে খাবারে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়না শয়তান সেই খাবার তার জন্য হালাল করে নেই। শয়তান এই বেদুঈনের সাথে খেতে এসেছিল আমি তার হাত ধরে ফেললাম তাই সে ওই মেয়েটির সাথে এল এবং এদের মাধ্যমে খাবারে ভাগ বসাতে চাইল। এর হাতও আমি ধরে ফেললাম। যার আয়ত্বে আমার জীবন সেই সত্তার কসম! এই দুজনের সাথে শয়তানের হাত ও (এখন) আমার মুঠোর মধ্যে।
হযরত আবু হুরাইরা বর্ণনা করেন, হুজুর ( সাঃ) বলেছেন, শয়তান তোমাদের সাথে সকল সময় সকল অবস্থায় বিদ্যমান থাকে, এমনকি খাওয়ার সময়ও। তাই তোমাদের মধ্যে খাদ্যের গ্রাস পড়ে গেলে তার ময়লা সাফ করে যেন তা খেয়ে নেই, যেন শয়তানের জন্য ছেড়ে না দেয়।
হযরত জাবির (রাঃ) শুনেছেন যে, হুজুর (সঃ) বলেন, যখন কোন মানুষ নিজের বাড়িতে প্রবেশ করার সময় এবং খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে, তখন শয়তান (অন্যান্য শয়তানের উদ্দেশে) বলে, তোমাদের জন্য এখানে থাকা খাওয়ার জন্য কোন অবকাশ নেই। কিন্তু কোন মানুষ যদি ঘরে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর নাম না নেই। তাহলে শয়তান বলে তোমরা জন্য রাতে থাকার ও সাঁঝে খাওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলে।

বর্ণনায় আকিল (রাহঃ)। আমাদের একটি বাড়ি ছিল। তাতে যখনি কোন লোক থাকত, সকালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যেত। একবার এক মরক্কোর লোক এল। ঘরটি তার পছন্দ হল এবং সে ভাড়া নিল। তারপর রাত কাটাল এবং সকালে দেখা গেল সে পুরোপুরি সুস্থ। তার কিছুই হয়নি। তা দেখে প্রতিবেশীরা অভাক। লোকটি বেশ কিছুকাল ছিল তারপর অন্যত্র চলে গেল। তাকে ওই ঘরের নিরাপদ থাকার কথা জিজ্ঞেস করা হলে সে বলল, আমি যখন সেই ঘরে থাকি তখন (প্রথম রাতে) ইশার নামাজ পড়েছি এবং কোরআন থেকে কিছু পড়েছি। তারপর দেখি এক যুবক কূপ থেকে উপরে উঠতেছে। সে আমাকে সালাম দিল। আমি তাকে দেখে ভয় পেলাম। সে বল, ভয় পেওনা আমাকেও কিছু কোরান পাঠ শেখাও। তারপর তাকে আমি কোরান শেখাই এবং জিজ্ঞেস করি এই ঘরের রহস্য কি? সে বলল, আমরা মুসলমান জ্বিন। আমরা কোরান পাঠও করি এবং নামাযও পড়ি। কিন্তু এই ঘরে বেশীর ভাগ সময় বদমাশ লোকেরা থাকে এবং মদের আসর বসায়। তাই আমরা তাদের গলা টিপে দিয়। আমি তাকে বললাম, তোমাকে আমি রাতে ভয় পায় তাই তুমি দিনের বেলায় এসো। সে বলল, খুব ভাল। তারপর থেকে সে দিনের বেলায় কুপ থেকে আসত। একবার সে কোরান পাঠ করতেছিল এমন সময় বাইরে এক ওঝা আসল এবং বলতেছে, “আমি সাপে কাটা, বদ নজর লাগা এবং জ্বিনে ধরা রোগের ঝাঁড়-ফোঁক করি”। তার কথা শুনে জ্বিনটি বলল, “সে কে?”। আমি বললাম ও হল ওঝা ঝাঁড়-ফোঁক করে। সে বলল তাকে ডাক। আমি উঠে তাকে ডেকে আনলাম। এসে দেখি, সে জ্বিনটি এক বিরাট সাপ হয়ে ঘরের ভিতরের ছাদে উঠে গেল। ওঝা এসে ঝাঁড়-ফুঁক করতেই সে ঝটপট করতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত ঘরের মেঝেই পড়ে গেল। তখন ওঝা তাকে ধরে ঝাঁপিতে ভরতে গেল আমি মানা করলাম। সে বলল, ‘তুমি আমাকে আমার শিকার ধরার কাজে বাধা দিচ্ছ’ তখন আমি তাকে একটা স্বর্ণ মুদ্রা দিলাম সে চলে গেল। তারপর সে অজগর নড়া-ছড়া করল এবং জ্বিন রূপে প্রকাশ ঘটল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কি হয়ছে? জ্বিন বলল, আমাকে ওই ওঝা পাক ইসমের মাধ্যমে শেষ করে ফেলেছে। আমি বাঁচব বলে আর বিশ্বাস হচ্ছেনা। যদি তুমি এই কুপ থেকে কোন চিৎকারের শব্দ শুনতে পাও তবে চলে যেও। সেই রাতে আমি এক আওয়াজ শুনতে পেলাম যে, “তুমি দূরে চলে যাও”। এরপর থেকে ওই ঘরে আর কেউ থাকত না।
আর এক সুন্দরী জ্বিন স্ত্রীর ঘটনা।
=======================
বর্ণনায় আল্লামা বাদরুদ্দীন শিবলী (রাহঃ)। জনাব কাযীউল ক্বযযাহ জালালুদ্দিন আহমেদ বিন ক্বাযীউল ক্বযযাহ হিসামুদ্দিন কাযী হানাফী বলেন, আমার পিতা আমাকে পরিবার পরিজন-বর্গকে প্রাচ্য হতে আনার জন্য সফরে পাঠান। যখন আমি বীরাহ নামক স্থান পার হলাম, বৃষ্টি আমাদের এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। আমি এক যাত্রী দলের সাথে ছিলাম। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি কেউ আমাকে জাগাচ্ছে। জেগে দেখি আমার কাছে মাঝারি উচ্ছতার এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তার চোখ ছিল একটা লম্বা-লম্বি ফাটলের মত। সে বলল তুমি ভয় পেওনা। আমি তোমার কাছে আমার চাঁদের মত মেয়েকে বিয়ে দিতে এসেছি। আমি ঘাবড়ে গিয়ে বললাম আল্লাহ ভালো করুন। তারপর দেখলাম কিছু মানুষ আমার দিকে আসছে। তাদের আকৃতিও ওই মহিলার মত। তাদের চোখেও লম্বা ফাটল আছে। তাদের সাথে এক কাযীও ছিল এবং সাক্ষীও। সুতরাং কাযী বিয়ের পয়গাম দিল এবং বিয়েও পড়িয়ে দিল যা আমি বাধ্য হয়ে কবুল করলাম। এবং ওরা যখন চলে গেল, তারপর মহিলা আমার কাছে আসল। এবার তার সাথে এক সুন্দরী মেয়েও ছিল। তার চোখও ছিল তার মায়ের মত ভয়ঙ্কর। মেয়েটির মা মেয়েকে আমার কাছে রেখে চলে গেল। তারপর আমার ভয় আরো বেড়ে গেল। আমি আমার সঙ্গীদের জাগাতে কাঁকর ছুঁড়ে মারলাম। কিন্তু উদের কেউ উঠল না। তখন অনুনয়-বিনয় করে আল্লাহর কাছে দুয়া করতে লাগলাম। পরে ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ার সময় এল। আমরা রওনা দিলাম কিন্তু মেয়েটি আমাকে ছাড়ল না। এই অবস্থায় তিন-দিন কেটে গেল। চারদিনের মাথায় মেয়ের মা এল এবং বলল, “সম্ভবত এই মেয়েকে তোমার পছন্দ হয়নি। তুমি মনে হয় এর থেকে বিচ্ছেদ চাইছ”। আমি বললাম, হ্যা আল্লাহর কসম। সে বলল, তবে একে তালাক দাও। আমি তাকে তালাক দিলে সে চলে গেল। পরে আমি তাকে আর কখনো দেখিনি।

Back to posts
Comments:

Post a comment

❇❇কুরাআন ও হাদিস✨✨
Tags: mzs, Quran

》●》জীনদের নিয়ে কিছু কথা.....new

জ্বিনদের আকৃতি বদলের রহস্য
কাযী আবু ইয়ালা হামবালী (রাহ) বলেনঃ জ্বিন ও শয়তানদের এমন কোন এখতিয়ার নেই যে তারা নিজেদের রূপ বদলাতে পারে এবং অন্যান্য রূপ ধারণ করবে; অবশ্য এ কথা ঠিক যে তাদেরকে আল্লাহ এমন কিছু বিশেষ কথা ও কাজ জানিয়ে দিয়েছেন যার ফলে তারা যখন সেই বিশেষ কথা ও কাজের প্রয়োগ ঘঠায় তখন তারা আল্লাহর ইচ্ছাই এক আকৃতি থেকে অন্য আকৃতিতে বদলে যায়।কিন্তু স্বয়ং নিজে থেকে জ্বিন ও শয়তান নিজেদের আকৃতি বদলানো অসম্ভব।কেননা নিজস্ব আকৃতি থেকে অন্য আকৃতি রূপান্তরিত করা মানে নিজের মূল উপাদান তথা অঙ্গপ্রত্যঙ্গকেও বদলে দেওয়া।এটা তাদের পক্ষে কিভাবে সম্ভব?
কাযী আবু ইয়ালা হাম্বলী আরো বলেন, ফিরিশতাদের বিভিন্ন রূপ ধারণের কেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
• জ্বিনরা কি কি রূপ নিতে পারেঃ
জ্বিনরা বহুরূপী হতে পারে, যেমন মানুষ, চতুষ্পদ পশু, সাপ, বিছে, উট, গরু, ছাগল, ঘোড়া, খচ্চর, গাধা ও বিভিন্ন পশু-পাখি প্রভৃতির আকার ধারণ করতে পারে।
• সাপ ও কুকুররাও এক প্রকার জ্বিন!
সাপ হল এক প্রকার রূপান্তরিত জ্বিন, যেমন বাদর ও শুকরে রূপান্তরিত হয়ছিল বনী-ইসরাইল।তবে জ্বিন সাপ গুলো হয় সাদা।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, কিছু কিছু কুকুররা এক প্রকার জ্বিন এবং এরা খুব দুর্বল জ্বিন।সুতরাং খাওয়ার সময় কোন কুকুর বসে গেলে তাকেও কিছু দেওয়া উচিত নাইলে তারিয়ে দেওয়া দরকার।কেননা তারো একটা প্রবৃত্তি (নফস) আছে।
হযরত আবু ক্বিলাবাহ হতে বর্ণীত, রাসুল (সাঃ) বলেনঃ যদি এই কুকুরগুলা এক প্রকার সৃষ্টিজীব না হত তাহলে এগুলোকে কতল করে দিতাম।কিন্তু কোন মাখলূককে বিলিন করতে আমার ভয় হয়।তবে তোমরা এদের মধ্যে সমস্ত কালো কুকুর গুলোকে মেরে ফেলবে।কারণ এগুলো এক প্রকার শয়তান।
রাসুল আরো বলেন, নামাজীর সামনে দিয়ে কালো কুকুর গেলে নামাজ ভেঙ্গে যায়।সাহাবীরা এ ব্যাপারে আরজ করল যে, "জনাব, লাল ও সাদা কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের কি দোষ?" উত্তরে রাসুল বলল, কালো কুকুর হল এক প্রকার শয়তান।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, জ্বিনরা তিন প্রকার-এক প্রকার জ্বিন হল, সাপ, বিছে, কুকুর ও পোকা-মাকড়।দ্বিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যারা হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়।এবং তিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যাদের পরকালের জন্য হিসাব-নিকাশ ও পুরষ্কার ও আযাব আছে।
আল্লামা সুহাইলী (রাহ) বলেন, শেষ প্রকারের জ্বিনরাই নিজেদের রূপ বদলাতে পারে।
কাযী আবু বকর বাকেলানী (রাহ) বলেন, আমি বলছি যারা জ্বিন দেখেছেন তারা সত্যি দেখেছেন।কেননা আল্লাহ জ্বিনদের দৃশ্যরূপ সৃষ্টি করেন এবং এরা বিভিন্ন আকৃতির ও কোমল দেহ বিশিষ্ট হয়।
• জ্বিন হল আগুনের সৃষ্টি
পবিত্র কোরানে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি আদমের আগে জ্বিনকে সৃষ্টি করি ‘লূ’এর আগুন (অর্থাৎ অত্যন্ত সূক্ষ্ম হওয়ার জন্য অতুষ্ণ বায়ুতে পরিণত হয়েছে এমন আগুন) দিয়ে

জ্বিনজাতি সৃষ্টি হয়ছে যেদিন।
হযরত আবু আলিয়ার বর্ণনাঃ আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেন বুধবার, জ্বিনকে সৃষ্টি করেন বৃহস্পতিবার এবং আদমকে সৃষ্টি করেন শুক্রবার।
=============================
কার আগে কে সৃষ্টি
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলা যার – আগে যাকে সৃষ্টি করেন।
জান্নাতকে - জাহান্নামের আগে
আপন রহমতকে - গযবের আগে
আসমানকে - যমীনের আগে
সূর্য ও চাঁদকে - নক্ষত্রের আগে
দিনকে - রাতের আগে
পানিভাগকে - স্থলভাগের আগে
সমভুমিকে - পাহাড়-পর্বতের আগে
ফিরিশতাদেরকে - জ্বিনদের আগে
জ্বিনজাতিকে - মানবজাতির আগে
এবং
পুরুষ জাতিকে - স্ত্রী জাতির আগে
======================
আদি জ্বিনের আকাংক্ষা
=============
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা আবূল জ্বিন্নাত বা জ্বিন জাতির আদিপিতা “সামূম”কে আগুনের শিখা দিয়ে সৃষ্টি করার পর বলেন,তুমি কিছু কামনা কর।সে বলল, “আমার কামনা হল, আমরা সবাইকে দেখব কিন্তু আমাদের যেন কেউ না দেখে এবং আমাদের বৃদ্ধরা যেন জোয়ান হয়ে মারা যায়।আল্লাহ তার এই কামনা কবুল করলেন তাই জ্বিনরা অদৃশ্য এবং মারা গেলে জোয়ান হয়ে মারা যায়।
==============================
জ্বিনেরা পৃথিবীতে বাস করত মানুষের আগেঃ
==============================
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, জ্বিনেরা পৃথিবীতে এবং ফিরিশ্তারা আসমানে বাস করত।প্রত্যেক আসমানের আলাদা আলাদা ফিরিশতা থাকত এবং আসমানের বাসিন্দাদের জন্য আলাদা আলাদা নামাজ-দোয়া ছিল।মূলত এরাই ছিল আসমান ও জমিনের বাসিন্দা
জ্বিনদের সৃষ্টি আদমের (আঃ) ২০০০ বছর আগে
=========================
ইবলীস পৃথিবীতে বাস করছে যবে থেকে!
=========================
জুওয়াইবির ও উসমান (রাঃ)নিজেদের সনদ সহকারে বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করার পর তাদেরকে পৃথিবীতে বাস করার জন্য নির্দেশ দেন।ওরা পৃথিবীতে আল্লাহর একান্ত অনুগত হয়ে চলতে লাগল।অবশেষে দীর্ঘকাল কেটে যাবার পর, ওরা আল্লাহর অবাধ্যতা শুরু করে দিল এবং খুন খারাবী করতে লাগল।তাদের এক বাদশাহ ছিল, যার নাম ছিল ইউসুফ।
তাকে ও তারা মেরে ফেলল।তকন আল্লাহ তাদের ওপর দ্বিতীয় আসমানের ফেরেশতাদের এক বাহিনী পাঠালেন।তাদের মধ্যে ইবলীসও ছিল।ইবলিস ছিল ৪০০০ জনের সর্দার।সে আসমান থেকে নেমে এসে জমিনের সমস্ত জ্বিন সন্তানদের হত্যা করল এবং বাকিদের মেরে কেটে সমুদ্রের দ্বীপগুলোর দিকে তারিয়ে দিল।তখন ইবলীস তার বাহিনী সমেত এই জমিনেই থাকতে লাগল।তেদের পক্ষে আল্লাহর বিধি-বিদ্বান মেনে চলা খুব সহজ হয় গেল এবং তারা পৃথিবীতে বসবাস করাকে পছন্দ করল।


হিজড়ারা জম্মায় কেমন করে?
---------------------
হযরত ইবনে আব্বাস (রা)বলেন হিজড়ারা জ্বিনদের সন্তান।
কোন এক ব্যাক্তি আব্বাস (রা) কে জিজ্ঞেস করে এমনটা কেমন করে হয়?
উত্তরে তিনি বলেন আল্লাহ ও তার রাসুল (সা) নিষেধ করেছেন যে মানুষ যেন তার স্ত্রীর সাথে মাসিক স্রাব চলাকালিন যৌনসঙ্গম না করে।স্ত্রী লোকের ঋতুস্রাব চলাকালীন যৌন সঙ্গম করলে শয়তান তার আগে আগে থাকে এবং শয়তানের দ্বারা ঔ মহিলা গর্ববতী হয় এবং হিজড়া সন্তান প্রসব করে।
শয়তান জ্বিন মানুষের সন্তানে শরীক হয় যেভাবেঃ হযরত মুজাহিদ (রাহ) বলেন, মানুষ তার স্ত্রীর সাথে যৌনমিলন করার আগে “বিসমিল্লাহ” না পড়লে জ্বিন তার প্রস্রাবের ছিদ্র পথের সাথে জড়িয়ে যায় এবং সেও সেই পুরুষের সাথে যৌনমিলনে অংশ নেই।
এর থেকে বাঁচতে হলে মিলনের আগে এই দুয়া পড়তে হবে, “আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইত্ব-না অজান্নিবাশ শাইত্ব-না মা রাযাকতান”
=============================================
================
জ্বিন শব্দের অর্থ ও পরিচিত
হযরত ইবনে দুরাইদ (রাহ) বলেন জ্বিন হল মানব জাতি হতে আলাদা একটি জাতি বা সৃষ্টি।জ্বিন শব্দের অর্থ গুপ্ত অদৃশ্য বা লোক্কায়িত।
জ্বিন কারাঃ হযরত আবু উমর আয যাহিদ বলেন, জিন্নাত বা জ্বিন জাতির কুকুর বা ইতর শ্রেণীকে বলা হয় জ্বিন।
জ্বান কারাঃ হযরত জাওহরি বলেন, জ্বান হল জ্বিনের আদি পিতা বা আবুল জ্বিন।
শয়তান কারাঃ আল্লামা ইবনে আকিল বলেন, শয়তান হল এক প্রকার জ্বিন যারা আল্লাহর অবাধ্য ইবলীশের বংশধর।
মারাদা কারাঃ আল্লামা আকিলের মতে মারাদা হল, জ্বিন জাতির মধ্যে যারা চরম অবাধ্য।
জ্বিন জাতির শ্রেণী বিভাগঃ
১-জ্বিনঃ অর্থাৎ সাধারণ জ্বিন
২-আমিরঃ (বহু বচনে উম্মার) যারা মানুষের সাথে থাকে
৩-আরওয়াহ যারা মানুষের সামনে আসে
৪-শয়তানঃ উদ্ধত অবাধ্য
৫-ইফরীত্ব যা শয়তানের চেয়েও বিপদ জনক


• সাবার রাণী [সুলাইমান (আঃ)-এর বিবি] বিলকিসের মা ছিল জ্বিন।
*******************************************
কথিত আছেঃ বিলকিসের মা-বাপের মধ্যে একজন ছিল জ্বিন। ইবনুল কালবী বলেন, বিলকিসের বাপ জ্বিনদের মেয়েকে বিয়ে করে ছিল। যার নাম ছিল, “রেহান বিন্তে সুকুন” এরই গর্ভে বিলকিসের জন্ম হয়। এর নাম রাখাআ হয় ‘বিলকিমাহ’। বর্ণীত আছে যে বিলকিসের পায়ের সামনে ছিল চতুষ্পদ জন্তুর খুরের মত এবং তার গোরালীতে লোম ও ছিল। হযরত সুলাইমান (আঃ) তাকে বিয়ে করেছিল এবং শয়তানদের নির্দেশ দিয়েছিল, তোমরা গোসল খানা এবং লোম-বিন্নাশক পাউডার বানাও।
আবু হুরাইরা হতে বর্ণীত রাসুল (সাঃ) বলেন, বিলকিস-এর পিতা-মাতা’র মধ্যে একজন ছিল জ্বিন।
• জ্বিনদের বিয়ে-শাদী ও বংশধারা
********************
কোরআন থেকে প্রমাণ
“ইতোপুর্বে ও (অনত-নয়না স্বর্গ সুন্দরী, হুর)-দের কাছে না কোন মানুষ গিয়েছে না কোন জ্বিন। (আর রাহমান) এই আয়াত থেকে বুঝা গেল যে, জ্বিনরা যৌনমিলনও করে।
জ্বিনদের জন্মহার অনেক বেশী।
==================
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহ মানব জাতি ও জ্বিন জাতকে ১০ ভাগে ভাগ করেছেন। তার মধ্যে ৯ ভাগ জ্বিন এক ভাগ মানুষ। যখন একটি মানব শিশু জন্মায় তখন জ্বিনদের ৯ টা বাচ্চা হয়।
জ্বিনদের সাথে মানুষের বিয়ে
=================
জ্বিনের সাথে মানুষের বিয়ে হওয়া সম্ভব। তবে মাকরূহ। ইমাম সাঅলাবী (রাহঃ) বলেন, মানুষের ধারণা, বিয়ে এবং গর্ভ হওয়া মানুষ ও জ্বিন উভয়ের মধ্যে হতে পারে। পবিত্র কোরআনে বলা আছে, (আল্লাহ শয়তান কে উদ্দেশ্য করে বলেন ) তুই মানুষের সম্পদে ও সন্তানে শরীক হয় যা। (সুরা বনী ঈসরাইল)।
জ্বিন মানুষের সহজাত মিলনে সন্তানের নাম কী? “জ্বিন ও মানুষের মিলনে যে সন্তান হয় তার নাম ‘খুন্নাস’।“
• জ্বিন মানুষের মিলনে ছেলে হওয়ার ঘটনা (এ কোন বানোয়াট কাহিনী নয় হাদিস শুনাচ্ছি )।
=============================================
========
হযরত আবূ সাইদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি হযরত আলীর সাথে নাহরোয়ানে হুদুদিয়াদের হত্যাকার্যে সামিল হলাম। আলী (রাঃ) আমার কাছে ‘তালীদ’কে সন্ধান করলেন কিন্তু তাকে পেলাম না। তখন তিনি বললেন, তাকে খুঁজ। পরে তিনি নিজে তাকে খুজে বের করলেন।তারপর বললেন, “কে একে জান?” উপস্থিত ব্যক্তির মধ্যে একজন বলল, একে আমি জানি। এ “কাউস”। এর মা’ও আছেন। আলী তার মা’র কাছে একজন দূত পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এর বাপ কে? সে বলল, ‘আমি জানিনা, তবে এটুকু জানি যে, আমি অজ্ঞাতার যুগে আপন সম্প্রদায়ের বকরী-পাল চরাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার কাছে এক ছায়া মুর্তি এসে আমার সাথে যৌন-মিলন করে, যার দ্বারা আমার গর্ভ হয়। এ হল সেই গর্ভের সন্তান।

প্রত্যেক মুসলমানের ঘর-বাড়ির ছাদে মুসুলমান জ্বিন বাস করে
ইয়াজীদ বিন জাবির (তাবেঈ) বলেছেন, সকল মুসলমানের ঘরের ছাদে মুসলমান জ্বিনরা বসবাস করে। যখন বাড়ির মানুষদের জন্য খাবার তৈরী করে রাখা হয় তখন সংশ্লিষ্ট বাড়ির জ্বিনরা নেমে এসে তাদের সাথে আহার করে এবং যখন বাড়ির লোকদের রাতের খাবার দেওয়া হয় তখনও তারা নেমে এসে তাদের সাথে খাবারে শরিক হয়। এসব জ্বিনের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের খারাপ জ্বিন থেকে রক্ষা করেন।
• জ্বিনরা কী খায়
হযরত ওয়াহাব বিন মুনাব্বিহ (রাহঃ) বলেন, জ্বিন কয়েক প্রকার। এক প্রকার জ্বিন হল হাওয়া (হাওয়ায় মিশে থাকে)। ওরা খাওয়া-দাওয়া, বিয়ে-শাদী কিছুই করেনা এবং মারাও যায়না তাদের বাচ্চাও হয়না। আর এক প্রকার আছে যারা খাওয়া দাওয়া, বিয়ে-শাদী করে এবং মারা ও যায়।
হযরত আলকামাহ (রাহঃ) বলেছেন, আমি হযরত মাসউদ (রা)-কে নিবেদন করি, আপনাদের মধ্যে কেউ ‘লাইলাতুল জ্বিন’ (অর্থাৎ জ্বিনের রাত)-এ রাসুল (সাঃ)-এর সাথে ছিলেন কি?
উনি বললেন, ‘না’।কিন্ত এক রাতে আমরা তাকে মক্কায় অনুপস্থিত পেলাম। আমরা বললাম, হয়ত নবীজীকে কাফিররা ধরে ফেলেছে এবং তাকে গুম করে ফেলেছে। আমাদের ওই রাতটা খুব খারাপ অবস্থায় গেল। যখন সকাল হল, দেখা গেল নবীজী হেরা পর্বত হতে আস্তেছে। তারপর আমরা আমাদের গত রাতের উদ্বেগের কথা জানালাম। তিনি বললেন, একটি জ্বিন এসে আমাকে দাওয়াত দিয়েছিল, তাই আমি তাদের সাথে গিয়েছিলাম এবং তাদের কোরান পড়ে শুনালাম। এরপর নবীজী আমাদের নিয়ে গেলেন এবং জ্বিনদের নিদর্শন দেখালেন। ওদের আগুনের চিহ্ন দেখালেন। ওই জ্বিনরা হুজুরের কাছে সফরের সামান (বা পাথেয়) চাই। কেননা তারা ছিল এক দ্বীপের জ্বিন। তখন নবীজী তাদের বললেন, তোমাদের খাদ্য এমন সব হাড় যার প্রতি আল্লাহর নাম নেওয়া হয়ছে।
রাসুল (সাঃ) আরো বলেন, তোমরা এই দু’টো জিনিষ (হাড় ও গোবর) দিয়ে এস্তেঞ্জা করোনা। কেননা এগুলো হলো তোমাদের জ্বিন ভাইদের খোরাক।
জৈনক জ্বিনের আবেদন,
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি একবার রাসুলের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তার কাছে এক সাপ এল এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে গেল। আমি তাকে নবীজীর আরো কাছে করে দিলাম। সে রাসুলের পবিত্র কানের কাছে গিয়ে চুপিচুপি কিছু বলল। নবীজী বললেন ঠিক আছে। তারপর সাপটি চলে গেল। তখন ব্যাপারটি আমি জানতে চাইলে, হুজুর বলেন, সে ছিল জ্বিন। সে আমাকে বলে গেল, “আপনি আপনার উম্মতদের বলেদেন যে তারা যেন গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেঞ্জা না করে কেননা আল্লাহ ওই দু’টো জিনিষে আমাদের জন্য আহার্য রেখেছেন”।
• শয়তান খানা-পিনা করে বাম হাতে।
হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণীত, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আহার করে তারা যেন ডান হাত দিয়ে আহার করে এবং পান করার সময় ডান হাত দিয়ে পান করে, কেননা শয়তান বাম হাত দিয়ে আহার ও পান করে।
হুযাইফা (রাঃ) বলেন, রাসুল এর সঙ্গে যখন কোন খানার মজলিসে হাজির হতাম তখন তিনি শুরু করার আগে আমরা শুরু করতাম না। একবারের ঘটনা, আমারা খাওয়ার মজলিসে হাজীর আছি এমন সময় এক বেদুঈন এল। যেন তাকে কেউ খাবারের দিকে তারিয়ে এনেছে। সে এসে খাবারের দিকে হাত বাড়াল। নবীজী তার হাত ধরে ফেললেন এবং তাকে বসিয়ে দিল। তারপর একটি মেয়ে আসল তাকেও যেন কেউ হাকিয়ে এনেছে। মেয়েটিও এসে খাবারে হাত দিল এবং তার হাত ও ধরে ফেললেন হুজুর। তার পর তিনি বলেন, যে খাবারে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়না শয়তান সেই খাবার তার জন্য হালাল করে নেই। শয়তান এই বেদুঈনের সাথে খেতে এসেছিল আমি তার হাত ধরে ফেললাম তাই সে ওই মেয়েটির সাথে এল এবং এদের মাধ্যমে খাবারে ভাগ বসাতে চাইল। এর হাতও আমি ধরে ফেললাম। যার আয়ত্বে আমার জীবন সেই সত্তার কসম! এই দুজনের সাথে শয়তানের হাত ও (এখন) আমার মুঠোর মধ্যে।
হযরত আবু হুরাইরা বর্ণনা করেন, হুজুর ( সাঃ) বলেছেন, শয়তান তোমাদের সাথে সকল সময় সকল অবস্থায় বিদ্যমান থাকে, এমনকি খাওয়ার সময়ও। তাই তোমাদের মধ্যে খাদ্যের গ্রাস পড়ে গেলে তার ময়লা সাফ করে যেন তা খেয়ে নেই, যেন শয়তানের জন্য ছেড়ে না দেয়।
হযরত জাবির (রাঃ) শুনেছেন যে, হুজুর (সঃ) বলেন, যখন কোন মানুষ নিজের বাড়িতে প্রবেশ করার সময় এবং খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে, তখন শয়তান (অন্যান্য শয়তানের উদ্দেশে) বলে, তোমাদের জন্য এখানে থাকা খাওয়ার জন্য কোন অবকাশ নেই। কিন্তু কোন মানুষ যদি ঘরে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর নাম না নেই। তাহলে শয়তান বলে তোমরা জন্য রাতে থাকার ও সাঁঝে খাওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলে।

বর্ণনায় আকিল (রাহঃ)। আমাদের একটি বাড়ি ছিল। তাতে যখনি কোন লোক থাকত, সকালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যেত। একবার এক মরক্কোর লোক এল। ঘরটি তার পছন্দ হল এবং সে ভাড়া নিল। তারপর রাত কাটাল এবং সকালে দেখা গেল সে পুরোপুরি সুস্থ। তার কিছুই হয়নি। তা দেখে প্রতিবেশীরা অভাক। লোকটি বেশ কিছুকাল ছিল তারপর অন্যত্র চলে গেল। তাকে ওই ঘরের নিরাপদ থাকার কথা জিজ্ঞেস করা হলে সে বলল, আমি যখন সেই ঘরে থাকি তখন (প্রথম রাতে) ইশার নামাজ পড়েছি এবং কোরআন থেকে কিছু পড়েছি। তারপর দেখি এক যুবক কূপ থেকে উপরে উঠতেছে। সে আমাকে সালাম দিল। আমি তাকে দেখে ভয় পেলাম। সে বল, ভয় পেওনা আমাকেও কিছু কোরান পাঠ শেখাও। তারপর তাকে আমি কোরান শেখাই এবং জিজ্ঞেস করি এই ঘরের রহস্য কি? সে বলল, আমরা মুসলমান জ্বিন। আমরা কোরান পাঠও করি এবং নামাযও পড়ি। কিন্তু এই ঘরে বেশীর ভাগ সময় বদমাশ লোকেরা থাকে এবং মদের আসর বসায়। তাই আমরা তাদের গলা টিপে দিয়। আমি তাকে বললাম, তোমাকে আমি রাতে ভয় পায় তাই তুমি দিনের বেলায় এসো। সে বলল, খুব ভাল। তারপর থেকে সে দিনের বেলায় কুপ থেকে আসত। একবার সে কোরান পাঠ করতেছিল এমন সময় বাইরে এক ওঝা আসল এবং বলতেছে, “আমি সাপে কাটা, বদ নজর লাগা এবং জ্বিনে ধরা রোগের ঝাঁড়-ফোঁক করি”। তার কথা শুনে জ্বিনটি বলল, “সে কে?”। আমি বললাম ও হল ওঝা ঝাঁড়-ফোঁক করে। সে বলল তাকে ডাক। আমি উঠে তাকে ডেকে আনলাম। এসে দেখি, সে জ্বিনটি এক বিরাট সাপ হয়ে ঘরের ভিতরের ছাদে উঠে গেল। ওঝা এসে ঝাঁড়-ফুঁক করতেই সে ঝটপট করতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত ঘরের মেঝেই পড়ে গেল। তখন ওঝা তাকে ধরে ঝাঁপিতে ভরতে গেল আমি মানা করলাম। সে বলল, ‘তুমি আমাকে আমার শিকার ধরার কাজে বাধা দিচ্ছ’ তখন আমি তাকে একটা স্বর্ণ মুদ্রা দিলাম সে চলে গেল। তারপর সে অজগর নড়া-ছড়া করল এবং জ্বিন রূপে প্রকাশ ঘটল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কি হয়ছে? জ্বিন বলল, আমাকে ওই ওঝা পাক ইসমের মাধ্যমে শেষ করে ফেলেছে। আমি বাঁচব বলে আর বিশ্বাস হচ্ছেনা। যদি তুমি এই কুপ থেকে কোন চিৎকারের শব্দ শুনতে পাও তবে চলে যেও। সেই রাতে আমি এক আওয়াজ শুনতে পেলাম যে, “তুমি দূরে চলে যাও”। এরপর থেকে ওই ঘরে আর কেউ থাকত না।
আর এক সুন্দরী জ্বিন স্ত্রীর ঘটনা।
=======================
বর্ণনায় আল্লামা বাদরুদ্দীন শিবলী (রাহঃ)। জনাব কাযীউল ক্বযযাহ জালালুদ্দিন আহমেদ বিন ক্বাযীউল ক্বযযাহ হিসামুদ্দিন কাযী হানাফী বলেন, আমার পিতা আমাকে পরিবার পরিজন-বর্গকে প্রাচ্য হতে আনার জন্য সফরে পাঠান। যখন আমি বীরাহ নামক স্থান পার হলাম, বৃষ্টি আমাদের এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। আমি এক যাত্রী দলের সাথে ছিলাম। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি কেউ আমাকে জাগাচ্ছে। জেগে দেখি আমার কাছে মাঝারি উচ্ছতার এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তার চোখ ছিল একটা লম্বা-লম্বি ফাটলের মত। সে বলল তুমি ভয় পেওনা। আমি তোমার কাছে আমার চাঁদের মত মেয়েকে বিয়ে দিতে এসেছি। আমি ঘাবড়ে গিয়ে বললাম আল্লাহ ভালো করুন। তারপর দেখলাম কিছু মানুষ আমার দিকে আসছে। তাদের আকৃতিও ওই মহিলার মত। তাদের চোখেও লম্বা ফাটল আছে। তাদের সাথে এক কাযীও ছিল এবং সাক্ষীও। সুতরাং কাযী বিয়ের পয়গাম দিল এবং বিয়েও পড়িয়ে দিল যা আমি বাধ্য হয়ে কবুল করলাম। এবং ওরা যখন চলে গেল, তারপর মহিলা আমার কাছে আসল। এবার তার সাথে এক সুন্দরী মেয়েও ছিল। তার চোখও ছিল তার মায়ের মত ভয়ঙ্কর। মেয়েটির মা মেয়েকে আমার কাছে রেখে চলে গেল। তারপর আমার ভয় আরো বেড়ে গেল। আমি আমার সঙ্গীদের জাগাতে কাঁকর ছুঁড়ে মারলাম। কিন্তু উদের কেউ উঠল না। তখন অনুনয়-বিনয় করে আল্লাহর কাছে দুয়া করতে লাগলাম। পরে ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ার সময় এল। আমরা রওনা দিলাম কিন্তু মেয়েটি আমাকে ছাড়ল না। এই অবস্থায় তিন-দিন কেটে গেল। চারদিনের মাথায় মেয়ের মা এল এবং বলল, “সম্ভবত এই মেয়েকে তোমার পছন্দ হয়নি। তুমি মনে হয় এর থেকে বিচ্ছেদ চাইছ”। আমি বললাম, হ্যা আল্লাহর কসম। সে বলল, তবে একে তালাক দাও। আমি তাকে তালাক দিলে সে চলে গেল। পরে আমি তাকে আর কখনো দেখিনি।

Back to posts
Comments:

Post a comment


🚀💡বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি》》
Tags: mzs, Quran

》●》জীনদের নিয়ে কিছু কথা.....new

জ্বিনদের আকৃতি বদলের রহস্য
কাযী আবু ইয়ালা হামবালী (রাহ) বলেনঃ জ্বিন ও শয়তানদের এমন কোন এখতিয়ার নেই যে তারা নিজেদের রূপ বদলাতে পারে এবং অন্যান্য রূপ ধারণ করবে; অবশ্য এ কথা ঠিক যে তাদেরকে আল্লাহ এমন কিছু বিশেষ কথা ও কাজ জানিয়ে দিয়েছেন যার ফলে তারা যখন সেই বিশেষ কথা ও কাজের প্রয়োগ ঘঠায় তখন তারা আল্লাহর ইচ্ছাই এক আকৃতি থেকে অন্য আকৃতিতে বদলে যায়।কিন্তু স্বয়ং নিজে থেকে জ্বিন ও শয়তান নিজেদের আকৃতি বদলানো অসম্ভব।কেননা নিজস্ব আকৃতি থেকে অন্য আকৃতি রূপান্তরিত করা মানে নিজের মূল উপাদান তথা অঙ্গপ্রত্যঙ্গকেও বদলে দেওয়া।এটা তাদের পক্ষে কিভাবে সম্ভব?
কাযী আবু ইয়ালা হাম্বলী আরো বলেন, ফিরিশতাদের বিভিন্ন রূপ ধারণের কেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
• জ্বিনরা কি কি রূপ নিতে পারেঃ
জ্বিনরা বহুরূপী হতে পারে, যেমন মানুষ, চতুষ্পদ পশু, সাপ, বিছে, উট, গরু, ছাগল, ঘোড়া, খচ্চর, গাধা ও বিভিন্ন পশু-পাখি প্রভৃতির আকার ধারণ করতে পারে।
• সাপ ও কুকুররাও এক প্রকার জ্বিন!
সাপ হল এক প্রকার রূপান্তরিত জ্বিন, যেমন বাদর ও শুকরে রূপান্তরিত হয়ছিল বনী-ইসরাইল।তবে জ্বিন সাপ গুলো হয় সাদা।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, কিছু কিছু কুকুররা এক প্রকার জ্বিন এবং এরা খুব দুর্বল জ্বিন।সুতরাং খাওয়ার সময় কোন কুকুর বসে গেলে তাকেও কিছু দেওয়া উচিত নাইলে তারিয়ে দেওয়া দরকার।কেননা তারো একটা প্রবৃত্তি (নফস) আছে।
হযরত আবু ক্বিলাবাহ হতে বর্ণীত, রাসুল (সাঃ) বলেনঃ যদি এই কুকুরগুলা এক প্রকার সৃষ্টিজীব না হত তাহলে এগুলোকে কতল করে দিতাম।কিন্তু কোন মাখলূককে বিলিন করতে আমার ভয় হয়।তবে তোমরা এদের মধ্যে সমস্ত কালো কুকুর গুলোকে মেরে ফেলবে।কারণ এগুলো এক প্রকার শয়তান।
রাসুল আরো বলেন, নামাজীর সামনে দিয়ে কালো কুকুর গেলে নামাজ ভেঙ্গে যায়।সাহাবীরা এ ব্যাপারে আরজ করল যে, "জনাব, লাল ও সাদা কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের কি দোষ?" উত্তরে রাসুল বলল, কালো কুকুর হল এক প্রকার শয়তান।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণীত, জ্বিনরা তিন প্রকার-এক প্রকার জ্বিন হল, সাপ, বিছে, কুকুর ও পোকা-মাকড়।দ্বিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যারা হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়।এবং তিতীয় প্রকার জ্বিন হল, যাদের পরকালের জন্য হিসাব-নিকাশ ও পুরষ্কার ও আযাব আছে।
আল্লামা সুহাইলী (রাহ) বলেন, শেষ প্রকারের জ্বিনরাই নিজেদের রূপ বদলাতে পারে।
কাযী আবু বকর বাকেলানী (রাহ) বলেন, আমি বলছি যারা জ্বিন দেখেছেন তারা সত্যি দেখেছেন।কেননা আল্লাহ জ্বিনদের দৃশ্যরূপ সৃষ্টি করেন এবং এরা বিভিন্ন আকৃতির ও কোমল দেহ বিশিষ্ট হয়।
• জ্বিন হল আগুনের সৃষ্টি
পবিত্র কোরানে আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমি আদমের আগে জ্বিনকে সৃষ্টি করি ‘লূ’এর আগুন (অর্থাৎ অত্যন্ত সূক্ষ্ম হওয়ার জন্য অতুষ্ণ বায়ুতে পরিণত হয়েছে এমন আগুন) দিয়ে

জ্বিনজাতি সৃষ্টি হয়ছে যেদিন।
হযরত আবু আলিয়ার বর্ণনাঃ আল্লাহ তা’আলা ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেন বুধবার, জ্বিনকে সৃষ্টি করেন বৃহস্পতিবার এবং আদমকে সৃষ্টি করেন শুক্রবার।
=============================
কার আগে কে সৃষ্টি
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
আল্লাহ তা’আলা যার – আগে যাকে সৃষ্টি করেন।
জান্নাতকে - জাহান্নামের আগে
আপন রহমতকে - গযবের আগে
আসমানকে - যমীনের আগে
সূর্য ও চাঁদকে - নক্ষত্রের আগে
দিনকে - রাতের আগে
পানিভাগকে - স্থলভাগের আগে
সমভুমিকে - পাহাড়-পর্বতের আগে
ফিরিশতাদেরকে - জ্বিনদের আগে
জ্বিনজাতিকে - মানবজাতির আগে
এবং
পুরুষ জাতিকে - স্ত্রী জাতির আগে
======================
আদি জ্বিনের আকাংক্ষা
=============
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তা’আলা আবূল জ্বিন্নাত বা জ্বিন জাতির আদিপিতা “সামূম”কে আগুনের শিখা দিয়ে সৃষ্টি করার পর বলেন,তুমি কিছু কামনা কর।সে বলল, “আমার কামনা হল, আমরা সবাইকে দেখব কিন্তু আমাদের যেন কেউ না দেখে এবং আমাদের বৃদ্ধরা যেন জোয়ান হয়ে মারা যায়।আল্লাহ তার এই কামনা কবুল করলেন তাই জ্বিনরা অদৃশ্য এবং মারা গেলে জোয়ান হয়ে মারা যায়।
==============================
জ্বিনেরা পৃথিবীতে বাস করত মানুষের আগেঃ
==============================
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, জ্বিনেরা পৃথিবীতে এবং ফিরিশ্তারা আসমানে বাস করত।প্রত্যেক আসমানের আলাদা আলাদা ফিরিশতা থাকত এবং আসমানের বাসিন্দাদের জন্য আলাদা আলাদা নামাজ-দোয়া ছিল।মূলত এরাই ছিল আসমান ও জমিনের বাসিন্দা
জ্বিনদের সৃষ্টি আদমের (আঃ) ২০০০ বছর আগে
=========================
ইবলীস পৃথিবীতে বাস করছে যবে থেকে!
=========================
জুওয়াইবির ও উসমান (রাঃ)নিজেদের সনদ সহকারে বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করার পর তাদেরকে পৃথিবীতে বাস করার জন্য নির্দেশ দেন।ওরা পৃথিবীতে আল্লাহর একান্ত অনুগত হয়ে চলতে লাগল।অবশেষে দীর্ঘকাল কেটে যাবার পর, ওরা আল্লাহর অবাধ্যতা শুরু করে দিল এবং খুন খারাবী করতে লাগল।তাদের এক বাদশাহ ছিল, যার নাম ছিল ইউসুফ।
তাকে ও তারা মেরে ফেলল।তকন আল্লাহ তাদের ওপর দ্বিতীয় আসমানের ফেরেশতাদের এক বাহিনী পাঠালেন।তাদের মধ্যে ইবলীসও ছিল।ইবলিস ছিল ৪০০০ জনের সর্দার।সে আসমান থেকে নেমে এসে জমিনের সমস্ত জ্বিন সন্তানদের হত্যা করল এবং বাকিদের মেরে কেটে সমুদ্রের দ্বীপগুলোর দিকে তারিয়ে দিল।তখন ইবলীস তার বাহিনী সমেত এই জমিনেই থাকতে লাগল।তেদের পক্ষে আল্লাহর বিধি-বিদ্বান মেনে চলা খুব সহজ হয় গেল এবং তারা পৃথিবীতে বসবাস করাকে পছন্দ করল।


হিজড়ারা জম্মায় কেমন করে?
---------------------
হযরত ইবনে আব্বাস (রা)বলেন হিজড়ারা জ্বিনদের সন্তান।
কোন এক ব্যাক্তি আব্বাস (রা) কে জিজ্ঞেস করে এমনটা কেমন করে হয়?
উত্তরে তিনি বলেন আল্লাহ ও তার রাসুল (সা) নিষেধ করেছেন যে মানুষ যেন তার স্ত্রীর সাথে মাসিক স্রাব চলাকালিন যৌনসঙ্গম না করে।স্ত্রী লোকের ঋতুস্রাব চলাকালীন যৌন সঙ্গম করলে শয়তান তার আগে আগে থাকে এবং শয়তানের দ্বারা ঔ মহিলা গর্ববতী হয় এবং হিজড়া সন্তান প্রসব করে।
শয়তান জ্বিন মানুষের সন্তানে শরীক হয় যেভাবেঃ হযরত মুজাহিদ (রাহ) বলেন, মানুষ তার স্ত্রীর সাথে যৌনমিলন করার আগে “বিসমিল্লাহ” না পড়লে জ্বিন তার প্রস্রাবের ছিদ্র পথের সাথে জড়িয়ে যায় এবং সেও সেই পুরুষের সাথে যৌনমিলনে অংশ নেই।
এর থেকে বাঁচতে হলে মিলনের আগে এই দুয়া পড়তে হবে, “আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইত্ব-না অজান্নিবাশ শাইত্ব-না মা রাযাকতান”
=============================================
================
জ্বিন শব্দের অর্থ ও পরিচিত
হযরত ইবনে দুরাইদ (রাহ) বলেন জ্বিন হল মানব জাতি হতে আলাদা একটি জাতি বা সৃষ্টি।জ্বিন শব্দের অর্থ গুপ্ত অদৃশ্য বা লোক্কায়িত।
জ্বিন কারাঃ হযরত আবু উমর আয যাহিদ বলেন, জিন্নাত বা জ্বিন জাতির কুকুর বা ইতর শ্রেণীকে বলা হয় জ্বিন।
জ্বান কারাঃ হযরত জাওহরি বলেন, জ্বান হল জ্বিনের আদি পিতা বা আবুল জ্বিন।
শয়তান কারাঃ আল্লামা ইবনে আকিল বলেন, শয়তান হল এক প্রকার জ্বিন যারা আল্লাহর অবাধ্য ইবলীশের বংশধর।
মারাদা কারাঃ আল্লামা আকিলের মতে মারাদা হল, জ্বিন জাতির মধ্যে যারা চরম অবাধ্য।
জ্বিন জাতির শ্রেণী বিভাগঃ
১-জ্বিনঃ অর্থাৎ সাধারণ জ্বিন
২-আমিরঃ (বহু বচনে উম্মার) যারা মানুষের সাথে থাকে
৩-আরওয়াহ যারা মানুষের সামনে আসে
৪-শয়তানঃ উদ্ধত অবাধ্য
৫-ইফরীত্ব যা শয়তানের চেয়েও বিপদ জনক


• সাবার রাণী [সুলাইমান (আঃ)-এর বিবি] বিলকিসের মা ছিল জ্বিন।
*******************************************
কথিত আছেঃ বিলকিসের মা-বাপের মধ্যে একজন ছিল জ্বিন। ইবনুল কালবী বলেন, বিলকিসের বাপ জ্বিনদের মেয়েকে বিয়ে করে ছিল। যার নাম ছিল, “রেহান বিন্তে সুকুন” এরই গর্ভে বিলকিসের জন্ম হয়। এর নাম রাখাআ হয় ‘বিলকিমাহ’। বর্ণীত আছে যে বিলকিসের পায়ের সামনে ছিল চতুষ্পদ জন্তুর খুরের মত এবং তার গোরালীতে লোম ও ছিল। হযরত সুলাইমান (আঃ) তাকে বিয়ে করেছিল এবং শয়তানদের নির্দেশ দিয়েছিল, তোমরা গোসল খানা এবং লোম-বিন্নাশক পাউডার বানাও।
আবু হুরাইরা হতে বর্ণীত রাসুল (সাঃ) বলেন, বিলকিস-এর পিতা-মাতা’র মধ্যে একজন ছিল জ্বিন।
• জ্বিনদের বিয়ে-শাদী ও বংশধারা
********************
কোরআন থেকে প্রমাণ
“ইতোপুর্বে ও (অনত-নয়না স্বর্গ সুন্দরী, হুর)-দের কাছে না কোন মানুষ গিয়েছে না কোন জ্বিন। (আর রাহমান) এই আয়াত থেকে বুঝা গেল যে, জ্বিনরা যৌনমিলনও করে।
জ্বিনদের জন্মহার অনেক বেশী।
==================
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহ মানব জাতি ও জ্বিন জাতকে ১০ ভাগে ভাগ করেছেন। তার মধ্যে ৯ ভাগ জ্বিন এক ভাগ মানুষ। যখন একটি মানব শিশু জন্মায় তখন জ্বিনদের ৯ টা বাচ্চা হয়।
জ্বিনদের সাথে মানুষের বিয়ে
=================
জ্বিনের সাথে মানুষের বিয়ে হওয়া সম্ভব। তবে মাকরূহ। ইমাম সাঅলাবী (রাহঃ) বলেন, মানুষের ধারণা, বিয়ে এবং গর্ভ হওয়া মানুষ ও জ্বিন উভয়ের মধ্যে হতে পারে। পবিত্র কোরআনে বলা আছে, (আল্লাহ শয়তান কে উদ্দেশ্য করে বলেন ) তুই মানুষের সম্পদে ও সন্তানে শরীক হয় যা। (সুরা বনী ঈসরাইল)।
জ্বিন মানুষের সহজাত মিলনে সন্তানের নাম কী? “জ্বিন ও মানুষের মিলনে যে সন্তান হয় তার নাম ‘খুন্নাস’।“
• জ্বিন মানুষের মিলনে ছেলে হওয়ার ঘটনা (এ কোন বানোয়াট কাহিনী নয় হাদিস শুনাচ্ছি )।
=============================================
========
হযরত আবূ সাইদ খুদরী (রাঃ) বলেন, আমি হযরত আলীর সাথে নাহরোয়ানে হুদুদিয়াদের হত্যাকার্যে সামিল হলাম। আলী (রাঃ) আমার কাছে ‘তালীদ’কে সন্ধান করলেন কিন্তু তাকে পেলাম না। তখন তিনি বললেন, তাকে খুঁজ। পরে তিনি নিজে তাকে খুজে বের করলেন।তারপর বললেন, “কে একে জান?” উপস্থিত ব্যক্তির মধ্যে একজন বলল, একে আমি জানি। এ “কাউস”। এর মা’ও আছেন। আলী তার মা’র কাছে একজন দূত পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এর বাপ কে? সে বলল, ‘আমি জানিনা, তবে এটুকু জানি যে, আমি অজ্ঞাতার যুগে আপন সম্প্রদায়ের বকরী-পাল চরাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার কাছে এক ছায়া মুর্তি এসে আমার সাথে যৌন-মিলন করে, যার দ্বারা আমার গর্ভ হয়। এ হল সেই গর্ভের সন্তান।

প্রত্যেক মুসলমানের ঘর-বাড়ির ছাদে মুসুলমান জ্বিন বাস করে
ইয়াজীদ বিন জাবির (তাবেঈ) বলেছেন, সকল মুসলমানের ঘরের ছাদে মুসলমান জ্বিনরা বসবাস করে। যখন বাড়ির মানুষদের জন্য খাবার তৈরী করে রাখা হয় তখন সংশ্লিষ্ট বাড়ির জ্বিনরা নেমে এসে তাদের সাথে আহার করে এবং যখন বাড়ির লোকদের রাতের খাবার দেওয়া হয় তখনও তারা নেমে এসে তাদের সাথে খাবারে শরিক হয়। এসব জ্বিনের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের খারাপ জ্বিন থেকে রক্ষা করেন।
• জ্বিনরা কী খায়
হযরত ওয়াহাব বিন মুনাব্বিহ (রাহঃ) বলেন, জ্বিন কয়েক প্রকার। এক প্রকার জ্বিন হল হাওয়া (হাওয়ায় মিশে থাকে)। ওরা খাওয়া-দাওয়া, বিয়ে-শাদী কিছুই করেনা এবং মারাও যায়না তাদের বাচ্চাও হয়না। আর এক প্রকার আছে যারা খাওয়া দাওয়া, বিয়ে-শাদী করে এবং মারা ও যায়।
হযরত আলকামাহ (রাহঃ) বলেছেন, আমি হযরত মাসউদ (রা)-কে নিবেদন করি, আপনাদের মধ্যে কেউ ‘লাইলাতুল জ্বিন’ (অর্থাৎ জ্বিনের রাত)-এ রাসুল (সাঃ)-এর সাথে ছিলেন কি?
উনি বললেন, ‘না’।কিন্ত এক রাতে আমরা তাকে মক্কায় অনুপস্থিত পেলাম। আমরা বললাম, হয়ত নবীজীকে কাফিররা ধরে ফেলেছে এবং তাকে গুম করে ফেলেছে। আমাদের ওই রাতটা খুব খারাপ অবস্থায় গেল। যখন সকাল হল, দেখা গেল নবীজী হেরা পর্বত হতে আস্তেছে। তারপর আমরা আমাদের গত রাতের উদ্বেগের কথা জানালাম। তিনি বললেন, একটি জ্বিন এসে আমাকে দাওয়াত দিয়েছিল, তাই আমি তাদের সাথে গিয়েছিলাম এবং তাদের কোরান পড়ে শুনালাম। এরপর নবীজী আমাদের নিয়ে গেলেন এবং জ্বিনদের নিদর্শন দেখালেন। ওদের আগুনের চিহ্ন দেখালেন। ওই জ্বিনরা হুজুরের কাছে সফরের সামান (বা পাথেয়) চাই। কেননা তারা ছিল এক দ্বীপের জ্বিন। তখন নবীজী তাদের বললেন, তোমাদের খাদ্য এমন সব হাড় যার প্রতি আল্লাহর নাম নেওয়া হয়ছে।
রাসুল (সাঃ) আরো বলেন, তোমরা এই দু’টো জিনিষ (হাড় ও গোবর) দিয়ে এস্তেঞ্জা করোনা। কেননা এগুলো হলো তোমাদের জ্বিন ভাইদের খোরাক।
জৈনক জ্বিনের আবেদন,
হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি একবার রাসুলের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় তার কাছে এক সাপ এল এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে গেল। আমি তাকে নবীজীর আরো কাছে করে দিলাম। সে রাসুলের পবিত্র কানের কাছে গিয়ে চুপিচুপি কিছু বলল। নবীজী বললেন ঠিক আছে। তারপর সাপটি চলে গেল। তখন ব্যাপারটি আমি জানতে চাইলে, হুজুর বলেন, সে ছিল জ্বিন। সে আমাকে বলে গেল, “আপনি আপনার উম্মতদের বলেদেন যে তারা যেন গোবর ও হাড় দিয়ে এস্তেঞ্জা না করে কেননা আল্লাহ ওই দু’টো জিনিষে আমাদের জন্য আহার্য রেখেছেন”।
• শয়তান খানা-পিনা করে বাম হাতে।
হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণীত, তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আহার করে তারা যেন ডান হাত দিয়ে আহার করে এবং পান করার সময় ডান হাত দিয়ে পান করে, কেননা শয়তান বাম হাত দিয়ে আহার ও পান করে।
হুযাইফা (রাঃ) বলেন, রাসুল এর সঙ্গে যখন কোন খানার মজলিসে হাজির হতাম তখন তিনি শুরু করার আগে আমরা শুরু করতাম না। একবারের ঘটনা, আমারা খাওয়ার মজলিসে হাজীর আছি এমন সময় এক বেদুঈন এল। যেন তাকে কেউ খাবারের দিকে তারিয়ে এনেছে। সে এসে খাবারের দিকে হাত বাড়াল। নবীজী তার হাত ধরে ফেললেন এবং তাকে বসিয়ে দিল। তারপর একটি মেয়ে আসল তাকেও যেন কেউ হাকিয়ে এনেছে। মেয়েটিও এসে খাবারে হাত দিল এবং তার হাত ও ধরে ফেললেন হুজুর। তার পর তিনি বলেন, যে খাবারে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়না শয়তান সেই খাবার তার জন্য হালাল করে নেই। শয়তান এই বেদুঈনের সাথে খেতে এসেছিল আমি তার হাত ধরে ফেললাম তাই সে ওই মেয়েটির সাথে এল এবং এদের মাধ্যমে খাবারে ভাগ বসাতে চাইল। এর হাতও আমি ধরে ফেললাম। যার আয়ত্বে আমার জীবন সেই সত্তার কসম! এই দুজনের সাথে শয়তানের হাত ও (এখন) আমার মুঠোর মধ্যে।
হযরত আবু হুরাইরা বর্ণনা করেন, হুজুর ( সাঃ) বলেছেন, শয়তান তোমাদের সাথে সকল সময় সকল অবস্থায় বিদ্যমান থাকে, এমনকি খাওয়ার সময়ও। তাই তোমাদের মধ্যে খাদ্যের গ্রাস পড়ে গেলে তার ময়লা সাফ করে যেন তা খেয়ে নেই, যেন শয়তানের জন্য ছেড়ে না দেয়।
হযরত জাবির (রাঃ) শুনেছেন যে, হুজুর (সঃ) বলেন, যখন কোন মানুষ নিজের বাড়িতে প্রবেশ করার সময় এবং খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে, তখন শয়তান (অন্যান্য শয়তানের উদ্দেশে) বলে, তোমাদের জন্য এখানে থাকা খাওয়ার জন্য কোন অবকাশ নেই। কিন্তু কোন মানুষ যদি ঘরে প্রবেশ করার সময় আল্লাহর নাম না নেই। তাহলে শয়তান বলে তোমরা জন্য রাতে থাকার ও সাঁঝে খাওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলে।

বর্ণনায় আকিল (রাহঃ)। আমাদের একটি বাড়ি ছিল। তাতে যখনি কোন লোক থাকত, সকালে মৃত অবস্থায় পাওয়া যেত। একবার এক মরক্কোর লোক এল। ঘরটি তার পছন্দ হল এবং সে ভাড়া নিল। তারপর রাত কাটাল এবং সকালে দেখা গেল সে পুরোপুরি সুস্থ। তার কিছুই হয়নি। তা দেখে প্রতিবেশীরা অভাক। লোকটি বেশ কিছুকাল ছিল তারপর অন্যত্র চলে গেল। তাকে ওই ঘরের নিরাপদ থাকার কথা জিজ্ঞেস করা হলে সে বলল, আমি যখন সেই ঘরে থাকি তখন (প্রথম রাতে) ইশার নামাজ পড়েছি এবং কোরআন থেকে কিছু পড়েছি। তারপর দেখি এক যুবক কূপ থেকে উপরে উঠতেছে। সে আমাকে সালাম দিল। আমি তাকে দেখে ভয় পেলাম। সে বল, ভয় পেওনা আমাকেও কিছু কোরান পাঠ শেখাও। তারপর তাকে আমি কোরান শেখাই এবং জিজ্ঞেস করি এই ঘরের রহস্য কি? সে বলল, আমরা মুসলমান জ্বিন। আমরা কোরান পাঠও করি এবং নামাযও পড়ি। কিন্তু এই ঘরে বেশীর ভাগ সময় বদমাশ লোকেরা থাকে এবং মদের আসর বসায়। তাই আমরা তাদের গলা টিপে দিয়। আমি তাকে বললাম, তোমাকে আমি রাতে ভয় পায় তাই তুমি দিনের বেলায় এসো। সে বলল, খুব ভাল। তারপর থেকে সে দিনের বেলায় কুপ থেকে আসত। একবার সে কোরান পাঠ করতেছিল এমন সময় বাইরে এক ওঝা আসল এবং বলতেছে, “আমি সাপে কাটা, বদ নজর লাগা এবং জ্বিনে ধরা রোগের ঝাঁড়-ফোঁক করি”। তার কথা শুনে জ্বিনটি বলল, “সে কে?”। আমি বললাম ও হল ওঝা ঝাঁড়-ফোঁক করে। সে বলল তাকে ডাক। আমি উঠে তাকে ডেকে আনলাম। এসে দেখি, সে জ্বিনটি এক বিরাট সাপ হয়ে ঘরের ভিতরের ছাদে উঠে গেল। ওঝা এসে ঝাঁড়-ফুঁক করতেই সে ঝটপট করতে লাগলো। শেষ পর্যন্ত ঘরের মেঝেই পড়ে গেল। তখন ওঝা তাকে ধরে ঝাঁপিতে ভরতে গেল আমি মানা করলাম। সে বলল, ‘তুমি আমাকে আমার শিকার ধরার কাজে বাধা দিচ্ছ’ তখন আমি তাকে একটা স্বর্ণ মুদ্রা দিলাম সে চলে গেল। তারপর সে অজগর নড়া-ছড়া করল এবং জ্বিন রূপে প্রকাশ ঘটল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কি হয়ছে? জ্বিন বলল, আমাকে ওই ওঝা পাক ইসমের মাধ্যমে শেষ করে ফেলেছে। আমি বাঁচব বলে আর বিশ্বাস হচ্ছেনা। যদি তুমি এই কুপ থেকে কোন চিৎকারের শব্দ শুনতে পাও তবে চলে যেও। সেই রাতে আমি এক আওয়াজ শুনতে পেলাম যে, “তুমি দূরে চলে যাও”। এরপর থেকে ওই ঘরে আর কেউ থাকত না।
আর এক সুন্দরী জ্বিন স্ত্রীর ঘটনা।
=======================
বর্ণনায় আল্লামা বাদরুদ্দীন শিবলী (রাহঃ)। জনাব কাযীউল ক্বযযাহ জালালুদ্দিন আহমেদ বিন ক্বাযীউল ক্বযযাহ হিসামুদ্দিন কাযী হানাফী বলেন, আমার পিতা আমাকে পরিবার পরিজন-বর্গকে প্রাচ্য হতে আনার জন্য সফরে পাঠান। যখন আমি বীরাহ নামক স্থান পার হলাম, বৃষ্টি আমাদের এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। আমি এক যাত্রী দলের সাথে ছিলাম। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়লাম। হঠাৎ দেখি কেউ আমাকে জাগাচ্ছে। জেগে দেখি আমার কাছে মাঝারি উচ্ছতার এক মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তার চোখ ছিল একটা লম্বা-লম্বি ফাটলের মত। সে বলল তুমি ভয় পেওনা। আমি তোমার কাছে আমার চাঁদের মত মেয়েকে বিয়ে দিতে এসেছি। আমি ঘাবড়ে গিয়ে বললাম আল্লাহ ভালো করুন। তারপর দেখলাম কিছু মানুষ আমার দিকে আসছে। তাদের আকৃতিও ওই মহিলার মত। তাদের চোখেও লম্বা ফাটল আছে। তাদের সাথে এক কাযীও ছিল এবং সাক্ষীও। সুতরাং কাযী বিয়ের পয়গাম দিল এবং বিয়েও পড়িয়ে দিল যা আমি বাধ্য হয়ে কবুল করলাম। এবং ওরা যখন চলে গেল, তারপর মহিলা আমার কাছে আসল। এবার তার সাথে এক সুন্দরী মেয়েও ছিল। তার চোখও ছিল তার মায়ের মত ভয়ঙ্কর। মেয়েটির মা মেয়েকে আমার কাছে রেখে চলে গেল। তারপর আমার ভয় আরো বেড়ে গেল। আমি আমার সঙ্গীদের জাগাতে কাঁকর ছুঁড়ে মারলাম। কিন্তু উদের কেউ উঠল না। তখন অনুনয়-বিনয় করে আল্লাহর কাছে দুয়া করতে লাগলাম। পরে ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ার সময় এল। আমরা রওনা দিলাম কিন্তু মেয়েটি আমাকে ছাড়ল না। এই অবস্থায় তিন-দিন কেটে গেল। চারদিনের মাথায় মেয়ের মা এল এবং বলল, “সম্ভবত এই মেয়েকে তোমার পছন্দ হয়নি। তুমি মনে হয় এর থেকে বিচ্ছেদ চাইছ”। আমি বললাম, হ্যা আল্লাহর কসম। সে বলল, তবে একে তালাক দাও। আমি তাকে তালাক দিলে সে চলে গেল। পরে আমি তাকে আর কখনো দেখিনি।

Back to posts
Comments:

Post a comment

📩লাইভ চ্যাট📨
Chat করার পূর্েব সবাই যার যার User Name set করে নিবি এবং ওই একই User Name দিয়ে Chat করতে হবে।
■ ময়মনসিংহ জিলা স্কুল,শিফট:-প্রভাতি,ব্যাচ:-২০১৬ ■
Admine Pannel
》》যেকোন Report অথবা যদি কারো Mobile Number অথবা facebook Link ভুল থাকে আমাকে জানা.... Click Here

»অথবা ফেসবুক এ সরাসরি মেসেজ দাও...click here
.
59
Navigation
Condition